বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন

সাপ নিয়ে কিছু প্রবাদ ও কুসংস্কার (পর্ব-২)

  • Update Time : বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ২.২৯ পিএম

শিবলী আহম্মেদ সুজন

সাপের বিষ নামানো: এই অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের আছে, বা মনের দিক থেকেও আমরা প্রস্তুতই থাকি যে সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ক্ষতস্থানটুকু সজোরে বেঁধে দেহের বাকি অংশ থেকে আলাদা করে ফেলি। এ অবস্থার পরবর্তী পদক্ষেপ হলো ওঝা-কবিরাজ-বদ্যির শরণাপন্ন হওয়া।

মাওলানা-মুনশি কিংবা পুরোহিত ডাকারও রেওয়াজ আছে। অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন অনেক বর্ষীয়ান ধর্মগুরু রয়েছেন, যাঁদের তন্ত্রমন্ত্রে বিষ নেমে আসে বলে আমাদের ধারণা। এ ক্ষেত্রে আমরা আধুনিক চিকিৎসক ডাকতে যাই না খুব একটা।

আমাদের সাপে কাটার চিকিৎসাব্যবস্থা মোটেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। কারণ, সাপের বিষ একবার কার্যকরভাবে কারও রক্তে মিশে গেলে সেই ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব নয়।

সাপে কামড়ানো লোকের গায়ে বিরল উদ্ভিদের পাতা ও কাঁটাসহ ডাল বুলিয়ে সফলভাবে বিষ নামানোর যে প্রয়াস এখনো সচরাচর লক্ষ করা যায়, সেটা বোধ হয় সাপ-সম্পর্কিত সবচেয়ে বেশি চমকপ্রদ ঘটনা।

এখানে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন, বিষধর ও অবিষধর যেকোনো ধরনের সাপই মানুষসহ অন্য যেকোনো প্রাণীকে কামড়াতে পারে। তাই সাপে কামড়ালেই মানুষ মারা যায় না, যদি না তা বিষধর হয়।

মুম্বাইয়ের হফকিন্স ইনস্টিটিউটের এক জরিপে দেখা গেছে, ভারতের যত লোক সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়, তাদের শতকরা ৮০ ভাগই ঘটে থাকে অবিষধর সাপের কামড়ে।

আবার সাপের কামড়ে যত লোক মারা যায়, তাদের শতকরা ৮০ ভাগ ঘটে অবিষধর সাপের দ্বারাই। এসব মৃত্যুর পেছনে কাজ করে মূলত ভয়, বিষক্রিয়া নয়। সুতরাং সাপুড়ে-বেদের মন্ত্রতন্ত্র, পীর-ফকিরদের পড়া পানি অবিষধর সাপের আক্রমণের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। ব্যাপারটা ঝড়ে বক মরে,ফকিরের কেরামতি বাড়ার মতোই।

বিশেষ আমিষসমৃদ্ধ সাপের বিষ সাধারণত দুই ধরনের: একটি আয়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে বিকল করে, অন্যটি রক্তকণিকাকে বিনষ্ট করে। এই দুই ধরনের বিষই দ্রুত মানুষের রক্তপ্রবাহে মিশে যায় ও ছড়িয়ে পড়ে।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি আক্রান্ত অঙ্গ বেঁধে ফেলে বাকি শরীর থেকে আলাদা করে ফেলা না যায়, তাহলে সেই রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব। বাস্তব অভিজ্ঞতাসংবলিত এই প্রাথমিক বিজ্ঞানসম্মত ধাপগুলোরও কিছু সুনির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা হয়েছে।

যেমন, সাপে কাটা অঙ্গ বেঁধে ফেলার মতো অবস্থান ও অবস্থায় থাকতে হবে, অল্প সময়ের ব্যবধানে চিকিৎসা শুরু করতে হবে, রোগীকে মানসিক দিক দিয়ে সবল-শক্ত রাখতে হবে ইত্যাদি।

প্রখ্যাত লেখক রেজাউর রহমান-এর বইয়ের সহায়তায় এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

সাপ নিয়ে কিছু প্রবাদ ও কুসংস্কার (পর্ব-১)

সাপ নিয়ে কিছু প্রবাদ ও কুসংস্কার (পর্ব-১)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024