জাফর আলম, কক্সবাজার
বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংক শাখায় অস্ত্র লুট এবং ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, আনসার প্রধান মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, পুলিশের এসবি মনিরুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে তিনি হেলিকপ্টার যোগে রুমায় যান। সেখান থেকে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।পরে তিনি বান্দরবান সার্কিট হাউজে পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনা ঘটার আগে আগাম তথ্য দেওয়ার বিষয়ে গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,এসব ঘটনার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাবো। কোনোক্রমে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে দেবো না। এসব ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দারা ব্যর্থ কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা সবকিছু দেখবো। কারও কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, সেটি বের করবো। কোন জায়গা থেকে ফেল করেছে, এটি আমরা দেখবো। আগে দেখে নিই, তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এই শান্তিপ্রিয় এলাকায় যেখানে শান্তির সুবাতাস বইতো, এখানে অশান্তি হোক সেটি আমরা চাই না। আমরা অবশ্যই হামলার কারণ, কারা ঘটিয়েছে, কাদের সহযোগিতা ছিল—সবগুলো বের করে আইনি ব্যবস্থা নেবো।সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। তারা তাদের মতো ব্যবস্থা নেবে। আমরা আর কাউকে আনচ্যালেঞ্জড হতে দেবো না। উৎসটা কোথায় সবগুলো আমরা খুঁজে বের করবো।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর, বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার মেহেদী হাসান, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনসহ বিভিন্ন অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমা ইউএনও’র অফিসসংলগ্ন মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে। এ সময় তারা সোনালী ব্যাংক শাখায় ডিউটিরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে যাওয়ার সময় ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরের দিন বুধবার (৩ এপ্রিল) থানচি উপজেলা শহরের সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি হয়।রুমার ঘটনার পরপর যৌথ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে র্যাব ও সেনাবাহিনী। পরে তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
Leave a Reply