এই প্রথম ভিয়েতনামে মামলার বিচারের সময় নিয়মিত আপডেট তথ্য গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল।
২০১১ সালের কথা। ৬৭ বছর বয়সী নারী মাই ল্যান ছিলেন হো চি মিন সিটির নামকরা ব্যবসায়ী। সে সময় তিনটি ছোটখাট ব্যাংক মিলে ভিয়েতনামের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘সায়গন কমার্শিয়াল ব্যাংক’ গঠনে তিনি ভূমিকা রাখেন। ব্যাংকের ৯০ শতাংশের বেশি মালিকানা ছিল ল্যানের।
সেই ক্ষমতাকেই কাজে লাগিয়ে নিজস্বভাবে ব্যাংকে ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়া এবং তাদের দিয়ে ল্যান তার অধীনে থাকা শেল কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্কের জন্য শত শত কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেন তিনি। আদালতে সেই অভিযোগও উপস্থাপন করা হয়।
যে পরিমাণ অর্থ ল্যান ঋণ নিয়েছেন তা বিস্ময়কর। এই ঋণের পরিমান সব ব্যাংক ঋণের ৯৩ শতাংশ।
এ কারণে ১১ বছর ধরে দেশের ব্যাংকগুলো লুট করার অভিযোগে শীর্ষ আবাসন ব্যবসায়ী এই নারী ধনকুবেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয় হো চি মিন সিটির আদালত।
পদমর্যাদায় ধনকুবের মাই ল্যান ভিয়েতনামের নামী রিয়েল এস্টেট সংস্থা ‘ভ্যান থিন পাট হোল্ডিং গ্রুপ’-এর চেয়ারপার্সন। অর্থ আত্মস্যাতের মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ভিয়েতনামে আদালতের এক বিরল রায়।
সায়গন কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক থেকে ৪ হাজার ৪শ কোটি ডলার (৪৪ বিলিয়ন ডলার) ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে অর্থ লোপাট করার অভিযোগে ল্যান দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আদালত রায়ে তাকে ২ হাজা ৭শ’ কোটি ডলার ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল।
গতবছর ৫ অগাস্টে বিচার শুরু হয়েছিল । বিচার শেষ হয়েছে নির্ধারিত সময়ের আগেই।
ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ সাধারণত এসব মামলায় খোলাসা করে কিছু না বললেও এই মামলার ক্ষেত্রে তারা বিস্তারিত খুঁটিনাটি তথ্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছে।
বিবিসি জানায়, কর্তৃপক্ষ বলেছে, মামলায় সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়েছিল ২৭০০ মানুষকে। মামলা পরিচালনা করেছেন ১০ জন রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি এবং প্রায় ২০০ আইনজীবী।
মাই ল্যানসহ অন্য সব আসামিই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। বাকিদের ২০ বছর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত কারাদণ্ড হয়েছে। মাই ল্যানের স্বামী এবং ভাতিজির যথাক্রমে ৯ এবং ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
বিবিসি অবলম্বনে
Leave a Reply