মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনটি এবার এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যে সময়ে পৃথিবীতে দুটো যুদ্ধ চলছে। এর ভেতর মধ্য -প্রাচ্যের প্যালেস্টাইন ও ইসরাইল যুদ্ধের প্রকৃতি আর রাশিয়া ইউক্রেনে যে আগ্রাসন চালাচ্ছে এর চরিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্যালেস্টাইনের হামাস কে দিয়ে ইসরাইলে হামলা করিয়ে যে যুদ্ধটি সেখানে চলছে এর এখনও পর্যন্ত যে চরিত্র দেখা যাচ্ছে তা থেকে বলা যায়- এটা হয়তো শেষ অবধি হামাসের নেতৃত্ব পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে শেষ করার চেষ্টা চলবে। কারণ ইয়াসির আরাফাতকে ঠেকাতে ইসরেল লবি হামাসকে তৈরি করেছিলো। এবং সফল হয়েছিলো ইয়াসির আরাফাতকে মৃতুর দিকে ঠেলে দিতে। এখন হয়তো হামাসের নেতৃত্ব বিশেষ কারণে পরিবর্তনের দরকার হয়েছে।
অন্যদিকে বিপরীতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমন শুধু ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ভূমি দখলের ভেতর সীমাবদ্ধ নেই- হুমকি’র মূখে পড়েছে ন্যাটো’র অনেকগুলো দেশের সীমান্ত।
ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সীমান্ত’র নিরাপত্তা শুধু নয় রাশিয়াকে আগ্রাসন থেকে নিবৃত করে ইউরোপের দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্যে রাশিয়াকে দুবর্ল করাও ইউরোপীয় দেশগুলো বা সম্পূর্ন ন্যাটোর জন্যে প্রয়োজন। তবে মিউনিখের এই সম্মেলনের আগে থেকেই প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে। মনে করা হচ্ছে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি দুর্বল হতে পারে। তবে এই সম্মেলনের আগে জার্মানীর চ্যান্সেলর ও ট্রাম্পের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে সেখানে এমন কোন ঈংগিত আসেনি যে আমেরিকার নির্বাচনের ভেতর দিয়ে যে পরিবর্তন আসুক না কেন তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে কোন পরিবর্তন হবে। এছাড়া মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনেকের এবং জার্মানীর চ্যান্সেলর ‘র বক্তব্য’র ভেতর দিয়ে এটা স্পষ্ট যে তারা স্বীকার করছেন ইউক্রেনের রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু থেকে এ অবধি ন্যাটো ভুক্ত দেশগুলো যথেষ্ট কিছু করেনি। এর পাশাপাশি ন্যাটোর অন্যতম অস্ত্র উৎপাদক দেশ জার্মানী ২০২৬ সালের মধ্যে তাদের গোলাবারুদ থেকে ক্ষেপনাস্ত্র উৎপাদন দ্বিগুনে নিয়ে যাবে। এছাড়া,এরই মধ্যে আরো ৫০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা করলো আমেরিকা ইউক্রেনের জন্যে। এ থেকে অনেকটা স্পষ্ট, ইউক্রেন যুদ্ধ আরো দীর্ঘস্থায়ী হবে। ইউক্রেনে ন্যাটোর এই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ অন্য দিকে ইন্দো- প্যাসিফিক জোটের সম্প্রসারনের ঈংগিতও যে সময়ে সুস্পষ্ট -এই সময়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলনিস্কির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ভবিষ্যত পররাষ্ট্রনীতি শুধু নয় আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থানের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূর প্রসারী।
Leave a Reply