বিশেষ প্রতিনিধি: আজ বাংলা নববর্ষ। বাঙালি এই নববর্ষ তার ঘরের আঙিনায় কবে থেকে পালন করে আসছে তা নিয়ে নানান মত রয়েছে। তবে আজ বাংলাদেশের নাগরিক বাঙালি তার নিজের শেকড় থেকে তুলে আনা নববর্ষ পালনকে যে নাগরিক রূপ দিয়ে পালন করছে এটা যে ষাটের দশক থেকে শুরু হয়েছে তা নিয়ে কারো কোন সন্দেহ নেই।
ওয়াহিদুল হক
এই বাংলা নববর্ষকে গ্রামের আঙিনা থেকে শহরের আধুনিকতায় নিয়ে, তার সঙ্গে শুধু জাতীয়তাবাদের চেতনা নয় একটি আধুনিক চেতনা যোগ করা হয়। যে চেতনা সব মানুষকে এক করে। যার মর্মমূলে রয়েছে মূলত বিশ্ব মানব ও তার স্রষ্ট্রা প্রকৃতিকে উর্ধে তুলে ধরা। প্রতিটি ভূখন্ডের মানুষ এমনকি করে তার নিজ সংস্কৃতি’র বিবর্তন ঘটিয়ে মানবতা ও মানব সভ্যতা সব সময়ই এগিয়ে নিয়েছে।
সনজিদা খাতুন
বাংলাদেশ নামক এই ভূখন্ড ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তানের একটি অংশ হলেও মানব সভ্যতার এই সাংস্কৃতিক ধারাকে এখানে প্রবাহিত করা ওই পাকিস্তান আমলে যাদের চেষ্টায় শুরু হয়েছিলো; আজ বাঙালি যেমন নববর্ষকে উদযাপন করবে, নিঃসন্দেহে তাদেরকেও স্মরণ করবে।
একটি দেশের মানুষের নব জাগরণ, একটি ভূখন্ডের মানুষের সামনের দিকে এগিয়ে চলার পথে বহু মানুষের বহু অবদান থাকে। যেমন বহু নদীর স্রোতধারা তৈরি করে একটি সমুদ্র, যা সব সময়ই সৃষ্টির ঢেউয়ে মত্ত থাকে।
বাঙালির এই নববর্ষের স্রোতবাহিকে তৈরিতে তেমনি অনেকেরই অবদান আছে। তবে যাদের চিন্তায় ও ঐকান্তিক চেষ্টায় এর যাত্রা শুরু আজ বাঙালি যেমন তার নববর্ষকে পালন করবে, তেমনি স্মরণ করবে শ্রদ্ধা জানাবে তাদেরকে।
বাঙালির এই আধুনিক রূপের নববর্ষ উদযাপন ও যার ভেতর দিয়ে আধুনিক সভ্যতার পথ তৈরি’র ধারা শুরু হয়েছে এর সঙ্গে নানাভাবে অনেকেই জড়িত ও নানা পথকে এগিয়ে নিলেও, সব সংগ্রামের যেমন নেতা থাকে এ সংগ্রাম সেদিন শুরু হয়েছিলো আপদমস্তক আধুনিক ও মানবতাবাদী মানুষ ওয়াহিদুল হক আর সনজিদা খাতুনের নেতৃত্বে।
ওয়াহিদুল হক আজ আর পৃথিবীতে নেই। সনজিদা খাতুন এখনও আমাদের মাঝে আছেন।
আজ বাঙালির এই নববর্ষ পালনের দিনে বাঙালি একবার হলেও স্মরণ শ্রদ্ধা জানাবে এই দুই মানব মনোজগত পরিবর্তনকারী নেতৃত্বকে। বাংলা নববর্ষে বাঙালি মাত্রই একটি ফুল তাই সে বৃক্ষের বৃন্তে ফোঁটা হোক আর হৃদয়ের বৃন্তে ফোঁটা হোক, অবশ্যই নিবেদন করবেন তাদের উদ্দেশ্যে।
Leave a Reply