সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন

কী প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন সাকিব, অবশেষে সে বিষয়ে জানালেন মেজর হাফিজ

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫.০০ পিএম

সারাক্ষণ ডেস্ক

‘‘ সাবিক আল হাসান দেশের গৌরব, বিশ্বের সেরা অল রাউন্ডার… কোনোদিন রাজনীতি করে  নাই… তিনি রাজনীতি করতেই পারেন। সাবেক ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমার কাছে এসেছিলেন আমি তাকে কোনো উৎসাহ দেইনি। আমি যোগদান না করায় তিনিও তার পথ বেঁছে নিয়েছেন…..। যেখান থেকে সহজে জেতা যাবে, সেই নির্বাচনে কোনো প্রতিপক্ষ থাকবে না, সম্পূর্ণ পাতানো এই নির্বাচনে তিনি এমপি হয়েছেন এটি তার বিষয়। এই নিয়ে যে কাল্পিনিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এটা সঠিক নয়।”

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আগে ‘কিংস পার্টি’ নামে পরিচিত পাওয়া ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম’ সাথে নিজের এবং সাবিক আল হাসানের সম্পৃক্ততার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার দুপুরে বনানীতে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আমি আগেও বলেছি, কেনো আমি বিএনএমে যোগদান করি নাই, কেনো আমি বিএনপি ছাড়ি নাই। এতোদিন পর আবার এই সংবাদ। এটা তো গোপন কোনো কিছু না্। আমাকে অ্যাম্প্রুচ করেছেন তারা(বিএনএম ও সরকারের কিছু লোক)… আমি প্রস্তাব গ্রহন করি নাই বিএনপিতে রয়েছি।”

হাফিজ বলেন, ‘‘ এতোদিন পরে দুইটি পত্রিকা  সাবিক আল হাসানকে জড়িয়ে আমার সম্পর্কে যে মিথ্যা প্রচার করেছে এতে আমি মর্মাহত হয়েছি। দেশে কত অপকর্ম করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। একতরফা ডামি নির্বাচন করল… এ নিয়ে তো পত্রিকায় কিছু দেখি না। দেশের ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক লুটপাট চলছে কয়েকবছর ধরে … এ নিয়ে তো এসব পত্রিকায় কোনো রিপোর্ট দেখি না, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের কোনো কুলকিনারা হচ্ছে না এই নিয়ে তো কোনো রিপোর্ট ওইসব পত্রিকায় কোনো কিছু দেখি না।”

‘‘ আমার ধারণা জন্মেছে যে, সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম লুকিয়ে রেখে জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র নিবদ্ধ করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে এই বিএনএম সৃষ্টির কাল্পিনিক কাহিনীর অবতারনা তারা করেছে। আমি বলতে চাই, আমি নির্বাচন কমিশনে কাউকে পাঠাইনি, মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ কিংবা তদবির করার জন্য কাউকে কখনো পাঠাই নাই। এই বিএনএম সৃষ্টি করেছেন কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা যারা যোগ দেয়া্র অনুরোধ করেছে এবং আমার বাসায় এসেছে কয়েকবার। আমার বাসায় ওই দলটির কোনো সভাও হয়নি। এসব সব মিথ্যাচার।”

হাফিজ উদ্দিন আহমেদের হাতে ফরম দিয়ে সাকিব আল হাসানের যোগদানের একটি আলোকচিত্র কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর হাফিজ উদ্দিন এই সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘ এমএনএমে আমি যোগ দেয়নি। তাদের অফিসেও আমি চিনি না। কেনো দুইটি পত্রিকার আমার বিরুদ্ধে বিশেদগার করছে। আমি নির্বাচনের দুই মাস আগেই বলেছি, আমি বিএনপি ছাড়ব না, কোনো পাতানো নির্বাচনে যাব না্। নির্বাচনের একমাস আগে চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছিলাম।এমনভাবে পত্রিকাগুলো সংবাদ প্রচার করেছে যে তারা বিরাট একটা রহস্যের ভান্ডার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।”

‘‘ এখানে গোপন কিছু নাই। আমি সব সময় বলে এসেছি মাই লাইভ ইজ এ ওপেন বুক।লজ্জ্বিত হওয়ার কোনো কাজ করি না, গোপন কোনো কাজ করি না। রাজনীতি করি, নির্বাচনে দাঁড়াই… জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে এটাই আমার রাজনৈতিক জীবন। শারীরিক কারণে রাজনীতি থেকে দূরে ছিলাম…যখনই এই গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে মেজর হাফিজ দল ত্যাগ করতে পারেন… এটি বিএনপির অভ্যন্তরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে… কয়েকজন এমপি আমার সাথে যোগাযোগ করেছে তারা নতুনভাবে রাজনীতি করতে চান… আমি তাদের নিরস্ত্র করেছি।”

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভারতে অবস্থারত সালাহউদ্দিন আহমেদ ওই সময়ে তার সাথে যোগাযোগ করে ‘প্রকৃত বিষয়’ জানতে চাইলে তাদেরকেও বিষয়টি ‘পরিস্কার’ করেছেন বলে জানান হাফিজ।

তিনি বলেন, ‘‘ আমি বলেছি, এগুলো সরকারি প্রোপাগান্ডা… আমি বিএনপি ছেড়ে কোথাও যাবো না। এই বয়সে তো আমার কোনো রাজনৈতিক উচ্চাবিলাস নাই। দুই বার মন্ত্রী হয়েছি আর কত? ৬ বার এমপি হয়েছি জনগনের ভোট গুড এনাফ। আমার তো নতুন দলে যোগদানের দরকার নাই, আমার কিংস পার্টি খোঁজার দরকার নাই।”

