মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

 যে কোন মৃত্যুই দু:খজনক ,আমরা লজ্জিত – হাইকোর্ট   

  • Update Time : বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪, ১১.৫৭ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, এসব মৃত্যু  আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক।পাশাপাশি ৬সমন্বয়ককে কোন আইনে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আদালত।বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়েগঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার এমন মন্তব্য করেন।

শুনানি শেষে আজ বুধবার আবারও শুনানির জন্য দিন রেখেছেন হাইকোর্ট। এদিন শুনানিতে আওয়ামী লীগপন্থি বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিতছিলেন। রিটের সমথর্নে অনেক আইনজীবীও। রিটের ঘোর বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা বলছেন, মিডিয়া কাভারেজ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই রিট করা হয়েছে। সংক্ষুব্ধরা কেই আসে নি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন,  কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কারী তাদের আদালতে আনতে একটা নির্দেশনা চেয়েছিল এবং তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একটা আদেশ চেয়েছিল।

দেড় পাতার একটা পিটিশন, যার মধ্যে কিছু নেই। কোনো স্বীকারোক্তিমূলক কিছু নেই, সেখানে তারা যে শুনানি করছেন, বাইরের জিনিস নিয়ে যা শুনানি করার এখতিয়ার নেই।আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা ও কোটাবিরোধী আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে এ রিট করা হয়। রিটের শুনানিতে আদালত বলেন,‘সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না।’

এসময় আইনজীবী অনীক আর হক নারায়ণগঞ্জে গুলিতে বাসার ছাদে ছয় বছরের শিশু রিয়ার মৃত্যু নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন। পরে একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এসব মৃত্যুই আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক।’ অনীক আর হক বলেন, ‘সঠিক। একটা জীবন যখন চলে যায়, তখন কোনো পক্ষ থাকে না। ছয় বছরের শিশু…।’আইনজীবীর উদ্দেশে এ সময় আদালত বলেন, ‘আমার কোর্টে ইমোশনাল বিষয় অ্যাড্রেস করবো না। আমরা খুব লজ্জিত।’শুনানি শেষে রিটকারী আইনজীবীরা বলেন, আন্দোলন দমনে সরাসরি গুলি কোনোভাবেই করতে পারে না পুলিশ।

দিতে হবে প্রত্যেকটি গুলির ব্যাখ্যা। ডিবি অফিসে কী হয়েছে তা জানতে ৬ সমন্বয়ককে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন,আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য এসেছি। কারও বাপের প্রয়োজনে এখানে আসিনি।এর আগে সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি এ রিট দায়ের করেন। এ রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

ওই রিটে কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়।এতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি তাজা গুলির ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাজা গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তথাকথিত নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রিটে সে মর্মেও রুল চাওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ (এসকে)মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী।এছাড়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, নুরুল ইসলাম সুজন, আজহার উল্লাহ ভূইয়া ও শাহ মঞ্জুরুল হক শুনানিতে অংশ নেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024