বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৩)

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬.৩১ পিএম

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

মায়া বনাঞ্চল

 মায়া জনজাতির প্রায় সব নগরকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল ক্রান্তিয় বনভূমিকে ঘিরে। এই দিকটি হল মায়া-সংস্কৃতি উন্নয়নের অন্যতম বাস্তব ঘটনা। এবং সম্ভবত এটিকে আমরা মায়ারা কেন কখনই শহরমুখী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারেনি তার কারণ হিসেবে ধরে নিতে পারি।

মায়া অঞ্চলটি বৃষ্টি ও বনাঞ্চল হওয়ার জন্য এখানকার মানুষের বসবাস খুব ঘন হতে পারেনি। কিন্তু গাছপালা এবং জীবজন্তু খুব বেশি পরিমাণে দেখা যায়। বৃষ্টিভেজা এবং আর্দ্রতা-মেশানো জলহাওয়ায় পশুদের প্রজননমাত্রা এখানে খুব বেশি হয়। কিন্তু কৃষি ফলনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চল একেবারেই অনুকূল নয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব কম।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে এই অঞ্চলে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩০ জনের বেশি মানুষ থাকে না। ক্লাসিক পর্বের মায়া অঞ্চলে জলীয়বাষ্প ও আর্দ্রতার চাপ জনসংখ্যার সম্ভাবনাকে দূর্বল করে দিয়েছে। মায়া- সভ্যতাকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়- প্রথম পর্বের সময়সীমা প্রধানত ২৯২- ৫৯৩ খ্রিঃ এবং দ্বিতীয় পর্বের সময়কালে সেরকমভাবে ৫৯৩-৮৮৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

মায়ারা তাদের জনবসতিকে শহরাঞ্চলের অবয়বে গড়ে তুলেছিল। এবং দেখা গেছে এইসব শহরে পুরোহিত এবং অভিজাত শ্রেণি বাস করত। এবং এই শ্রেণির মানুষজন সাধারণভাবে পূজা-অর্চনা এবং ধর্মীয় আচার-আচরণের মধ্যে সীমিত রাখত। বিশেষত কৃষকশ্রেণির মানুষ নানাবিধ ধর্মীয় উৎসব, লোকাচার, রীতি-আচার পালন করার জন্য শহরাঞ্চলে সমবেত হত।

এরপর অর্থনৈতিক এবং বিদেশী আক্রমণ সহ নানাবিধ কারণে তারা শহরাঞ্চলগুলি থেকে সরে আসে। এই সময়টা মোটামুটিভাবে ৯০০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি। এই শহরাঞ্চল বর্জনপর্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য পুরোহিত বা যাজক শ্রেণির অন্তর্ধান। এবং পুরোহিত শ্রেণির বিদায় ঘটার পরেই মায়া জনজাতির সাধারণ মানুষ শহরগুলি থেকে তাদের কাজকর্ম গুটিয়ে নিতে শুরু করে।

কৃষকশ্রেণির কিছুটা অংশ কয়েক বছর শহরাঞ্চলকে ব্যবহার করেছিল। কিন্তু তাও কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও একথা মোটামুটিভাবে বলা যায় ক্লাসিক পর্বের মায়া জীবনযাত্রা এর পরেও খুব একটা পাল্টায়নি।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-২)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-২)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024