শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন

কানাভুলা

  • Update Time : রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪, ১২.০০ পিএম

আবু ইসহাক

অন্ধকার বারান্দা। এক পাশে শুয়ে আছে জাহিদ। উদ্বেগ আর আশঙ্কা তার ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সে এপাশ-ওপাশ করছে বারবার। রাত আর কতক্ষণ আছে কে জানে? নিদ্রাহীন রাত আর পোহাতে চায় না। ঐ ঐ আবার!

-উহ্, মইর‍্যা গেলাম গো, উহ্-উহ্-উহ্-

স্ত্রীকণ্ঠের চাপা চীৎকার। ব্যথাকাতর সে চীৎকারে শিউরে ওঠে নিস্তব্ধ রাত্রি।

-উহ মাগো-উহ্-উহ-উহ-

-চিল্লাইও না, বউ। আল্লার নাম লও। আল্লায় রহম করব।

-আল্লাগো-ও আল্লাহ্-

* জাহিদের শিরা-উপশিরা বেয়ে শীতল শিহরণ প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত তালে চলছে হৃদস্পন্দন। সে মাথা তোলে। উঁকি মারে তরজা বেড়ার ফাঁক দিয়ে।

ঘরে কেরোসিন-কুপি মিটমিট করছে। আর মৃদু আলোয় দেখা যায় রাহেলা বালিশের ওপর দুই কনুই দিয়ে উপুড় হয়ে হাঁপাচ্ছে। মাঝে মাঝে ব্যথায় কঁকিয়ে উঠছে, চীৎকার করছে। তার মা বউয়ের মাথায় পিঠ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এক পাশে শুয়ে আছে দাই রঞ্জার মা। এত গোলমালের মধ্যেও সে দিব্যি ঘুমিয়ে নিচ্ছে।

জাহিদ বালিশে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে আবার।

কুই-কুকুরু-উ-উ-কু-উ-উ-

মোরগ বাক দিয়েছে। রাত আর বেশি নেই। বাইরে খড়মের আওয়াজ পাওয়া যায়। পাছ-দুয়ারের কাছে শোনা যায়, রাঙা চাচীর গলা,-অ জাহিদের মা, মরিয়ম ফুল ভিজাইয়া পানি খাওয়াইছস?

-হ, বইন। কিন্তুক কিছুতেই কিছু অইল না। হেই কাইল দুফরের আগে ব্যথা শুরু অইছে।

দরজা খোলার শব্দে বোঝা যায়, রাঙা চাচী ঘরে ঢুকছে। সে বলে, ঘুমাইয়া পড়ছ

নি রঞ্জার মা?

-অ্যা-

-ওডো না। দ্যাখো আবার চেষ্টা কইর‍্যা।

-দ্যাখলাম তো কতবারই। আবার দ্যাখে আছি।

-উহ্ মাগো, আর পারি না।

-এটু সইজ্যা কইর‍্যা থাক্। আল্লা আল্লা কর। দেখি, দ্যাখে দে।

খানিক পরে আবার তারই গলা শোনা যায়, উহু, অখনো কিন্তু না। পয়লা- পরথম, দেরি তো অইবই।

কিন্তু দেরি হতে হতে ভোর হয়ে যায়। আরো কত সময় নেয়, কে জানে?

রোজ অন্ধকার থাকতে জাহিদ রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু আজ আর বেরুতে মন চাইছে না তার। সে রিক্সার টুকিটাকি অংশগুলো খোলে, পরিষ্কার করে আবার যথাস্থানে লাগায়। চেইন খুলে সাফ করে। এটা-ওটা নাড়াচাড়া করে। রিক্শার আসলে হয়নি কিছুই। ছুতো করে কাজে না যাওয়ার মতলব।

