সারাক্ষণ ডেস্ক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত মাননীয় উপাচার্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও প্রখ্যাত চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক আজ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ অপরাহ্নে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এর কাছ থেকে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেন। পরে তিনি বিশ্বিবিদ্যালয়ের বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান। এরপর তিনি শহীদ ডা. মিল্টন হলে উপস্থিত সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীবৃন্দের উদ্দেশ্যে কথা বলেন।
মিল্টন হলে কথা বলার সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, হল প্রোভোস্ট অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান, অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, অধ্যাপক ডা. এইচএম জহিরুল হক সাচ্চু, অধ্যাপক ডা. একেএম সালেক, অধ্যাপক ডা. মোঃ শওকত কবীর, অধ্যাপক ডা. তোহিদ মো. সাইফুল হোসেন দিপু, স্বাচিপ নেতা সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, স্বাচিপ এর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকবৃন্দ, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের আগমন উপলক্ষে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা নানা ধরণের আয়োজন করেন। গত ১১ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ বাংলা ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ২৭ ফাল্গুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রখ্যাত চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হককে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তাঁকে আগামী চার বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
রোগীদের কাছে ননী ডাক্তার নামে খ্যাত জনপ্রিয় চিকিৎসক নবনিযুক্ত উপাচার্য শহীদ ডা. মিল্টন হলে দেয়া তার বক্তব্যের শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের শহীদ সকল সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং উপাচার্য হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন। একই সাথে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের ঘোষণা দিয়েছেন।
গুণী শিক্ষক অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক বলেছেন, রোগীসহ দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো। বিশ্বমানের ক্যাজুয়ালিটি ইমার্জেন্সি বিভাগ গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিরাট আশা নিয়ে আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের মধ্যে একটা বেস্ট ইনস্টিটিউট করার লক্ষ্যে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেটা বাস্তবায়নে আমি সবরকমের চেষ্টা করব।
বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ নবনিযুক্ত মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক বলেছেন, জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দেশের রোগীসহ মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে সেই প্রত্যাশা পূরণে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো। চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও গবেষণা তিনটি বিষয়কেই প্রাধান্য দেয়া হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মাল্টিডিসিপ্লিনারি চিকিৎসার সুযোগ। তার সাথে যুক্ত হয়েছে সুপার স্পেশালিটি। এখানে সব ধরণের চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল চিকিৎসক বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সব ধরণের চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। কোনো রোগী যেনো প্রতারিত না হয় এবং কোনো রোগী যেনো চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে এশিয়া অঞ্চলের একটি উন্নতমানের রেফারেল হসপিটাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বিশ্বমানের হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধি করবো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিশ্বমানের ক্যাজুয়ালিটি ইমার্জেন্সি বিভাগ গড়ে তোলা হবে। যাতে করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের উপর রোগীর চাপটা একটু কমে। একই সাথে চিকিৎসকদের আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশ্বমানের ফ্যাকাল্টিদের স্বল্পমেয়াদে ট্রেনার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করা হবে। যাতে করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা জ্ঞানে, প্রজ্ঞায়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে দেশেই রোগীদেরকে বিশ্বমানের চিকিৎসা দিতে সক্ষম হন।
বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক এর পিতা হলেন মরহুম মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এবং মাতা মরহুমা আফজালুন্নেছা। ব্যক্তি জীবনে তিনি ৫ সন্তানের পিতা। তাঁর সন্তানদের মধ্যে রয়েছেনÑপুত্র দীন মোহাম্মদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মোহাম্মদ নূর, ফার ইস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক রিসাত মোহাম্মদ নূর, মেডিকেল স্টুডেন্ট জাদিত মোহাম্মদ নূর, মেডিকেল স্টুডেন্ট তৌসিফ মোহাম্মদ নূর এবং একমাত্র কন্যা স্টুডেন্ট জারা দীন নূর। তাঁর সহধির্মিনী হলেন মিসেস রোজিনা হক। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী মধ্যপাড়া ও মিরাপাড়া গ্রামে। তিনি ১৯৫৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে এমবিবিএস, এফসিপিএস (চক্ষু), রয়েল আলেকজান্দ্রা হাসপাতাল, পেইজলী, ইউকে থেকে চক্ষু বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিংগাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, নেপাল ইত্যাদি দেশে আন্তর্জাতিক সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি ১৯৮১ সালে চকুরীতে যোগদান করেন। এ সময় তিনি অধ্যাপক (চক্ষু), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা, অধ্যাপক (চক্ষু), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পরিচালক ও অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা, লাইন ডাইরেক্টর, ন্যাশনাল আই কেয়ার (জাতীয় অন্ধ নিবারণ কর্মসূচী), মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সাথে শিক্ষকতাসহ দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক তাঁর মহৎ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মতিন স্বর্ণপদক-১৯৯৮, অঈঙওঘ অধিৎফ-২০১০, অচঅঙ অধিৎফ-২০১৩, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ডা. আলিম মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক-২০১৬ লাভ করেছেন।
অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বচিপ) এর আজীবন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতেন। হাইস্কুলে পড়াকালীন সময়ে আইয়ুব বিরোধী এবং মুনায়েম খান বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আস্থাশীল হয়ে ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ডে সাথে জড়িত ছিলেন। ঢাকা কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় প্রায়শঃই মরহুম শ্রদ্ধেয় শহীদ শেখ কামালের নেতৃত্বে সভা, সেমিনার ও মিছিলে সম্পৃক্ত ছিলেন। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে লেখাপড়া অবস্থায় ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন এবং জাতির পিতার নির্মম হত্যাকান্ডের পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে ১৯৭৭-৭৮ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ শখার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন নবগঠিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও জামায়াত পন্থী শিবিরের নানা চাপ ও অত্যাচারের সম্মুখে ছাত্রলীগকে টিকিয়ে রাখতে জীবনবাজি রেখে কাজ করেছেন।
বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশমত সকল স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকান্ডে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। তিনি চেয়ারম্যান, দীন মোঃ আই হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার, সোবহানবাগ, ঢাকা, চেয়ারম্যান, দীন মোঃ ফাউন্ডেশন, ঢাকা, প্রতিষ্ঠাতা, দীন আই হসপিটাল, কিশোরগঞ্জ, প্রতিষ্ঠাতা, সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হসপিটাল, টিকাটুলি, ঢাকা, চেয়ারম্যান, গভর্নিং বডি, বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ, আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ), বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির আওয়ামী পন্থী প্যানেলের নির্বাচিত প্রাক্তন সভাপতি ও আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ একাডেমী অব অফথালমোলজির আওয়ামী পন্থী প্যানেলের দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি ও আজীবন সদস্য, ফ্যাকাল্টি অব অফথালমোলজীর আজীবন সদস্য, ফ্যাকাল্টি অব অফথালমোলজী বিসিপিএস এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, আজীবন সদস্য, অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জনস এর আজীবন সদস্য, লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা লালবাগ এর প্রাক্তন সভাপতি ও আজীবন সদস্য, পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক হোসেনশাহ ঈদগাহ কমিটির