পৃথিবীতে মানুষকে সফল হতে হলে সব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জন করতে হয়। নেতা মানে কখনও এই নয় যে সে অন্যকে নেতৃত্ব দিবে। নিজের প্রতিটি কাজের নেতাও নিজেকে হতে হয়। এ কারণে জীবনে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নেতৃত্বের গুনগুলো নিজের জীবনা চারণের মধ্যে নিয়ে আসা। মানুষ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সফল মানুষের জীবন বিশ্লেষণ করে নেতৃত্বের নানান গুন বা আচরণ নির্ধারণ করেছে।
সারাক্ষণে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে তেমনি কিছু স্মার্ট নেতা হবার গুনাবলী ।
নেতাকে শক্তি ধরে রাখতে জানতে হয়
যে কোন কাজেই শক্তি ব্যয় হয়। শক্তি ব্যয় করা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু শক্তিকে ধরে রাখা বা সঞ্চিত রাখার ক্ষমতা অর্জন করা যথেষ্ট কৌশল , বুদ্ধিমত্তা ও প্রজ্ঞার বিষয়। নেতাকে এই শক্তি ধরে রাখার যাবতীয় কৌশল অর্জন করতে হয়।
কোন প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র পরিচালন বা যে কোন যুদ্ধের জন্যে শক্তি ধরে রাখা ও তা প্রয়োজনে ব্যয় করা সব থেকে প্রজ্ঞাবান নেতার কাজ। নেতা হিসেবে, সমর বিশেষজ্ঞ হিসেবে এমনকি চিন্তক হিসেবে হিটলার মোটেই নিম্ম মানের ছিলেন না। অর্থনীতি থেকে সমরনীতি সবখানে তাঁর যথেষ্ট সাফল্য ছিলো। তারপরেও তিনি কেন এভাবে হেরে গেলেন? তাঁর এই হেরে যাবার মূল কারণ তিনি শক্তি সঞ্চিত রাখেননি। অন্যদিকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বিজয়ের মূল নায়ক চার্চিলের মূল শক্তি ছিলো এখানেই- তিনি কখনও কখনও পিছু হটেছেন কিন্তু শক্তি সঞ্চিত রেখেছেন।
আর এই শক্তি ধরে রাখতে হলে নিজেকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হয়। বুঝতে হয় নিজের ও নিজের সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের শক্তি। এবং সেভাবেই নেতাকে পথ চলতে হয়। যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের নেতা তোজো খুবই শান্ত মাথার নেতা ছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর সমর্থের থেকে অনেক বেশি দূর চলে গিয়েছিলেন বলেই জাপানকে পরাজিত হতে হয়।
মানুষ অনেক কিছুকে নিয়তি বলে। আসলে নিয়তি বলে কিছু নেই। নিয়তি হচ্ছে তাই যা মানুষ নিজে তৈরি করে। তাই ভালো কোন কিছু তৈরি করতে হলে অবশ্যই শক্তি’র প্রয়োজন। যেমন এই যে আমাদের পৃথিবী তৈরি হয়েছে, এর ভেতরে প্রচন্ড আগ্নেয়গিরির শক্তি আছে বলেই। আর সেই শক্তি এ পৃথিবীত পাহাড়ও তৈরি করেছে, সাগরও তৈরি করেছে।
নেতার অভ্যন্তরের শক্তি বা আগ্নেয়গিরি হচ্ছে তার ভেতরের উদ্ভাবনী ক্ষমতা। এই ক্ষমতা তিনি যেমন রাতারাতি অর্জন করতে পারবেন না তেমনি তা রাতারাতি বা অহেতুক ব্যয় করা উচিত নয়। তারপরেও তাকে পৃথিবীকে বা প্রকৃতিকে লক্ষ্য করতে হবে। পৃথিবী যেমন তার অভ্যন্তরের শক্তি পাহাড়, সমুদ্র, নদী, জীব- জানোয়ার সকলকে ভাগ করে দিয়েছেন। নেতাকেও তেমনি তার শক্তি তার চারপাশের মানুষ বা তার দল অথবা টিমকে ভাগ করে দিতে হবে। শেখাতে হবে সে শক্তি প্রয়োগের সঠিক উপায়। কখনও কখনও তাকে নিজেও যেমন শিখতে হবে তেমনি শেখাতে হবে- কত কম শক্তি ব্যয় করে কত বেশি সাফল্য অর্জন করা যায়।
Leave a Reply