সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

টেকনাফে অভিযানে অপহৃত ১০ জন উদ্ধার

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ২.০৩ পিএম

জাফর আলম, কক্সবাজার 

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় অপহৃত ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়। তবে অপহরণকারীদের ধরা যায়নি। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মছিউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে টেকনাফ থানা, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্র, হোয়াইক্যং ফাঁড়ির ৫০ জন পুলিশ একযোগে টেকনাফের জাহাজপুরা পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি অভিযানে যোগ দেন র‍্যাব সদস্যরা।

একপর্যায়ে পুরো পাহাড়টি ঘিরে ফেলা হয়। অভিযানের মুখে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত ১০ জনকে পাহাড়ে ছেড়ে দিয়ে অপহরণকারী চক্রটি পালিয়ে যায়। পরে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়। এখন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অপহরণকারীদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান চলমান রয়েছে।টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ১০ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। অপহৃতদের পরিবারের সদস্যরা কোনো তথ্য দেননি। এমনকি একাধিকবার চেষ্টার পরও লিখিত অভিযোগ দেননি।

স্বজনরা তথ্য না দেওয়ায় পুলিশ তাদের কাজে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। তবে সবকিছু মাথায় রেখে অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া ১০ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।ওসি জানান, লিখিত অভিযোগ বা স্বজনরা পুলিশকে সরাসরি কোনো তথ্য না দিলেও তাদের কাছে আটজনকে অপহরণের তথ্য ছিল। এর মধ্যে বুধবার দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাংয়ের ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ি এলাকায় ছয়জন এবং আগের দিন মঙ্গলবার হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে দুজন অপহরণের তথ্য ছিল। কিন্তু অভিযানে উদ্ধার হলেন ১০ জন।

অন্য দুজনকেও বুধবার বিকালে পুটিবুনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়।উনচিপ্রাং থেকে অপহরণের শিকার ও উদ্ধার ছয় ব্যক্তি হলেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের করাচিপাড়ার লেদু মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া(১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ(১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাাইফুল(১৪), শহরের আলীর ছেলে ফরিদ(৩৫), নাজির হোছনের ছেলে সোনা মিয়া(২৪) ও মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা(৩২)।পুটিবুনিয়া থেকে অপহরণের শিকার ও উদ্ধার দুই ব্যক্তি হলেন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং উত্তরপাড়ার আলী আকবরে ছেলে ছৈয়দ হোসেন (৩৩) ওরফে বাবুল এবং রইক্ষ্যং দক্ষিণপাড়ার কালা মিয়া ওরফে লম্বা কালুর ছেলে ফজল কাদের(৪৮)।

হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত ও উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন রোজার ঘোনার আমির হোসেনের ছেলে অলি আহমদ(৩২) এবং কম্বনিয়ার ফিরুজের ছেলে নুর মোহাম্মদ(১৭)। তাদের মঙ্গলবার অপহরণ করা হয়।এর আগে হোয়াইক্যং ইউপি সদস্য মো. শাহজালাল বলেছিলেন, বুধবার সকালে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাংয়ের ছয় বাসিন্দা স্থানীয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় গরু চরানো ও চাষের কাজ করতে যান। পরে তারা দুপুর গড়িয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি।

দুপুর ২টার পর অপহরণকারী চক্রের একজন অজ্ঞাত স্থান থেকে একজনের বাবার মোবাইলে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এতে অপহৃতদের মারধরের চিৎকার শোনানো হয়। এ বিষয়ে পুলিশকে জানালে অপহৃতদের মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।বুধবার বিকালে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পুটিবুনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু চরাতে গিয়ে ছৈয়দ হোসেন ও ফজল কাদের নামে আরও দুজন অপহৃত হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী।

স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, সকালে গরু চরাতে গিয়ে তার ইউনিয়নের আরও দুই বাসিন্দা নিখোঁজ হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার পরও তারা বাড়ি ফেরেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুজনও অপহরণের শিকার হয়েছে।টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, অপহরণ বন্ধে পুলিশের জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন, তা না হলে এটা বন্ধ করা যাবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024