পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
অন্য জায়গার মত বঙ্গদেশেও বালুকাময় মাটির চাইতে মেটেল জমি চাষের উপযুক্ত করে বানাতে খাটতে হয় অনেক। উপযুক্ত করে জমি বানাতে ক্ষেতে লাঙ্গল দিতে হয় তিন থেকে চার বার। এই ধরনের জমিতে লাঙ্গল দেবার উপযুক্ত সময় কখন আসবে সেজন্যে অপেক্ষা করতে হয়। এটা অবশ্য নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর। বঙ্গদেশে এটা সবাই জানে যে নীলের আবাদ করার মত জমি এক অঞ্চলে বিশেষ নাই।
নীলের বীজ ও তার প্রকারভেদ
বঙ্গদেশে বীজ ব্যবহার করা হয় প্রধানতঃ দুই প্রকার। একটি পরিচিত হিন্দুস্তানী বীজ নামে, অন্যটি পরিচিত নিম্নবঙ্গ নামে। ফুর্তিগড়ের বীজ হল সবচেয়ে ভাল বীজ। নিম্নবঙ্গের বীজের মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বীজ হল কিষাণগড়ের। এছাড়াও আরও নানা নামের বীজ আছে, কিন্তু মূলতঃ তা এই দুই শ্রেণীর বীজের মধ্যেই পড়ে। এগুলোর প্রকারভেদ নির্ভর করে কোন শ্রেণীর জমিতে বীজ উৎপন্ন তার উপর।
এই দুই রকম বীজের রং ও আকার লবঙ্গ বীজের মত, তবে কিছুটা বড়। ফুর্তিগড় ও উত্তর ভারতের বীজের সুবিধা এই যে, তা বাংলার বীজের চেয়ে অল্প সময়ে অঙ্কুরিত হয়। তাই সময়মত বীজ বুনতে না পারলে, কোনো কারণে বীজ বপনে দেরি হলে বাংলার বীজই পছন্দ করে কৃষকরা।
হালচাষ
ফেব্রুয়ারি মার্চ-এ আবার বৃষ্টিও তেমন বাকি না। মাটি ভেজা থাকতেই বীজ বপন করতে হয় নইলে অঙ্কুরোদগম হয় না। বাংলাদেশের বীজ-এর মত উত্তর ভারতের বীজে পাশ থেকে গাছের কান্ড বের হয় না। উত্তর ভারতের বীজ থেকে যে চারা গাছ জন্মায় তা তিন ফুটের মত দীর্ঘ হলেই হেঁটে দিতে হয়। গাছ বেশি বড় হলে নিচের দিকের পাতা আপনা থেকেই পড়ে যায় তার ফলে ন্যাড়া দেখায়। বাংলা দেশের গাছের চেয়ে এই ধরনের গাছের ফলন কম। কিন্তু শস্যদানা বেশি কারণ, গাছের পাতাও বেশি। নীল গাছের এই প্রজাতির নাম “লাইনাস ডিসপারমা।”
Leave a Reply