-আল্লাগো আহ্-আহ্।

স্ত্রীর কাতরানি। আগের চেয়ে ঘন ঘন শোনা যায় এখন। এক একটা দূরাগত ব্যথার ঢেউ যেন জাহিদের পেটের নাড়ি-ভুঁড়ির ওপর আছড়ে পড়ছে। এক সময়ে তার কর্মরত হাতদুটো থেমে যায়। রিক্সার টুকিটাকি অংশগুলো ছড়িয়ে পড়ে থাকে এদিক-ওদিক।

মা’-র ডাকে তার চমক ভাঙে। একটা বোতল তার দিকে এগিয়ে দিয়ে তার মা বলে, শিল্পীর রাস্তার কলের তন পানি ভইর‍্যা পাইকপাড়ার পীর সাবের কাছে যা। তেনার কাছে ভাইঙ্গা কইস। দুইডা ফু দিয়া দিব। তেনার পানি-পড়া খাইলে বিনে কষ্টে খালাস অইয়া যাইব।

জাহিদের হাত এবার ব্যস্ত হয়ে ওঠে। রিক্শার টুকিটাকিগুলো জায়গা মত বসাতে লেগে যায় সে।

তার মা আবার বলে, তোর কাছে ট্যাকা আছে না? পাঁচটা ট্যাকা নজর দিস হুজুররে। আর হোন, হুজুরের মোখের কাছে বোতল নিস না। তেনার ফুঁ-এর তেজে কিন্তুক বোতল ফাইট্যা চৌখণ্ড অইয়া যাইব।

জাহিদ বোতলটাকে রিশার আরোহী-আসনের নিচে কাত করে রেখে দেয়। তারপর ঝড়ের বেগে রিক্সাটাকে ছুটিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়।

দু’মাইল রাস্তা যেতে বেশিক্ষণ লাগে না জাহিদের। পীর সাহেবের বাড়ি কাছে গিয়ে রাস্তার টিপকল থেকে সে বোতলটাকে ভরে নেয়।

জাহিদের ভাগ্য ভালো। পীর সাহেব খানকাশরীফে তশরীফ এনেছেন। তাঁকে ঘিরে বসে আছে অনেক সাগরেদ-মুরীদ।

বোতল হাতে জাহিদ ঘরে ঢোকে। হাঁপাতে হাঁপাতে এগিয়ে যায়, বলে, আছলাম আলায়কুম।

সাগরেদদের একজন হাতের ইশরায় তাকে বসতে বলে।

একজন লোক হাঁটু গেড়ে বসে আছে পীর সাহেবের সামনে। পীর সাহেব তার কাঁধ চাপড়ে বলেন, তোমার ঈমান বহুত জয়ীফ। ঈমান পোক্ত কর। ইনশাল্লাহ আরাম হইয়া যাইব। আর যা যা বাতলাইয়া দিলাম, ইয়াদ আছে তো? হররোজ গোছলের সময় হাতের তালুর উপর তাবিজখান রাখবা। তারপর ঐ হাত দিয়া উডাইয়া তিন ঢোক পানি খাবা।

কে একজন এসে ঘরে ঢেকে। পীর সাহেব ব্যস্তভাবে তাকে জিজ্ঞেস করেন, কি খবর?

-খবর ভালো। ছেলে হইছে।

-অ্যাঁ ছেলে। শোস্ত্র আল-হামদুলিল্লাহ। এই শামসের, আজান দাও, আজান দাও শিগগীর।

শামসের নামের সাগরেদটি উঠে যায়। পীর সাহেব সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার ছোটমেয়ের ছেলে হইছে। পয়লা-পরথম ছেলে। তোমরা সকলে দোয়া কইরা। আজান শুরু হয়ে গেছে। পীর সাহেবের সাথে অনেকেই মনে মনে আজানের জওয়াব আওড়াচ্ছে। জাহিদ কিছু বুঝতে না পেরে বোতল হাতে নিয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু একজন সাগরেদের ইশারা ও সেই সাথে ভ্রুকুটি লক্ষ করে সে বুঝতে পারে-এ সময়ে

এভাবে দাঁড়ান অন্যায় হয়েছে তার। সে আবার বসে পড়ে। আজান শেষ হয়। পীর সাহেবের সাথে সবাই শরীক হয় মোনাজাতে। মোনাজাত শেষ হলে জাহিদ পীর সাহেবের সামনে যাওয়ার উদ্যোগ করে আবার। কিন্তু তার আগেই আর একজনের আরজি পেশ হয়ে গেছে।

-হুজুর, কোন ফল বোতে পারতাছি না।

-অ্যাঁ, কোন ফল বোঝতে পার না!

