মোঃ সজিব আহমেদ
দীর্ঘ ১৯ দিন রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, আন্দোলন, প্রতিবাদের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ যে নতুন বিপ্লব সংগঠিীত হয়েছে তার পিছনে অগ্রনী ভূমিকা ছিল জেনাশেন জেড এর। এই প্রজন্মটি ইন্টারনেট ও সোশ্যল মিডিয়ার সাথে বড় হয়েছে। এই প্রজন্মটি ছোট বেলা থেকে গোয়েন্দা বই পড়ে পড়ে বড় হয়েছে, যার ফলে এদের বুদ্ধিমত্তা, চিন্তাধারা অনেক তীক্ষ্ণ। যারা সমাজগঠনে ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি সমাজের অন্যায় ও শোষনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে রাষ্ট্রসংস্কার করতে পারে। যার সাক্ষী বাংলাদেশ গত ৫ই আগষ্ট।
গত জুলাই মাসের কোটাসংস্কার আন্দোলন যে রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের রূপ নিবে তা কখনো এই জাতি কাল্পনিক চিন্তার জগতেও হয়তো ভাবতে পারেনি। একটি রাষ্ট্রযন্ত্র যখন মানুষের বাক স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তখন সেই জাতির মধ্যে থেকে আলোক বর্তনীর মতো কিছু জনতা বের হয়ে আসে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করতে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশে ছাত্র সমাজ নিজের চাকরিতে কোটার এক অশুভ ছায়ার অনুভর করে। যার জন্য গত জুলাই মাসে কোটা সংস্করণ আন্দোলন সংগঠিত হয়। এই ন্যায় সংঙ্গত আন্দোলনের জন্য দিতে হয়েছে শত শত ছাএ-ছাএীর তাজা প্রান। ফলে ছাএ সমাজেরকোটা আন্দোলন থেকে রাস্ট্রসংস্কর আ্ন্দোলন রূপ রেখা আনায়ন করে। এরপর স্বৈরস্বাসক নিজের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এক গণহত্যা চালায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর।
যার ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (বর্তমানে পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন। ৪৫ মিনিটের একটি সাক্ষাৎকারে নর্থইস্ট নিউজকে তিনি এ তথ্য দেন। এত শহীদের রক্তের আত্নত্যাগ ছাসমাজ বৃথা হতে দেয়নি। তারা শেষ পর্যায় “দফা এক, দাবি এক” আন্দোলনের মাধ্যামে বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতন ঘটায়। বাংলাদেশ ২য় বারের মত পায় স্বাধীন জীবন। তাই কবি বলেছে- “স্বাধীনতা তুমি বিজয়ের মালা; রক্তে ফোটা কুড়ি, ত্যাগের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা রক্ত স্নাত নুড়ি।”
এখন একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জন হলে সে দেশের কাজ সমাপ্ত হয় না বরং দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা তাদের সম্মুখ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। যে জেনারশন জেড’র মাধ্যমে ১৯দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন একটি স্বাধীন-চেতনার দেশ পেল বটে, তবে তারা আসলে কি চায়? এটি একটি মুখ্য বিষয় এই দেশের আগামী উন্নয়নের জন্য। অতীতে ভয়াল রাজনৈতিক কালো ছায়া এই দেশের ছাএসমাজ ও সাধারণ মানুষের মনে তৈরি করেছে ভয়, হিংসা, বিভেদ। তাই বর্তমানে জেনারেশন জেড এর মধ্য হতে বের হয়ে এক অন্য জনবান্ধব বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করে। এর জন্য গত ৬ আগস্ট হতে এদেশের জাতি আরেকটি অপরূপ বাংলাদশের সুবাস দেখতে পেল। যেখানে এই তরুণ ছাএ সমাজ দেশের জাতীয় সংসদ পরিষ্কার, গনভবন সহ রাষ্ট্রের প্রতিটি অবকাঠামতে পরিষ্কার, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন। বাজার মনেটরিং সহ রাস্তার পাশের দেয়াল গুলোতে আগামীর বাংলাদেশের প্রতিলিপি কেমন হবে তা ফুটিয়ে তুলছে। জেনারেশন জেড নতুন বাংলাদশকে নিয়ে কি প্রত্যাশা করছে তা নিম্নে দেওয়া হল:
১) একটি নতুন জনবান্ধব দেশ। ২) বাক স্বাধীনতা। ৩) দূর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ৪) নতুন তারুণ্য নির্ভররাজনৈতিক দল। ৫) রাজনৈতিক বায়ুমুক্ত ক্যাপস ৬) সিন্ডিকেড মুক্ত বাজার ও বানিজ্য সংস্থা।
আশা করি ২০২৪ যে গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যামে ছাত্র সমাজ এক নতুন বাংলাদেশ সূর্য ছিনিয়ে এনেছে তা জাতি স্বর্ন অক্ষরে স্মরণ রাখবে চিরকাল। আর এই স্বাধীনতার জন্য যারা তাদের প্রাণ ত্যাগ করেছে তাদের জাতি জাতীয় বীর হিসেবে আগামী বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য হবে অনুপ্রেরণা। তাই বাংলার জেনারেশন জেড কে স্বাধীনতা রক্ষায় থাকতে হবে সর্বদা সজাগ। যাতে এই বাংলায় আর কোন স্বৈরাচারের মসনদ তৈরী না হয়।
Leave a Reply