শিবলী আহম্মেদ সুজন
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের খুলনা জেলার অতি পরিচতি নদী।নদীটির দৈর্ঘ ৯কিলোমিটার এবং এর গড় প্রস্থ ৪৮৬ মিটার। বর্ষার মৌসুমে রুপসা নদীর পানি স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেড়ে যায়। রুপসা নদী দিয়ে ছোট বড় সকল প্রকার নৌযান চলাচল করে থাকে।
ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নড়াইল জেলার ধোন্দা গ্রামের জনৈক লবন ব্যবসায়ী রূপচাঁদ সাহা নৌকা দিয়ে যাতায়াতের জন্য একটি খাল কাটেন। রুপচাঁদ সাহার নাম অনুসারে ঐ খালটির নাম হয় রুপসা। তিনি ভৈরব থেকে খাল কেটে কাজীবাছার সাথে মিলিয়ে দেয়। পরে ভৈরব নদীর প্রচন্ড প্লাবণের ফলে সেই ছোট খালটি নদীতে পরিনিত হয়।
যে নদী এক পর্যায়ে কবি জীবনানন্দ দাশকেও আকর্ষণ করেছিলো তার প্রিয় ধানসিড়ি নদীর মতো। তিনি ধানসিড়ি নদীর তীরে ফিরে আসতে চাইলেও রূপসাকে তার থেকে দূরে রাখতে পারেননি। ধানসিড়ির পাশে স্থান পেয়েছে রূপসা নদী। “…হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে; / রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছেঁড়া পালে/ ডিঙা বায়:
এভাবেই ছোট খাল রূপসা শুধু বড় নদী নয় বাংলা সাহিত্য ও জীবনেও স্থান নিয়েছে। হয়ে উঠেছে দেশের নৌ-পথের অন্যতম নদী। আর সেই ছোট খাল নদী হয়ে পশুর সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি বড় নদী। খুলনা জেলার অন্যতম নদীপথ। রূপসার পাড়েই জাহাজ-নির্মাণ কারখানা ও রূপসা শিল্পাঞ্চল। তার ওপরে এখন বড় সেতু । রূপসা মূলত দক্ষিণে মংলা বন্দরের কাছে পশুর নামে প্রবাহিত হয়ে ত্রিকোন ও দুবলা দ্বীপ দুটির ডান দিক দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
ঐতিহাসিক মোঃ নুরুল ইসলাম এই নদীটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে আলোচনাকালে লিখেছেন, খুলনা জেলা জজেরবাংলোর বিপরীত দিকে ভৈরব মোড় নিয়ে আলাইপুরের দিকে প্রবাহিত। এই বাঁকের পূবদিকে কোননদীপথ ছিল না। খুলনা শহর, নৈহাটি নিহালপুর ছিল একই ভূখণ্ডে। এখন নৈহাটি আর খুলনার মধ্যেদিয়ে প্রবাহিত রূপসা নদী।
Leave a Reply