-না হুজুর, তা কই না। কিছু কিছু ফল বোঝতে পারি।

-তা-ই কও। তোমার পয়লা কথা শুইন্যা আমি তো তাজ্জব! তোমরা গাছের দানা লাগাইয়া দিনে দিনেই ফল খাইতে চাও। আগে গাছ হইব, গাছ বড় হইব, তারপরে তো ফল। ব্যারাম-আজার আল্লাতায়ালা পাঠান বান্দার ঈমান পরীক্ষার জন্য। তোমরা আয়ুব আলায়হেস-সালামের কিচ্ছা শোন নাই?

-হুঁ হুজুর, শুনছি। একসাথে কয়েকজন কলরব করে ওঠে।

পীর সাহেব আবার বলেন,- আরাম হইব, আস্তে আস্তে আরাম হইব। ঘাবড়াইও না।

লোকটি বলে, হুজুর, আর একটা কথা। আমাগ ঘরের মানুষটারেও বুঝি এই ব্যারামে ধরছে। কাইল কান্তে কান্তে বমি কইর‍্যা দিছিল। বমির লগে রক্ত।

-অ্যাঁ, তা-ই নাকি! শোক্‌ আল্লহামদুলিল্লাহ। ব্যারামটা যখন দুই ভাগ হইয়া গেছে, তখন তার জোরও কইমা গেছে ইনশাল্লাহ। ব্যারামটা যত বেশি লোকের মধ্যে ভাগ হইব, ততই বেহস্তেরীন। তোমরা বোত্তেই পার, এক তিল পরিমাণ জহর একজনের জান কবচ করতে পারে। কিন্তু ঐ পরিমাণ যদি একশো’ জনের পেডে যায়, কেউ টেরই করতে পারবে না।

একটু থেমে তিনি আবার বলেন, তোমার চিন্তার কারণ নাই। বদরক্তগুলো খারিজ হইয়া গেলেই আরাম হইয়া যাইব ইনশাল্লাহ।

জাহিদের মনের মধ্যে পীর সাহেবের কথাগুলো জটলা পাকাতে শুরু করেছে। সে ছেলেবেলায় মাইনর স্কুলে পড়ত। তার পঠিত স্বাস্থ্য বইয়ের উপদেশগুলোর ওপর পীর সাহেবের কথাগুলো ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে।

পাশের একজনের আঙুলের টোকায় তার চমক ভাঙে। লোকটি বলে, কি মিয়া, চুপ কইর‍্যা রইছ ক্যান? তোমার না খুব গরজ দেখছিলাম?

জাহিদ বোতল নিয়ে পীর সাহেবের কাছে যায়। বলে, হুজুর, আমার পরিবার বড় দুঃখ পাইতে আছে। খালাস অইতে আছে না।

পীর সাহেব চোখ বোজেন। তাঁর ঠোঁট নড়ছে। জাহিদ বোতলটা ধরে থাকে। পীর সাহেব তিনবার ফুঁ দিয়ে হাতের ইশারায় সরে যেতে বলেন তাকে। জাহিদ তাঁর পায়ের কাছে একটা পাঁচ টাকার নোট রেখে বোতল হাতে বেরিয়ে আসে।

জাহিদ বোতলটাকে আরোহী-আসনের নিচের খোড়লের মধ্যে খাড়া করে রাখে। ওটা যাতে পড়ে না যায় সে জন্যে সে আলগা সীটটার একটা পাশ খোড়লের মধ্যে ঢুকিয়ে বোতলটাকে চাপ দিয়ে রাখে।

