মাটি-খোঁড়া কুকুর
ওরেনবুর্গের কসাইখানাটা ছিল শহরের একেবারে প্রান্তে।
কসাইখানার পাশেই গভীর খাদ। মাংসে ডাক্তাররা কোনো সংক্রামক রোগের সন্ধান পেলে নিহত পশুর দেহ পতে দেওয়া হত সেখানে।
প্রথমে পোঁতা হত অগভীর গর্তে। পরে দেখা গেল সেটা চলবে না: একপাল কুকুর এসে জুটত খাদে, সহজেই খুঁড়ে বার করত। ব্যাপারটা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াল, কেননা শহরে সংক্রমণ ছড়াতে পারত কুকুরগুলো।
গর্ত খুঁড়তে হল গভীর করে। কিন্তু তাতেও ফল হল না: এমনকি কয়েক মিটার গভীর গর্ত থেকেও তারা টেনে বার করত লাশ।
কেউ কেউ তাদের মাটি খোঁড়ার কায়দাটা লক্ষ্য করছিলেন।
কমরেড হারিতোনভ চিঠিতে লেখেন:
‘গর্ত খোঁড়ার সময় কুকুরদের মধ্যে যে শৃঙ্খলা দেখেছি, তাতে অবাক হয়ে গেছি। খুঁড়তে খুঁড়তে একটা কুকুর ক্লান্ত হয়ে পড়লে অমনি আরেকটা কুকুর এসে জায়গা নেয় তার। দেখতে দেখতে গভীর হয়ে ওঠে গত…’
সত্যি, শিকারীদের প্রায়ই চোখে পড়ছে কত অনায়াসে গর্ত খুঁড়তে পারে কুকুর, এবং সেটা শুধু আলগা মাটিতে নয়, অহল্যা মাটিতেও।
মাঝে মাঝে শিকারের সময় কুকুরের তাড়ায় কোনো একটা ছোটো জন্তু যখন তার গর্তে গিয়ে সে’ধয়, কুকুর তখন তার সামনের দুই থাবা দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে জন্তুটার গর্ত খুঁড়তে শুরু করে। কাজটা সহজ নয়, শিগগিরই ক্লান্ত হয়ে পড়ে কুকুর।
প্রচণ্ড হাঁপাতে হাঁপাতে সে পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে। আর এতক্ষণ কাছেই নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল দ্বিতীয় যে কুকুরটা সে তখন তার জায়গা নেয়। সাধারণত বদলির কাজটা চলে এত দ্রুত যে এক মিনিটের জন্যেও কাজ থামে না। জিরিয়ে নেবার সময় চতুষ্পদ মাটি-খুঁড়িয়ে মন দিয়ে লক্ষ্য করে তার বদলীকে, তার গতি শ্লথ হতেই ফের কাজে লাগে।
Leave a Reply