নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্পদের মামলার রায়ে সমস্ত সম্পদ কখনো একপক্ষ পায়। কখনো সম্পদ ভাগাভাগি ও হয়ে থাকে। তবে সন্তান তাই সংখ্যায় যতই হোক না কেন বাবা মায়ের হৃদয়ে প্রত্যেকেই সমান। হৃদয়ের বিচারে তাই সন্তান ভাগ হবার নজির খুঁজে মেলে না। হৃদয় আর আইন কখনই এক নয়। আইনকে চলতে হয় সকল হৃদয়াবেগের উর্ধে উঠে। সে প্রমাণ পাওয়া গেল বাংলাদেশের হাইকোর্টে।
বাংলাদেশী ও জাপানি দম্পতির তিন শিশুর হাইকোর্টের রায়ে ভাগ হয়ে গেলো বাবা ও মায়ের মধ্যে।
এর মধ্যে এই দম্পতির সবচেয়ে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা ও ছোট মেয়ে সানিয়া হেনাকে তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। আর মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এছাড়াও বড় মেয়েকে নিয়ে নাকানো এরিকোর জাপান যেতেও বাঁধা নেই বলেও রায়ে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জাপানি আইন অনুযায়ী ২০০৮ সালের ১১ জুলাই দেশটির চিকিৎসক এরিকোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বাংলাদেশের শরীফ ইমরান। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তারা হলো জেসমিন মালিকা, লাইলা লিনা ও সানিয়া হেনা। মালিকা, লিনা ও হেনা টোকিওর চফো সিটিতে আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসআইজে) শিক্ষার্থী ছিল।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরান বিয়ে বিচ্ছেদের (ডিভোর্স) আবেদন করেন। ২১ জানুয়ারি ইমরান এএসআইজে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এরিকোর সম্মতি না থাকায় তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইমরান তার মেয়ে জেসমিন ও লিনাকে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।
সে বছরের ২৫ জানুয়ারি ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছে তার সন্তানদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। এরিকো তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর ২৮ জানুয়ারি এরিকো টোকিওর পারিবারিক আদালতে তার সন্তানদের জিম্মার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা করেন।
এরিকোর অভিযোগ, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি নতুন পাসপোর্ট নেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ইমরান তার দুই মেয়ে জেসমিন ও লাইলাকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
Leave a Reply