শ্রী নিখিলনাথ রায়
সেকেন্দ্রার নিকট বালকুণ্ড নামক স্থানে মণিবেগমের জন্ম হয়। মণির মাতা, দারিদ্র্যের কঠোরচক্রে নিষ্পেষিত হইয়া স্বীয় করাকে বিশুর হস্তে অর্পণ করিতে বাধ্য হয়। বিশু মণিবেগমকে দিল্লীতে লইয়া গিয়া নর্তকীর ব্যবসায় শিক্ষা করায়; তাহার কন্ঠা বন্ধুও নর্তকীর কাৰ্য্যে সুশিক্ষিতা হইয়াছিল। যৎকালে মুর্শিদাবাদে সিরাজ উদ্দৌলা ও এক্রাম উদ্দৌলার বিবাহ হয়, সেই সময়ে নওয়াজেস্ মহম্মদ খাঁর আদেশে বিশু ও তাঁহার নর্তকীসম্প্রদায় দশ হাজার টাকায় মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হয়।
বিবাহোৎসবের পর মণিবেগমের সহিত মীরজাফরের প্রগাঢ় প্রণয় সংঘটন হওয়ায়, তিনি তাঁহাদিগকে প্রথমতঃ মাসিক ৫ শত টাকা প্রদানের অঙ্গীকারে মুর্শিদাবাদে থাকিতে অনুরোধ করেন এবং কিছুদিন পরে মণিবেগমকে ভার্য্যারূপে গ্রহণ করেন। অনন্তর বন্ধু বেগমের সহিতও তাঁহার পরিণয়ক্রিয়া সম্পাদিত হয়। মণিবেগমের গর্ভে নজম উদ্দৌলা ও সৈফ উদ্দৌলার এবং বব্বু বেগমের গর্ভে মোবারক
উদ্দৌলার জন্ম হয়। *মণিবেগমই মীরজাফরের প্রিয়তমা বেগম ছিলেন। সিরাজ উদ্দৌলার হীরাঝিলের প্রাসাদ হইতে মীরজাফর যে সমস্ত হীরা জহরত প্রভৃতি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, মণিবেগম তৎসমস্তই অধিকার করেন। নবাব মোবারক উদ্দৌলার অভিভাবক হওয়ার জন্য মণিবেগম ও বন্ধু- বেগম উভয়েই প্রার্থনা করিয়াছিলেন।
কিন্তু মণিবেগম গবর্ণর হেষ্টিংসকে অনেক টাকা উৎকোচ দিয়া মোবারক উদ্দৌলার অভিভাব- কের পদ লাভ করেন। মণিবেগম ১৮১৩ খৃঃ অব্দের জানুয়ারী মাসে পরলোকগতা হন। মণিবেগম গদ্দিনসীন বেগমের পদ পাইয়া- ছিলেন। আলিবর্দী খাঁর বেগম হইতে উক্ত পদের সৃষ্টি হয়। গান্ধি- মসীন বেগমের। বাৎসরিক লক্ষ টাকা বৃত্তি পাইয়া থাকেন। মণিবেগমের বৃত্তি হইতে অনেক টাকা সঞ্চিত হইয়াছিল।
Leave a Reply