জাহিদ রিক্শা নিয়ে রওনা হয়। সামনে তাকাতেই দেখে দু’জন মহিলা পীর সাহেবের বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে বেরুচ্ছেন। পরিধানে তাঁদের ধবধবে সাদা পোশাক। একটু এগিয়ে যেতেই সে তাঁদের চিনতে পারে। মহকুমা শহরের একমাত্র লেডি ডাক্তার আইরিন গোমেজ আর নার্স সুশীলা বিশ্বাস। জাহিদ আশ্চর্য হয়। পীর সাহেবের বাড়িতেও তাহলে এদের দরকার পড়ে!

-এই রিকশা-

-এখন নিতে পারমু না, দিদি।

-কেন?

-আমার একটু জলদি আছে।

রিক্সা ছুটে চলে।

কিন্তু একটু দূরে গিয়েই কি ভেবে জাহিদ রিক্শা ঘোরায়।

ডাক্তার ও নার্স রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের কাছে গিয়ে জাহিদ বলে, আসেন দিদিমণিরা, আপনেগ লইয়া যাই। এইখানে রিক্শা পাইতে দেরি অইব আপনেগ। জাহিদ রিশা থেকে নেমে সীটটাকে ঠিকমত বসিয়ে দেয়। বোতলটা খোড়লের মধ্যে কোন অবলম্বন ছাড়াই দাঁড়িয়ে থাকে।

কিছু দূর যাওয়ার পর ডাক্তার বলে ওঠেন, কি পড়ছে হে, জল যেন?

জাহিদ পেছনে তাকিয়ে দেখে, সীটের তলা দিয়ে টস্টপিয়ে পানি পড়ছে। গাড়ির প্যাডেলে জোরে পা মারতে মারতে সে বলে, যাউক পইড়্যা, রাস্তার কলে পানির আকাল কি?

বড় রাস্তা ধরে রিক্শা ছুটে চলে। অনেক দূর গিয়ে রিক্শা একটা গলির মধ্যে ঢোকে।

লেডি ডাক্তার চেঁচিয়ে ওঠেন, এই, এই রিক্সাওয়ালা, ওদিকে কোথায় যাচ্ছ? -দিদিমণি, একজন রুগী দেইখ্যা যাইতে অইব। রিক্সার গতি একটুও না কমিয়ে

পেছনে মুখ ঘুরিয়ে জাহিদ বলে।

-না না, সময় নেই এখন।

-একটু দয়া করেন দিদিমণি। রুণীর অখন-তখন অবস্থা। -বলছি তো এখন সময় নেই। থামাও থামাও। ঘোরাও রিকশা। তার কথা শেষ না হতেই রিকশা গিয়ে থামে জাহিদের বাড়ির উঠোনে।

-ও মাগো-ও আল্লাগো উহ উহ!

ঘর থেকে স্ত্রীকণ্ঠের কাতর চীৎকার ভেসে আসছে। ডাক্তার ও নার্স পরস্পরের মুখের দিকে তাকান।

জাহিদ জোড়হাত করে বলে, দিদিমণি, আপনেগ পায়ে পড়ি। আমার স্ত্রী বড় কষ্ট পাইতে আছে। আপনারা না দ্যাখলে মইর‍্যা যাইব।

শব্দ পেয়ে জাহিদের মা বেরিয়ে আসে। জাহিদ বলে, মা, এনাগ ঘরে লইয়া যাও।

-হ যাই। তোরে যার লেইগ্যা পাডাইছিলাম, হেইডা কই?

