বেকা রথফেল্ড

আমি আমার সমস্ত লেখা, এই লেখাটিও, আমার বিশ্বস্ত সঙ্গীর সঙ্গে লিখি। সাধারণত, সে আমার পাশে বসে, আমার লেখা দেখার সময় থাকে; কখনও কখনও সে আমার কোলে ঘুমায়। আজ, হয়তো এই সপ্তাহের বইটি তার কাছে অন্যদের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে, সে উচ্ছ্বসিতভাবে আবির্ভূত হয়েছে, ডাস্টবিন থেকে একটি অর্ধেক খাওয়া বারিটো বের করে আনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

আমার এই সঙ্গী হল কাফকা, একটি দুই বছরের ইংলিশ শেফার্ড, যে আমার সমস্ত কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে — এমন একটি কুকুর যার ভালোবাসা এতই বিশুদ্ধ, এতই নিঃস্বার্থ যে, আমি তা বুঝে উঠতে পারি না। ইংলিশ শেফার্ড প্রায়শই “ইংলিশ শ্যাডো” নামে পরিচিত, কারণ তারা তাদের মালিকের পাশে ছায়ার মতো থাকে। কাফকা এই প্রজাতির কিংবদন্তি আনুগত্যের প্রকৃষ্ট উদাহরণ: সে সর্বত্র আমাকে অনুসরণ করে, এমনকি বাথরুমেও সাহস করে প্রবেশ করে — যেখানে সে তার গোসলের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সহ্য করেছে — আমার সঙ্গে থাকার জন্য। সে যেকোনো প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে ভালোবাসার প্রাণী যা আমি কখনও দেখেছি। “কুকুর আমাদের চেয়ে আরও অর্থপূর্ণ জীবনযাপন করে,” দর্শনবিদ ও কুকুরপ্রেমী মার্ক রোল্যান্ডস তার নতুন বইয়ে লিখেছেন, এবং আমি সহজেই বুঝতে পারি কেন তিনি এমনটি মনে করেন।

‘দ্য ওয়ার্ড অব ডগ: হোয়াট আওয়ার ক্যানাইন কম্প্যানিয়নস ক্যান টিচ আস অ্যাবাউট লিভিং এ গুড লাইফ’ বইটি কিছুটা স্মৃতিকথা এবং প্রচুর পরিমাণে কগনিটিভ সায়েন্সের সংমিশ্রণ হলেও এটি মূলত একটি দর্শনগত রচনা। রোল্যান্ডস তার জীবনের বহু প্রিয় কুকুরদের স্মরণ করে তাদের জগৎ সম্পর্কে একেবারে ভিন্ন এবং উচ্ছ্বাসপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যেই কুকুরের জ্ঞানীয় ক্ষমতা নিয়ে অনেক বই রয়েছে — যেমন ‘দ্য জিনিয়াস অব ডগস’ এবং ‘হোয়াট ইটস লাইক টু বি এ ডগ’ — কিন্তু এটি এমন একটি বই যা আমি পড়েছি যেখানে কুকুরের কাজের স্বাধীনতা এবং নৈতিকতার প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

রোল্যান্ডস কেবল জানতে চান না যে আমাদের কুকুররা ভালোবাসা অনুভব করতে পারে কি না (হ্যাঁ), কিংবা অপরাধবোধ অনুভব করতে পারে কি না (সম্ভবত না, যেমন কাফকা তার বারিটো চুরির চেষ্টার বিষয়ে নির্লজ্জ এবং নির্বিকার ছিল), বরং জানতে চান তারা স্বাধীন কি না (তার মতে হ্যাঁ) এবং তারা নৈতিক কি না (তার এবং আমার মতে, জোরালোভাবে হ্যাঁ)।

তবে তারা আমাদের মতো একই ধরনের স্বাধীনতা ও নৈতিকতার অধিকারী নয়। তাই রোল্যান্ডসের বইটি কুকুর ও তাদের গুণাবলী উদযাপনের পাশাপাশি মানব প্রকৃতির একটি অনুসন্ধানও। তিনি বলেন, “দ্য ওয়ার্ড অব ডগ কোনো বই নয় যা মানবজাতির সুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করে; বরং এটি তার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে।”

