অদ্য ০৩ এপ্রিল ২০২৪ বুধবার সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ এর উদ্যোগে চালকদের ঈদ বোনাস প্রদান, নো পার্কিং ও রেকারিং এর নামে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী হতে মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রাইভেট সিএনজি অটোরিক্সা সমূহ উচ্ছেদের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মুহ. শাহ আলম, আহ্বায়ক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সভা পরিচালনা করেন মোঃ আব্দুল জাব্বার মিয়া, ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
আরো বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদ নেতা ফারুক হোসেন (চট্টগ্রাম), আঃ জাব্বার মিয়া, মামুন উর-রশিদ পিন্টু, নুর মোর্শেদ, আবু নাসের বেপারী, জাকির হোসেন, শাহাদাত হোসেন রনি, মনিরুজ্জামান খান, সালাউদ্দিন, মিজানুর রহমান সুমন, রুহুল আমিন, আব্দুল বারেক দেওয়ান, রমজান আলী ভুট্টো, নবাব হোসেন, আবুল কালাম ও ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন নারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি খাদিজা রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সিএনজি অটোরিক্সা চালকদের নিয়ে একটি গণসঙ্গীত অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন মো. চান্দু। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তাগণ বলেন, সিএনজি অটোরিক্সার দৈনিক জমা নির্ধারণে ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির মিটিংএ চালকদের উৎসব বোনাসের সিদ্ধান্ত থাকলেও সিএনজি অটোরিক্সা মালিকগণ চালকদের বোনাস না দিয়ে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটো রিক্সা শ্রমিক আমরা ঢাকা ঐক্য পরিষদের’ পক্ষ থেকে মালিকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, চলতি বছর রোজার ঈদের পূর্বে চালকদের আইনগত প্রাপ্য বোনাস পরিশোধ করুন।
যদি সঠিক সময়ে এই ঈদ বোনাস পরিশোধ করা না হয় তা হলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর চালকগণ শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। ২০১৭ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৬ হাজার সিএনজি অটোরিক্সার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর মালিকগণ পুনরায় ০৬ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন ।
বিআরটিএ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগণ মোটা অংকের উপঢৌকনের প্রস্তাবে লালায়িত হয়ে মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে কাজ করছিলেন। কিন্তু ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সচেতন চালকদের দুর্বার আন্দোলনের মুখে সরকার মেয়াদ উত্তীর্ণ থেকে পিছু হটে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিশেষ কিছু মানুষের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়োজনে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিক্সা রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া হয়। (সাদা রং এর গাড়ী)। সেই ব্যক্তি বর্গের দু’একজন ব্যতিরেকে বাকী সবাই প্রাইভেট সিএনজি অটোরিক্সাগুলো বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবহন কাজে ব্যবহার করছে।
এই স্বার্থান্বেষী মালিকরা সিএনজি অটোরিক্সা ট্রাফিক পুলিশদের ঘুষ দিয়ে এ পর্যন্ত বাণিজ্যিক ভাবে তারা যাত্রী বহন করে আসছে। বর্তমানে বেশীরভাগ গাড়ীর মেয়াদ ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় চলন্ত বোমা সামিল এই গাড়ীগুলো আর রাস্তায় চলতে দেওয়া যায় না। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে এইরূপ একটি গাড়ী বিস্ফোরিত হয়ে চালকের কি করুন মৃত্যু তাহা জাতি দেখেছে।
এর পরও মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ীর মেয়াদ বৃদ্ধি করা কি সমিচীন? দুই মহানগরীর রাস্তার জন্য এই মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ীগুলো এখন বিষ ফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এই প্রাইভেট সিএনজি অটোরিক্সার মালিকগণ বিভিন্ন কৌশলে এই কাজ অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি ও অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এই সব বিষয়ের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সাথে সাথে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিআরটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের হুশিয়ার করে দিচ্ছি ১৫ বছর মেয়াদ উত্তীর্ণের পর আর যেন কোন গাড়ীর ফিটনেস দেওয়া না হয় এবং মহানগরীর বাহিরের ঠিকানা পরিবর্তন করে মহানগরীর অন্তভুক্ত ঠিকানা পরিবর্তন করা না হয়। এর পরও যদি এই ধরনের কোন কাজ করা হয় তাহলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর চালকগণ দুর্বার আন্দোলনের কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।
আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই কোন অবস্থাতেই (ক) মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ীর ফিটনেস দেওয়া যাবে না (খ) ঠিকানা পরিবর্তন করা যাবে না (গ) প্রতিস্থাপন করা যাবে না (খ) মেট্রো রেজিষ্ট্রেশন করা যাবে না। তাই অন্য কোন কোন রকম তাল বাহানা না করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী হতে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিক্সা বিলুপ্তি ঘোষণা করা হোক ।
Leave a Reply