মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

প্রকৃতিবিদের কাহিনী (কাহিনী-১১)

  • Update Time : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪, ৮.০০ পিএম

পিওতর মান্তেইফেল

ক্ষিপ্ত সীলমাছ

একবার ক্যাম্পিয়ান সাগরের উপকূলস্থ দেরবেন্তের কাছে আশ্চর্য এক ব্যাপার ঘটেছিল। সে ঘটনা আমায় বলেন স্থানীয় বৈজ্ঞানিক কর্মীদের একজন।

একটা লোক ঠিক করে সমুদ্রে চান করবে, কিন্তু সাঁতার জানত না সে। জলে নামার আগে মোটরের চাকার টিউব সে ভালো করে পাম্প করে। তাতে জলে ডোবার ভয় ছিল না, হাওয়া-ভরা বেষ্টনী মানুষকে চমৎকার ভাসিয়ে রাখে জলের ওপর। হঠাৎ সমুদ্রের গভীর থেকে ভেসে ওঠে একটা ক্যাম্পিয়ান সীলমাছ। ক্ষিপ্ত দর্শনে তা আক্রমণ করে স্নানার্থীকে। মরীয়া হয়ে সে ঘুসি চালায়, আর নিজের দেহের চেয়েও বেশি করে সে রক্ষা করে রবারের টিউবটাকে।

‘বাঁচাও!.. বাঁচাও!..’ শোনা গেল চিৎকার।

অকুস্থলের অল্প দূরে দৈবাৎ একটা জেলে নৌকো ছিল, চিৎকার শুনে জেলেরা জোরে নৌকো চালিয়ে আসে। এসে পৌঁছয় তারা ঠিক সেই মুহূর্তে যখন পুরো পাম্প-করা টিউবটাকে সীলমাছ কামড়ে ছিড়ে ফেলে। অভাগা স্নানার্থীকে জেলেরা নৌকোয় টেনে তোলার সময় না পেলে বেচারা নিঃসন্দেহেই তলিয়ে যেত। লোকটার পায়ে প্রচন্ড প্রচণ্ড কামড়। প্রচুর রক্ত ক্তরছিল তা থেকে।

লোকটাকে বাঁচিয়ে জেলেটি দাঁড় দিয়ে ঘা মারে সীলমাছটার ওপর। জন্তুটা ডুব দেয়, কিন্তু ফের ভেসে ওঠে তীরের অদূরে এবং লাফিয়ে পড়ে সৈকতে। সেখানেই ছুরি মেরে শেষ করা হয় তাকে।

ক্যাম্পিয়ান সীলমাছের এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণ কী, তা জিজ্ঞেস করা হয় আমায়। মানুষের ওপর সীলমাছের হামলার কথা আমি আগে কখনো শুনি নি, তাই আমিও জিজ্ঞেস করলাম বড়ো বড়ো বিশেষজ্ঞদের, বিভিন্ন সমুদ্রের সীলমাছ নিয়ে যাঁরা গবেষণা করছেন। আমার মতনই এদের কেউই শোনেন নি যে জলে মানুষকে আক্রমণ করেছে সীলমাছ। তখন আমি টের পেলাম যে দেরি করা চলে না, টেলিগ্রাম পাঠালাম: ‘সালমাছটা ক্ষেপা। অবিলম্বে ইঞ্জেকশন নিন।’

কিন্তু সীলমাছকে কামড়াতে পারে অন্য কোন ক্ষিপ্ত জীব? অনুমান করা যেতে পারে যে সীলমাছকে কামড়েছে কোনো ক্ষেপা শেয়াল, আর সেটা ঘটেছে, যখন ডাঙায় জবুথবু সামুদ্রিক জীবটা রোদ পোয়াচ্ছিল তীরে উঠে। এ অনুমান খুবই সত্য হওয়া সম্ভব, কেননা এই জায়গায় হিংস্র শেয়াল বিস্তর, আর ক্ষেপা শেয়ালও কম নয়।

বলা দরকার যে কোনো জন্তুর ক্ষিপ্ততা শুরু হয় অন্য কোনো ক্ষেপা জন্তুর কামড়ে। ক্ষেপা ধেড়ে ইদুর, ই’দুর, বেড়ালের কামড়ের ঘটনা কম নেই। ক্ষেপা চড়ুইয়ের হামলার কথাও শোনা গেছে। এমন কথাও শুনেছি যে, বিচ্ছিন্ন খাঁচায় কয়েক বছর কাটাবার পর ই’দুরের কামড়ে ক্ষেপে গেছে নেকড়ে।

ক্ষিপ্ত জন্তুদের উচ্ছেদ করলে এই ভয়াবহ রোগটা লোপ পাবে সর্বত্রই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024