অন্য কথায়, এটি আমার আগের অস্পষ্ট ধারণাটি নিশ্চিত করে যে কাফকা আমার চেয়ে অসীম ভালো।

সক্রেটিস বিখ্যাতভাবে বলেছিলেন, ‘অপরীক্ষিত জীবন বাঁচার যোগ্য নয়,’ কিন্তু কুকুররা এই কথার পাশাপাশি অনেক প্রচলিত জ্ঞানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। রোল্যান্ডস প্রতিফলনের বিষয়ে লিখেছেন, যা “চিন্তা নিয়ে চিন্তা করা, চিন্তা নিয়ে চিন্তা করার চিন্তা করা এবং সেই চিন্তার চিন্তক নিয়ে চিন্তা করা।” এটি আত্ম-পরীক্ষার ভিত্তি হলেও বিভাজনের কারণও। এটি “প্রতিফলিত জীবকে প্রতিফলক এবং প্রতিফলনের বিষয় এভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত করে।” কুকুরেরা, এর বিপরীতে, তাদের কর্মকাণ্ডে অখণ্ড এবং অখণ্ডিত উচ্ছ্বাস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

অনেক পণ্ডিত, যেমন ফ্রান্স ডি ওয়াল এবং চার্লস ডারউইন, যুক্তি দিয়েছেন (বা প্রায়শই ধরে নিয়েছেন) যে নৈতিকতার জন্য প্রতিফলনের প্রয়োজন। ডারউইন তার ‘দ্য ডিসেন্ট অব ম্যান’ বইয়ে লিখেছিলেন, “একজন নৈতিক প্রাণী হলেন তিনি, যিনি তার পূর্ববর্তী কাজ এবং তার প্রেরণাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে সক্ষম।” তাহলে আমরা কুকুরদের নিঃস্বার্থতা এবং বীরত্বের কৃতিত্ব সম্পর্কে কী বলব — যেমন সেই ডোবারম্যান যে একটি মানব শিশুকে সাপের হাত থেকে রক্ষা করেছিল, বা সেই রাস্তার কুকুর যে তার লুকানো জায়গায় খাবার নিয়ে গিয়ে অন্য প্রাণীদের সঙ্গে ভাগ করেছিল?

রোল্যান্ডসের মতে, এই নিবেদনমূলক কাজগুলো আমাদের প্রথাগত নৈতিকতার ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সম্ভবত সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ নয়, বরং সহমর্মিতা নৈতিক অর্জনের মূল চাবিকাঠি। কুকুরদের আমাদের জুতার অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করার জৈবিক প্রমাণ রয়েছে — যদি প্রচুর ঘটনাসূচক ডেটা যথেষ্ট না হয়। রোল্যান্ডসের কুকুররা যখন তাকে মাঝরাতে তার শিশুর কান্নার বিষয়ে জানানোর জন্য জাগিয়ে তুলত, তখন এটি স্পষ্ট যে তারা তার অসুবিধার কারণে উদ্বিগ্ন ছিল।

রোল্যান্ডস দেখিয়েছেন যে কুকুরেরা প্রায়শই আমাদের চেয়ে ভালো নৈতিক এজেন্ট। তারা কখনও এমন প্রতিশ্রুতি দেয় না যা তারা রক্ষা করতে পারে না; তারা কখনও চিন্তা করে না কেন তারা গাছে চড়ছে বা হতাশ হয় না যে শিকারের চেয়ে ফ্রিসবির প্রতি তাদের আকর্ষণের কারণ নেই। তারা কখনও সিদ্ধান্তহীনতা, হতাশা বা অস্তিত্বগত সংকটে পড়ে না।

‘দ্য ওয়ার্ড অব ডগ’ মূলত কুকুর এবং তাদের বিশেষ জীবনের এক মজাদার এবং হৃদয়গ্রাহী অনুসন্ধান। দর্শনবিদ এবং ঔপন্যাসিক আইরিস মুরডক একবার লিখেছিলেন, “ভালোবাসা হল এমন কিছুর অত্যন্ত কঠিন উপলব্ধি, যা নিজের থেকে ভিন্ন।” কুকুরেরা নিজেদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন — হয়তো এই কারণেই আমরা তাদের এত ভালোবাসি।