পৃথিবীতে মানুষকে সফল হতে হলে সব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জন করতে হয়। নেতা মানে কখনও এই নয় যে সে অন্যকে নেতৃত্ব দিবে। নিজের প্রতিটি কাজের নেতাও নিজেকে হতে হয়। এ কারণে জীবনে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নেতৃত্বের গুনগুলো নিজের জীবনা চারণের মধ্যে নিয়ে আসা। মানুষ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সফল মানুষের জীবন বিশ্লেষণ করে নেতৃত্বের নানান গুন বা আচরণ নির্ধারণ করেছে।
সারাক্ষণে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে তেমনি কিছু স্মার্ট নেতা হবার গুনাবলী ।
নেতাকে মন্দকে মোকাবিলা করতে জানতে হবে
পৃথিবীতে মানুষ শুধু ভালো হবে বা মানুষকে ভালো করার চেষ্টা করলেও সে ভালো হবে- এ কখনও সত্য নয়। ডিএনএ জনিত সমস্যায় হোক, আর মস্তিকের নিউরণ জনিত সমস্যায় হোক বা তার বেড়ে ওঠার পরিবেশ জনিত সমস্যায় হোক- পৃথিবীতে খারাপ মানুষ থাকবেই। কিছু মানুষকে কখনও ভালো মানুষের পরিণত করা যাবে না।
এই খারাপ মানুষ মোকাবিলা করার কৌশল বা যোগ্যতা নেতাকে অবশ্যই অর্জন করতে হবে।
পৃথিবীর অন্যতম মহাকাব্য মহাভারতের মূল চরিত্র শ্রীকৃষ্ণ মনে করেছিলেন, শক্তিধর, দুর্জন রাজাই শুধুই খারাপ মানুষ। তাই পৃথিবী থেকে তাদেরকে নিমূর্ল করতে পারলে পৃথিবী ভালো হবে। তার জন্যে তিনি যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু মৃত্যুকালে ঠিকই জেনে গিয়েছিলেন, পৃথিবিতে দুবৃত্ত আছে। তার রাজ্যেও আছে। এবং তারা এখনও নারীদের লুঠ করছে।
আবার এও সত্য দুর্জন যে শুধু নারী লুন্ঠন বা ক্ষতিকর কাজের প্রতীক হয়ে থাকে তাও নয়।
সিজারের সিনেটেরাও শিক্ষিত ও সদাচারী বেশে দুর্জনও খুনী ছিলেন।
তাই সদাচারী মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষিত, অশিক্ষিত সব শ্রেনীর মধ্যে খারাপ মানুষ থাকবে। আবার অনেক সময় মানুষ মনে করে খুব ভালো পিতা- মাতার সন্তান- সব সময়ই তার পিতা- মাতার আদর্শের কথা বলে। অতত্রব সে ভালো মানুষই হবে। এও সত্য নয়। কারণ, মানুষ ইনডিভিজুয়াল। পিতা ও মাতা তার জম্মের কারণ হলেও মানুষ মূলত তার নিজস্ব বেড়ে ওঠার পরিবেশ, তার মস্তিষ্কের নিউরণ ও তার নিজেকে চর্যার ভেতর দিয়ে তৈরি হয় সে কেমন মানুষ হবে।
নেতাকে তাই কখনও কোন মানুষের শিক্ষা, তার পিতা মাতার পরিচয় বা তার সাধারণ আচরণ দেখে বিশ্বাস করলে চলবে না সে কেমন। নেতাকে মানুষের আচরণের মধ্য দিয়ে তাকে চেনার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
খারাপ মানুষ যদি ক্যাটাগরির দিক থেকে ক্যানসারের সমান হয়- তাহলে দ্রুত তা অপারেশন করে বাদ দিতে হবে। নইলে সে নেতার দল বা টিমের সামগ্রিক রক্ত দূষিত করবে।
খারাপ মানুষ যদি এমন হয় যে তার যতটুকু খারাপ তা তার একটা বড় অসুখের মতো। তাহলে নেতা তার চিকিৎসার দ্বায়িত্ব নিতে পারেন। অর্থাত্ তাকে ভালোর পথে আনার চেষ্টা করতে পারেন। যদি সফল না হন, তখন নেতাকে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আর খারাপ মানুষ যদি আসলে কোন ভুলের কারণে সে খারাপ হয় তাহলে তার সংশোধনের দ্বায়িত্ব নেতার।
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ। কিন্তু নেতার ক্ষেত্রে এ কথা শতভাগ সঠিক হিসেবে নেমে নেয়া উচিত হবে না। নেতা মানুষের ওপর বিশ্বাস হারাবেন না, কিন্তু সব সময়ই মানুষকে নিরিক্ষার ভেতর রাখবেন।
Leave a Reply