সারাক্ষণ ডেস্ক :
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত ১ হাজার ২০০ তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে ব্র্যাকের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচী (এসডিপি)। বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়া তরুণ ও তরুণীদের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অধীনে শিক্ষানবিশ হিসেবে ‘ওস্তাদ–সাগরেদ’ পদ্ধতিতে ব্র্যাকের স্কিলস ট্রেইনিং ফর অ্যাডভান্সিং রিসোর্স (স্টার) মডেলের আওতায় হাতে–কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়; যা কর্মস্থলে প্রচলিত প্রশিক্ষণ থেকে অনেক বেশি কার্যকর বলে ধারণা করা হয়।
স্টার মডেলের আওতায় ‘অল্টারনেটিভ লার্নিং পাথওয়ে ফর স্কুল ড্রপআউট গার্লস ইন ক্লাইমেট ভালনারেবল রিজিওন অব বাংলাদেশ’ প্রকল্পের অধীনে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছর মার্চ মাস পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার তরুণীদের এই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সহযোগিতায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সোমবার, ১লা এপ্রিল, ২০০৪ তারিখে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ‘ব্রিজ টু সাকসেস: অল্টারনেটিভ লার্নিং পাথওয়েজ প্রজেক্ট লার্নিং অ্যান্ড নলেজ ডিসেমিনেশন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডিরেক্টর অব পাবলিক এনগেজমেন্ট শার্লিনা হুসাইন-মর্গান তার বক্তব্যে বলেন, আপাতত এই প্রশিক্ষণ কার্ক্রম শেষ হলেও এটা ছিল মূলত শুরু। আমরা বাংলাদেশের বহু সংখ্যক নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাই, যারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
ব্র্যাক এসডিপির সহযোগী পরিচালক তাসমিয়া তাবাসসুম রহমান অনুষ্ঠানে এসডিপি ও স্টার মডেলের কার্যক্রম ও সাফল্য তুলে ধরে বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণীদের ৭১ ভাগেরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ শতাংশ তরুণী শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্র্যাকের এডুকেশন, স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ও মাইগ্রেশনের পরিচালক সাফি রহমান খান। তিনি বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় বেশ কিছু বড় ধরনের কাজ করা হচ্ছে, বিশেষ করে বাজার ব্যবস্থা নিয়ে। এই বাজারকে কিভাবে আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক করা যায়, বিশেষ করে নারী ও প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো যায়, সে কাজটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকজন তরুণী অনুষ্ঠানে তাদের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা এ সময় দিনব্যাপী ‘ঈদ মেলার’ উদ্বোধন করেন। ব্র্যাক সেন্টারের প্লাজায় অনুষ্ঠিত এই মেলায় ব্র্যাক থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণীদের তৈরি করা নানা পণ্য প্রদর্শণ করা হয়। এখানে হাতের কাজ করা তৈরি পোশাক, পাটের তৈরি পণ্য, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য ও আসবাবপত্র, মৃৎশিল্প, বিউটি সেলুন, মোবাইল ফোন সার্ভিসিংসহ ছিল নানা আয়োজন। এছাড়াও ছিল বায়োস্কোপ এবং আকর্ষনীয় ম্যাজিক শো।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে চালু হওয়া স্টার কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৬৪ শতাংশ নারী ও ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন। ব্র্যাকের এই কর্মসূচির সঙ্গে রয়েছে সরকারের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
Leave a Reply