পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
কিষাণগড় অথবা বাংলার নিম্নাঞ্চলের বীজের সুবিধা এই যে, কান্ডের চারপাশে অনেক শাখা প্রশাখা বের হয় বলে গাছ আবৃত থাকে পাতায় এবং গাছে সরাসরি সূর্যকিরণ লাগে না। এই ধরনের বীজ থেকে উৎপন্ন গাছের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এই গাছ বাড়ে কম কিন্তু মরে যাওয়ার ভয় নাই। এর কারণ এই যে, এ ধরনের গাছে পুরনো পাতা পরে গেলে নতুন পাতা জন্মায়। এই গাছের নাম লাইনাস ইন্ডিগো- ফেরা।
বপন
বাংলাদেশে নীল চাষ করা হয় দু’টি ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে। একটি হল বার্ষিক বন্যার পানি নেমে গেলে অক্টোবর মাসে। আর একটি ঋতু হল শীতকাল চলে যাওয়ার পরে- অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারির পর।
প্রথম মওশুমে দু’ভাবে বীজ বপন করা হয়। এই দুইভাবে বীজ বপনই করা হয় অক্টোবর মাসে। সাধারণভাবে এই বপনকে বলা হয় অক্টোবর বপন। বর্ষা মওশুমে যে সব ক্ষেত প্রথম দিকে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয় আগে শুধু সেগুলিতে বীজ বপন করা হয় আগে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার অব্যবহিত পরে যদি এই ক্ষেতগুলিতে নীলের বীজ বপন করা না হয় তাহলে এমন আশঙ্কা থাকে যে শেষ পর্যন্ত আর হয়ত এই সব ক্ষেতে চাষাবাদ করাই হবে না, কেননা চারাগাছ পরিণত হবার আগেই হয়ত আবার বন্যা এসে যাবে।
অক্টোবর মাসে যে দুই প্রথায় বীজ বপন করা হয় তার প্রথমটিতে বন্যার পর ক্ষেতে পলিমাটি থাকতেই বীজ ছড়িয়ে দেয়া হয় এতে ক্ষেত কর্ষণের প্রয়োজন হয়না। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাটির উপরিভাগে ঘন কাদা থাকতেই বীজ ছিটিয়ে দেয়া হয়। কাদামাটি পানিতে ভেজা থাকে বলে জোরে বীজ ছিটিয়ে দিলে বীজের অর্দ্ধেক কিংবা তিনচতুর্থাংশ অংশ কাদার মধ্যে আটকে যায়। বীজ মঞ্জুরিত হবার জন্য যথেষ্ঠ। বীজ ভালভাবে আবৃত করে না রাখলে সূর্যীকরণে তা শুকিয়ে যায়, আবার বীজ মাটির গভীরে ঢুকলে তা পচে যায় পানিতে।
Leave a Reply