বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৫৫)

  • Update Time : সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১.০০ পিএম

শ্রী নিখিলনাথ রায়

গবর্ণমেন্ট তাহা নবাধ নাজিমকে প্রদান করেন নাই। মুর্শিদাবাদ-চকের মধ্যস্থিত মণিবেগমের বিখ্যাত মসজেদ অদ্যাপি তাঁহার নাম ঘোষণা করিতেছে। তিনি অভান্ত দানশীলা বলিয়া প্রসিদ্ধিলাভ করিয়াছিলেন। মুক্তহস্ততার জন্ত তিনি ‘মাদর-ই-কোম্পানী বা কোম্পানীর মাতা বলিয়া অভিহিতা হইতেন।

নবাব মনসুর আলির মাতা রাইস্ উন্নেসা বেগমের মৃত্যুর পর তাঁহার প্রধানা মহিষী শজাঁহা বেগম গদ্দিনসীন বেগম হইয়াছিলেন। তিনিও সম্ভ্রান্তবংশের মহিলার ন্যায় আপনার উন্নতহৃদয়ের পরিচয় প্রদান করিতেন। স্বজন ও দীন দুঃখী প্রতিপালন তাঁহার একটি প্রধান ব্রত ছিল। যাবতীয় দেশহিতকর কার্য্যে তিনি সর্ব্বদা ব্যাপৃত থাকিতেন। যেখানে কোন মঙ্গলকর কার্য্য উপস্থিত হইত, সেই খানে তিনি মুক্তহস্ততার পরিচয় দিতেন। তাঁহার পুত্র ইস্কান্দর আলি মির্জা বা সাধারণের পরিচিত সুলতান সাহেব অকালে ইহলোক পরিত্যাগ করিয়া মাতার হৃদয় শেলবিদ্ধ করিয়া যান।

সুলতান সাহেবের ন্যায় তেজস্বী, অমায়িক ও উদারপ্রকৃতি মহানুভবব্যক্তি সম্ভ্রান্তবংশীয়দিগের মধ্যে অল্পই দৃষ্ট হইয়া থাকে। সম্ভ্রান্ত জনগণ হইতে সাধারণ লোক পর্যন্ত তাঁহার সহিত কথোপ- কথনে বিমল আনন্দ অনুভব করিত। নবাব নাজিমের বংশধর বলিয়া তাঁহার মনে কোনরূপ শ্লাঘার উদয় হইত না। তাঁহার সমাধি অদ্যাপি জাফরাগঞ্জে বিরাজ করিয়া দর্শকগণের হৃদয়ে শোকো- চ্ছ্বাসের সৃষ্টি করিয়া থাকে। তাঁহার মাতাও এক্ষণে তাঁহারই অনুসরণ করিয়াছেন।

জাফরাগঞ্জের সমাধিভবনের সম্মুখে পথের অপর পার্শ্বে একটি সুন্দর মজেদ দৃষ্ট হয়; তথায় উপাসনাদি হইয়া থাকে। এই সমাধি ভবনে একতিলও স্থান নাই; সমস্তই সমাধিতে পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে। সমাধি- ভবনের বন্দোবস্ত ভালই আছে। ইহাতে প্রায় একশত কারী বা কোরাণাধ্যায়ী প্রতিদিন সমাধিস্থ মৃত ব্যক্তিগণের নিকট উপস্থিত হইয়া কোরাণপাঠে তাঁহাদের আত্মার কল্যাণ সম্পাদন করিয়া থাকেন। এতদ্ভিন্ন নানা কার্য্যে অন্যান্য অনেক লোকজনও নিযুক্ত আছে। সমাধিভবনের স্থানে স্থানে দুই চারিটি কুসুম ও অন্যান্য বৃক্ষ জন্মগ্রহণ করিয়া গন্ধ ও ছায়া বিতরণে পরলোকগত ব্যক্তিগণের শান্তিসুখের বৃদ্ধি সাধন করিতেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024