শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন

নতুন আঙ্গিকে ঈদ উৎসব: নাড়া দিচ্ছে সবাইকে

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৭.০৭ পিএম

বিশেষ সংবাদদাতা

ছোট্ট একটা অফিসে চাকুরি করে ছেলেটি। বিকলে গড়িয়ে যেতেই যখন তার ছুটি হলো- সে দৌড়ে নেমে গেলো তার অফিসের সিড়ি গুলো। তারপরেই সেল ফোনটি কানে নিয়ে বাসায় ফোন। অফিস ছুটি হয়ে গেছে। আমি এখনই আসছি।
এরপরে তারা রওনা হবে গ্রামে। এই গ্রামে যাবার জন্যে তার ঝক্কি কম নয়। বাস, লঞ্চ সবই বেশি ভাড়া নেবে। লোকাল বাস বা লঞ্চে তাদের যেতে হবে গাদাগাদি করে। তারপরে এই কষ্ট মেনে নিয়ে তারা যাবে গ্রামে, আপন জনের সঙ্গে উৎসবে সামিল হতে।
কেন তারা এভাবে সব কষ্ট মেনে নিয়ে গ্রামে ছোটে। এ বিষয়ে বিশিষ্ট একজন সমাজ বিজ্ঞানীর মত হলো, ঢাকা শহরে দুই কোটির বেশি মানুষ বাস করে ঠিকই তবে তার বেশি অংশ যত না নাগরিক তার থেকে বেশি তারা বুকে গ্রামকে ধারণ করে। তাদরে আপন জন বলতে এখনও তাদের গ্রামের চারপাশের মানুষ। তাই তারা উৎসব হলেই গ্রামে যায়।
এমনটি আগেও ছিলো ঢাকা বা কোলকাতায়। তখন উৎসবের আগে শুধু সাধারন মানুষ নয়, ধনীরাও গ্রামে যেতেন। সেই গ্রামে যাওয়া নিয়ে তাদের যেমন পরিবারের শিশু থেকে বৃদ্ধদের মধ্যে যেমন আনন্দের ঢেউ খেলে যেতো তেমনি গ্রামের মানুষও আশা করে থাকতো তারা গ্রামে আসবে। গ্রামে এলে তাদের উৎসব পরিপূর্ণ হবে।
শিল্পী পরিতোষ সেনের লেখায় পুজোর সময় তাদের ঢাকার জিন্দাবাহার থেকে বিক্রমপুর যাওয়ার এক অনিন্দ্য সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায়।
তবে এখন ঢাকার মিডল ক্লাস বা আপার ক্লাসে এ কালচার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তারা এ ধরনের উৎসবে পরিবার পরিজন নিয়ে বিদেশে যান।
অন্যদিকে কোলকাতায় এ কালচার আরো আগে এসেছে। আগে তাদের মিডল ক্লাস ও আপার ক্লাস বাংলার বাইরে কোথাও যেতেন -এখন তারা বিদেশে যান। অন্যদিকে নিম্ম মধ্যবিত্ত সারা বছর টাকা জমিয়ে উৎসবে বাংলার বাইরে কোথাও যান।
ঢাকার নিম্ম মধ্যবিত্ত ক্লাসেও একই কালচার দেখা যাচ্ছে। তারা দেশের বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন লোকেশানে যেমন সিলেট, কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দারবন, কুয়াকাটা, সুন্দরবন বিভিন্ন এলাকায় ঈদ অবকাশ কাটান।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ ধরনের কালচার তখনই আসে যখন দেশের একটি বা বেশ কয়েকটি শ্রেনীর কাছে অর্থ আসে। বাংলাদেশে’র বর্তমান ঈদ ঘিরে এ কালচার দেখে বোঝা যাচ্ছে। তাই অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা যাই হোক না কেন, একটি শ্রেনীর কাছে অনেক অর্থ আরেকটি শ্রেনী স্বচ্ছল।
আর নিম্মবিত্তরা যেহেতু গ্রামে ছুটছে তাই তাদেরও উত্‌সবে সাড়া দেবার সমর্থ আছে।
অবশ্য সংস্কৃতি কর্মী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রাক্তন একজন সভাপতি বলেন, উত্‌সব বাস্তবে মানুষের জীবনে এমন একটি বিষয় যে, সে তখন আর অর্থের দিকে তাকায় না। কারণ, এটাই তার বেঁচে থাকার মূল ফুস ফুস।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024