-হঁ, দিতে আছি। তুমি আগে দিদিগ ঘরে লইয়া যাও; রুগী দেখাও।

জাহিদের মা ঘরে যায়। তার পেছনে যান ডাক্তার আর নার্স। জাহিদ সীটটা তুলে দেখে বোতলটা কাত হয়ে পড়ে আছে। ওতে আর এক ফোঁটা পানিও নেই।

সে একটু বিব্রত হয়। মনে মনে বলে, মা এখনি আইসা বোতল চাইব। কিন্তু খালি বোতলডা কেমন কইর‍্যা দেওয়ন যায়!

যমজ ছেলে আর মেয়ে। জন্মের সময় আট মাসে ভূমিষ্ঠ শিশুর মত ছিল। এখন অনেক বেড়ে উঠেছে, খলবলে হয়েছে বেশ।

দুই নাতি-নাতনীকে দুই কাঁখে নিয়ে জাহিদের মা একদিন জাহিদকে বলে,- হুজুরের অছিলায় একই থাবায় আসমানের চান-সুরুজ ঘরে আছি। তেনার দোয়ার বরকতে আল্লায় ওগ ভাল্-বালাই রাখছে।

একটু থেমে আবার সে বলে, গেল ভাদ্দর মাসে ও-গো আঠারো মাস পুরা অইছে। অখন আর বাও-বাতাসের ডর নাই। একদিন ও-গো হুজুরের কাছে লইয়া যাইতে চাই। তুই কি কস?

-যাইতে চাও, যাও। এইডা তো ভাল কথা।

-হে অইলে আহে শুক্কুরবারে চল্ যাই। বউরেও লইয়া যাইমু। তেনার দয়ায় ও বাঁইচ্যা আছে। তেনার পানি-পড়া না অইলে কি আর ওরে বাঁচাইতে পারতাম?

পীর সাহেবের বাড়ি যাওয়ার বন্দোবস্ত হয়ে যায়। হালুইকরের দোকান থেকে বড় এক হাড়ি মিষ্টি আসে। হুজুরের নজরানা বাবদ জাহিদের মা-র আঁচলে বাঁধা পড়ে একটা দশ টাকার নোট।

মা ও স্ত্রীকে রিকশায় বসিয়ে রওনা হয় জাহিদ। তাদের দু’জনের কোলে দুই শিশু। গলিটা পেরিয়ে রিক্সাটা ডান দিকে মোড় নেয়, বড় রাস্তা ধরে ছোটে।

-এই দিগে যাস কই জাহিদ?

-ঠিক পথেই যাইতে আছি মা।

-ঠিক পথে। তোরে কি দিনে-দুফরে কানাভুলায় পাইছে?

-না মা, কানাভুলায় পায় নাই।

-আম্মাজান, কানাভুলা কারে কয়? রাহেলা তার শাশুড়িকে জিজ্ঞেস করে। -কানাভুলা এক রহমের ভূত। এই কানা ভূত পথ ভুলাইয়া উলডা পথে লইয়া যায়। হেরপর ঘাড় মটকাইয়া রক্ত খায়।

-ওঃ, বোঝতে পারছি, পথ ভুলাইন্যা ভূত। আমার নানাগো দেশে কয় দিগাভুলা। কিছুদূর গিয়ে রিক্শাটা একটা সরু গলিতে ঢোকে।

-এই দিগে কই যাস, জাহিদ? তোরে ঠিক কানাভুলায় পাইছে, আমি বোঝতে পারছি।

-না মা, কানাভুলায় আর পথ ভুলাইতে পারব না, ঘাড় মটকাইয়া রক্ত খাইতে পারব না কোনদিন।

-কিন্তু পীরসাব তো থাকেন উত্তরমুখী, পাইকপাড়া-

-তুমি কিচ্ছু চিন্তা কইর‍্য না মা। যার অছিলায় চান-সুরুয পাইছ, তার বাড়িতেই যাইতে আছি। ঐ যে দ্যাখ্যা যায় তার বাড়ি।

#

৩৮/৫-ই জাহাঙ্গীর রোড, পূর্ব করাচী

১৪ অগ্রহায়ণ, ১৩৬৯ নভেম্বর, ১৯৬২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024