ইসরায়েলের দাবি: যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইরানের হামলা

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, তিনি তেহরানে নতুন করে সামরিক হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার দাবি, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তবে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর ইরান কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেনি। এই সংস্থা রিপোর্টটিকে ‘মিথ্যা’ বলেও দাবি করেছে।

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ও তার পরবর্তী ঘটনা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প Truth Social-এ আগেভাগেই ঘোষণা দেন: “যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। অনুগ্রহ করে এটি লঙ্ঘন করবেন না।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ১৩ জুন ইরানের ওপর যে আকস্মিক হামলা চালানো হয়েছিল, তার মূল লক্ষ্য ছিল দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম এবং ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করা, এবং সে লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।

নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইরানের পারমাণবিক হুমকি দমনে সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ জানায়।”

ইরানের অবস্থান: পাল্টা হামলা স্থগিতের ঘোষণা

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, ইসরায়েল যদি ভোর ৪টা থেকে আক্রমণ বন্ধ রাখে, তবে ইরানও আর পাল্টা হামলা চালাবে না।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর অর্থনীতি ও বাজারের প্রতিক্রিয়া

যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং তেলের দাম দ্রুত হ্রাস পায়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘোষণায় যুদ্ধের অবসান এবং উত্তেজনা কমার আশা তৈরি হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা হামলার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি অংশগ্রহণের দুই দিনের মাথায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।

ইসরায়েলের স্পষ্ট বার্তা: “যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাব দিতেই হবে”

প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন, তা ইরান প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করেছে। এই অবস্থায় তেহরানের শাসকগোষ্ঠীর সম্পদ ও সন্ত্রাসী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এই ঘটনা যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা ও স্থায়িত্ব নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ তৈরি করেছে। যুদ্ধে ১২ দিনের সংঘর্ষের পর এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এসেছিল, যা এখন নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।