দেশের অবস্থা সম্পর্কে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘ দেশের বর্তমান অবস্থা কি? দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বমূল্যের কারণে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।আমিও বানিজ্য মন্ত্রী ছিলাম(খালেদা জিয়ার শাসনামলে) … আমাদের সময়ে দ্রব্যমূল্য এর চাইতে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ছিলো… সিন্ডিকেটকে আমরা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। জনগন এভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দিশেশহারা হয়ে পড়েনি। আমরা মন্ত্রী হিসেবে কাউকে খেজুরের বদলে বরই খাওয়ার উপদেশ দেয়নি।”

‘‘ আজকে জনজীবনে কিছু সংখ্যক লুটেরার কারণে, কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ীর কারণে, কিছু সংখ্যক ব্যাংক লুটেরার কারণে অর্থনীতি পর্যদুস্ত, জনজীবনে ‍দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদপত্রসমূহ সেইদিকে মনোযোগ দেবেন,জনগনের আশা-আকাংখা তুলে ধরবেন …এটাই আমরা আশা করি।সুইস ব্যাংকে কাদের একাউন্ট আছে তাদের নাম তো দেখি না এসব পত্র-পত্রিকায়, যারা ব্যাংক লুট করে ব্যাংকসমূহকে অকার্য্কর করে দিয়েছে তাদের নামও দেখি না, যারা কানাডা, আমেরিকা, মালয়েশিয়াতে তাদের সম্বন্ধেও কোনো আর্টিকেল দেখি না।”

 

সাবেক কৃতি ক্রীড়াবিদ ফুটবলার হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ক্রীড়াঙ্গনে একসময় আমি ভালো ক্রীড়াবিদ ছিলাম, নামকরা ক্রীড়াবিদ ছিলাম, আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় ছিলাম, একমাত্র বাঙালি ছিলাম পাকিস্তানের জাতীয় দলে। ক্রীড়াবিদদের প্রতি দূর্বলতা আছে।

 

‘‘সাবিক আল হাসানের মতো নন্দিত ক্রীড়াবিদ। তার দোষক্রটি থাকতে পারে কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ইনকমাপেরবল ইন বাংলাদেশ। রাজনীতি করুক যাই করুক… এদেরকে হতাশ করে তারা খেলাধুলা ছেড়ে ধিক এই ধরণের পরিস্থিতিতে এসব জায়গায় ডোন্ট পুস দেম টু দ্যাট এক্সটেইন্ড।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ ছয় মাস আগের পুরনো কথা কি উদ্দেশ্যে এখন নিয়ে এসেছেন এবং সাবিক আল হাসানের মতো নন্দিত ক্রীড়াবিদ এবং আমার মতো একজন বয়স্ক রাজনীতিবিদ যার দুর্নীতির কোনো ইতিহাস নাই, ঢাকা শহরে কোনো বাড়ি নাই, পিতার দেয়া বাড়িতে থাকি। আমার বিরুদ্ধে দুদকের(দুর্নীতি দমন কমিশন) কোনো মামলাও নাই।”

 

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘ দেশের বর্তমান অবস্থা কি? দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বমূল্যের কারণে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।আমিও বানিজ্য মন্ত্রী ছিলাম(খালেদা জিয়ার শাসনামলে) … আমাদের সময়ে দ্রব্যমূল্য এর চাইতে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ছিলো… সিন্ডিকেটকে আমরা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। জনগন এভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দিশেশহারা হয়ে পড়েনি। আমরা মন্ত্রী হিসেবে কাউকে খেজুরের বদলে বরই খাওয়ার উপদেশ দেয়নি।”

 

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘ ৩২ বছর দল করার পর দল ছাড়া কি এতো সোজা নাকি? কেনো ছাড়ব… একটা অজানা অচেনা দলে যাবো। আপনারা অনেক রাজনীতিবিদের ইন্টারভিউ নেন… আমি দুই নম্বরি লোক না, দুই নম্বরি কথাও বলি নাই।”

 

‘‘ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো দুর্নীতিতে কখনো জড়াইনি। যেহেতু আমার দলে কাউন্সিল হয় না সেজন্য মাঝে-মাঝে পরামর্শ দিয়েছি… পত্রিকায় সেগুলো উঠেছে। কিন্তু তার মানে এই না যে, আমার দল সম্পর্কে, আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সস্পর্কে কোনো অসৌজন্যমূলক কথা আমি বলি নাই।”

 

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘ যেসব ক্ষেত্রে তাদের(গণমাধ্যমের) মনোযোগ দেয়া উচিত যা জাতীয় জীবনকে প্রভাবিত করে সেসব সংবাদের প্রতি তারা মনোযোগ দিলে দেশবাসী রক্ষা পাবে দেশও রক্ষা পাবে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা মাথা উঁচু করে সারা জীবন চলেছি। এখন শেষ বয়সে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে চাই। জাতীয়তাবাদের একজন পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে জাতীয়তাবাদী দলকে সার্ভিস দিতে চাই এবং সমাজে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে চাই।”

 

‘‘ আমি আশা করব, আমার বিরুদ্ধে বিরুপ এই ধরণের প্রচারণা করবেন না… প্লিজ লিভ মি এলোন। আমি কোনো বিরাট রাজনীতিবিদ না। নির্বাচন দিলে এলাকায় গিয়ে ভোটে দাঁড়াই। আপনারা কেউ আমার এলাকা ভোলার লালমোহন ও তজিমউদ্দিন ভিজিট করে দেখতে পারেন… সেখানে জনগনে এসব ভুয়া মিথ্যা প্রচারণা কান দেয় না। তবে আমার দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024