সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

অজগর নিয়ে যতই গল্প থাকুক, আসলে এদের বিষ নেই

  • Update Time : শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪, ৮.৪৪ পিএম

 

শিবলী আহমেদ সুজন

 

ছোটকাল থেকেই সকলেই কমবেশি  সাপের সঙ্গে পরিচিত । বেড়ে ওঠার সঙ্গে সেঙ্গ প্রকৃতির সঙ্গে আরো পরিচয় হওয়াতে তখন । আমাদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নানা বিষয়ে জানার আগ্রহ হয় ও তেমনি সাপ নিয়ে কৌতুহলের ও কোন শেষ নেই, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা ঘুরপাক খায় আমাদের অজানা ও অবাস্তব কুসংস্কারের মধ্যে দিয়ে । গল্প–উপাখ্যান ও লোককথায় আছে সাপ নিয়ে  বিচিত্র অনেক জানা অজানা সত্য মিথ্যা ঘটনা । যারা শহরে বসবাস করে তারা সাপ খুব একটা দেখতে পায় না বললেই চলে ।

তারা সাপকে প্রথম দেখতে  পায় মূলত সাপুড়েবা বেদেদের ঝাঁপিতে , সাপুড়েদের বাক্সে , লোক জমানো খেলায়, চিড়িয়াখানায় । সাধারণত সাপকে  বিষধর প্রাণী হিসেবে জানে সকলেই  অথচ পৃথিবীতে প্রায় তিন হাজারের ও বেশি প্রজাতির সাপ রয়েছে ,তার মধ্যে বিষধর সাপ খুব কম ।

 

গোখরা ,কেউটে এই প্রবল বিষধর সাপের বাইরে বেশি পরিচিত সাপ অজগর । পরিচিতির দিক থেকে গোখোরের পরেই আসে অজগরের নাম ।এর বিশাল আকৃতির জন্যই এটি ভয়াল প্রাণী হিসেবে পরিচিত ।

কিন্তু তাকে নিয়ে কৌতুহলের অন্ত নেই। নানান রূপকথা থেকে চিড়িয়াখানার আকর্ষনীয় দর্শনীয় প্রাণী এই অজগর সাপটি আদৌ কি বিষধর সাপ ?

এদের শরীরের ওপরের ও নিচের আঁশ দুই ধরনের হয়ে থাকে । মাথাও আকারের তুলনায় অজগর সাপের গলা হয়ে থাকে চওড়া ।একটি অজগর ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা ও ২০০ পাউন্ডের হয়ে থাকে ,চোখ তুলনামূলক ভাবে পূর্ববর্তী সাপের চেয়ে বড় হয়ে থাকে ।এরা অনায়াসে ১০০ পাউন্ড ওজনের একটি প্রাণীকে খেয়ে ফেলতে পারে ।বস্তির অবশিষ্টাংশ উপস্থিত এবং পায়ুপথের পাশে কাটার মতো পিছনের পা থাকে । পৃথিবীর দীর্ঘ ও আয়তনে ভারী সাপের বেশির ভাগই এই পরিবারের হয়ে থাকে । অজগর তার শিকার বা শত্রুকে পেঁচিয়ে গিলে ফেলতে পারে ।

অজগর এর মুখ আকারে বড় হয়ে থাকে এবং এদের চোয়ালের নিচের দিকের দাঁত বাঁকানো থাকে । যে কোন খাদ্যবস্তু অবশিষ্টাংশ উপস্থিত এবং পায়ুপথের উভয় ধরে চেপে চেপে মারে । পৃথিবীর উষ্ণ ও শীতল গভীর বনাঞ্চলে এরা বাস করতে পছন্দ করে।  তাছাড়া চাঁ বাগান ,সমুদ্রে ইত্যাদি স্থান  প্রচুর অজগর আছে ।

এই পরিবারে প্রায় ৯০ টি প্রজাতি রয়েছে । আমাদের পার্শবর্তী  দেশ ভারতে অজগরের গড় দৈর্ঘ হয়ে থাকে ৩০০ সেন্টিমিটার ( ৯ ফিট ১০ ইঞ্চি) ও সর্বচ্চ দৈর্ঘ হয়ে থাকে ৭৬০ সেন্টিমিটার ( ২৪ ফিট ১১ ইঞ্চি) । এদের পিছনের দিকে গাড়ো বাদামী দাগ থাকে । গায়ের রঙ তিন বর্ণে মিশ্রিত থাকে ,যেমনঃ ধূসর,সাদা,এবং ফ্যাকাশে বাদামী।

 

এদের খাদ্য তালিকায় থাকে ইঁদুর ,হরিণ ,বানর ,কুকুর ইত্যাদি । নারী অজগর দুইমাসে বিশ থেকে আশিঁটি ডিম দিয়ে থাকে ও নব্বই থেকে একশত দিন যাবত চারিপাশে কুন্ডলী পাঁকিয়ে বসে থাকে । এরা রাতের বেলাতেই চলাচল করে। সাধারণত জলের মধ্যে ৩০ মিনিট সহজে ডুবে থাকতে পারে । মাথা তীরের মতো হয়ে থাকে ।

 

সাপ উষ্ণশোণিত (যেসব প্রাণীরা দেহের তাপমাত্রা আভ্যন্তরীণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে) প্রাণী । এ কারণে এদের গায়ে হাতের ছোঁয়া লাগলে বেশি ঠান্ডা লাগে, উষ্ণশোণিত প্রাণী বলেই এগুলো প্রকৃতির তাপমাত্রার ওঠা নামার দিকে খুব সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয় । প্রাকৃতিক সূত্রে সব প্রাণীই এক অর্থে নিরীহ । সব প্রাণীরই শত্রু মিত্র রয়েছে ,সুতরাং সাপ ও এর বাইরে নয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024