সভাপতি, প্রতিষ্ঠাতা, দীন ভিশন সেন্টার, হোসেন্দী বাজার, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ এবং প্রতিষ্ঠাতা, দীন ভিশন সেন্টার, করগাও বাজার, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন এবং সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে দক্ষিণ কিশোরগঞ্জের মানুষের বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত রয়েছেন। এলাকার সকলস্তরের মানুষের কাছে তিনি যেমন জনপ্রিয় তেমনি তাঁর কর্মকান্ডের প্রতি রয়েছে অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক সমাজসেবামুলক কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী উপজেলার দরিদ্র রোগীদের নিয়মিত চক্ষু চিকিৎসা, মেগা আই ক্যাম্প ইত্যাদি পরিচালনা করছেন। গত ৫ বৎসরে বিনামূল্যে প্রায় ৩০০০ জন চক্ষু রোগীকে লেন্স সংযোজন করে চোখের অপারেশনের ব্যবস্থা করেছেন। চিকিৎসক হওয়ার পর প্রায় ৪০ বৎসর ধরে পাকুন্দিয়া, কটিয়াদী, হোসেনপুরসহ কিশোরগঞ্জের জনসাধারণের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন। তার পরিচালিত সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হসপিটাল, টিকাটুলি, ঢাকায় দক্ষিণ কিশোরগঞ্জের দরিদ্র ছানী জনিত অন্ধ রোগীদের এনে তার তত্ত্বাধানে বিনামূল্যে অপারেশন প্রকল্প বিগত ৪ বৎসর ধরে চলমান ছিল। প্রতি মাসেই প্রায় ৩০-৪০ জন ছাত্রীজনিত অন্ধ রোগীর চোখের অপারেশনের ব্যবস্থা করা হতো। বর্তমানে কিশোরগঞ্জে স্থাপিত দীন আই হসপিটালে দীন মোঃ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে চোখের অপারেশন, চশমা বিতরণ ও ঔষধ প্রদান প্রকল্পের কাজ আরো বৃহৎ পরিসরে চালু করা হয়েছে। পাকুন্দিয়া, কটিয়াদী তথা দক্ষিণ কিশোরগঞ্জের প্রতি মাসেই প্রায় ১০০-১২০ জন ছানী জনিত অন্ধ রোগীদের চোখের অপারেশনের মাধ্যমে লেন্স সংযোজন করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী উপজেলায় স্থানীয়ভাবে ৩টি ভিশন সেন্টার স্থাপন করে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র এলাকার জনসাধরণকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসাসহ ছানি অপারেশন করে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো দীন ভিশন সেন্টার, হোসেন্দী বাজার, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ, দীন ভিশন সেন্টার, পুলেরঘাট বাজার, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ এবং দীন ভিশন সেন্টার, করগাও বাজার, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ। পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী উপজেলার অত্যন্ত সফলভাবে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে চোখের রোগীদের জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ১০,০০০ পাওয়ার চশমা বিতরণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধু টাস্ট্র পরিচালিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশিয়ালাইজড হাসপাতাল, আশুলিয়া, সাভারে প্রতিষ্ঠলগ্ন থেকে অদ্যাবধি প্রতি শনিবার সারা দিনব্যাপী চক্ষু রোগীদের পরামর্শসহ ব্যবস্থাপত্র প্রদান ও অপারেশন করা হচ্ছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, গোপালগঞ্জে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পরবর্তী প্রায় চার বৎসর এক/দুই মাস অন্তর বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। বর্তমানে হাসপাতালের সকল ধরণের উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত বেসরকারী মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মহৎ জীবনের অধিকারী গুণী মানুষ অধ্যাপক ডা. দীন মোঃ নূরুল হক এর জন্মস্থান পাকুন্দিয়া ও পাশ্ববর্তী কটিয়াটি উপজেলার প্রায়ই বিভিন্ন সময় যাতায়াত করেন এবং সকল স্তরের জনগণের সাথে মতবিনিময় করেন। এলাকার জনগণের সাথে চিকিৎসা সংক্রান্ত, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্নসমস্যার সমাধানের ব্যাপারে সহযোগীতা করে আসছেন। তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে পবিত্র ও শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারী হিসেবে মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করে বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের মানুষের আশা-ভরাসার প্রতীক সম্পূর্ণ সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শতভাগ অনুগত থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তাঁর কর্মময় জীবনের বাকীটা সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, সেবা ও গবেষণাকে এগিয়ে নেয়াসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রীক উন্নয়নসহ এদেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
Leave a Reply