শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন

সতত যে কপোতাক্ষ বয়ে চলেছে সাগরের দিকে 

  • Update Time : শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪, ৬.১০ পিএম

শিবলী আহমেদ সুজন

বাংলা ভাষায় প্রথম সনেট লেখেন মাইকেল মধুসূদন দও সে কথা সকলেই জানেন।তাঁর বিখ্যাত সনেট গুলোর একটি কপোতাক্ষ নদ। যাতাঁর নিজ বাড়ির পাশে দিয়েই বহমান। সেই কপোতাক্ষ নদের কোথা থেকে উৎপত্তি ও কোথায় শেষ।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর শৈশব কাটিয়েছিলেন নদীর তীরেই। পরে তিনি যখন প্যারিসে চলে যান তখন, মাতৃত্বের স্নেহের টানে লিখেছিলেন তার বিখ্যাত সনেট কপোতাক্ষ নদ-

কপোতাক্ষ নদ

মাইকেল মধুসূদন দত্ত

সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে।

সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে;

সতত (যেমতি লোক নিশার স্বপনে শোনে

মায়া-যন্ত্রধ্বনি) তব কলকলে ;

জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!

— বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?

দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্ম-ভূমি-স্তনে!

আর কি হে হবে দেখা?–যত দিন যাবে,

প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে

বারি-রূপ কর তুমি; এ মিনতি, গাবে

বঙ্গজ-জনের কানে, সখে, সখা-রীতে

নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেম-ভাবে

লইছে যে তব নাম বঙ্গের সঙ্গীতে!

এই যে নদী মা্ইকেলকে এতটা উতলা করেছিলো। যে নদীর মাঝে সে তার জননী ও জম্মভূমিকে দেখতে পান। যে নদীর জলধ্বনি তিনি বাংলার সঙ্গীতের সঙ্গে যোগ করেন, এই নদী আসলে কি খুব বড় নদী? বাস্তবে দেশের মূল বড় নদীদের মধ্যে আসে না। তবে এই কপোতাক্ষ নদ বাংলাদেশের দক্ষিণ -পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের অন্যতম বড় নদী। নদীটি চুয়াডাঙ্গা,সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, যশোর ও খুলনা জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কপোতাক্ষ নদীটির দৈর্ঘ্য ২৩৮ কিলোমিটার (১৪৮ মাইল), গড় প্রস্থ ১৫০ মিটার (৪৯০ ফুট), গভীরতা ৩.৫ থেকে ৫ মিটার (১১.৫ থেকে ১৬.৪ ফুট)। এই নদ ৮০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত। খুলনার অপর নদী ভৈরবের মত কপোতাক্ষের উওরাংশ মজে যাচ্ছে ।

ঝিকরাগাছা থানার উওর পর্যন্ত কচুরি কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি হলেও ত্রিমোহিনীতে আছে প্রাণ। সাগরদাঁড়ি অবধি জোয়ারভাটা খেলে। এখানে পানিতে লবণের পরিমান কম। কিন্তু শিবসার প্রবাহের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে পানিতে লবণের পরিমান বেড়ে যায়।ফলে তখন আর এ নদীর পানিতেকষিকাজ করা সম্ভব হয় না। যশোর জেলার চৌগাছার কাছে তাহিরপুরে ভৈরব ও কপোতাক্ষ দুইটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পাইকগাছা উপজেলার পাশে দিয়ে শিবসায় গিয়ে মিলিত হয়েছে ।

বর্তমানে কপোতাক্ষ নদীটি মৃত প্রায়। স্থানীয় মানুষের অসচেতনা ও প্রভাবশালীদের দ্বারা নদীর তীরবর্তী জায়গা পলিমাটি দিয়ে ভরাট করে দখল করা হয়েছে। কপোতাক্ষ নদীটি খননের কাজ করার জন্য সরকার পদক্ষেপ নেয়।  নদী খননের জন্য ২৬২ কোটি টাঁকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়ে তিনবছরে সেই খনন কাজে টাঁকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩৮ ভাগ।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024