মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন

বন্যার পানি নামবে কবে? পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কতটা প্রস্তুত অন্তর্বর্তী সরকার?

  • Update Time : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪, ১২.২৪ এএম

তারেকুজ্জামান শিমুল

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে সৃষ্ট বাংলাদেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যাদুর্গত অঞ্চলগুলোয় গড়ে প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার পানি কমেছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

খোয়াই, মনু এবং ফেনী নদীর তিনটি পয়েন্টে পানির স্তর ইতোমধ্যেই বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এছাড়া কুশিয়ারা নদীর যে তিনটি পয়েন্টে বর্তমানে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্তত দু’টিতে রোববার রাতের মধ্যে পানি কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা করছেন তারা।

এদিকে, পানি বেড়ে যাওয়ায় রোববার সকালে রাঙামাটির কাপ্তাই বাঁধের সবকটি গেট খুলে দিয়ে বিকেলে সেগুলো আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তবে, কাপ্তাই বাঁধের সবকটি গেট খুলে দেয়ার ফলে কর্ণফুলী নদীতে পানি বাড়লেও নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে, সোমবার বিকেলের মধ্যে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে চট্টগ্রামের বন্যাদুর্গত এলাকার কোথাও কোথাও অবস্থার অবনতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতিতে কিছুটা ধীরগতি আসলেও অবনতির শঙ্কা খুব একটা দেখছেন না তারা।

কিন্তু বন্যার যে পানি মানুষের বাড়িঘরে উঠেছে, সেটি পুরোপুরি নামতে কতদিন লাগবে? বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের অন্তর্বর্তী সরকারই-বা কতটুকু প্রস্তুতি?

নিরাপদ স্থানের খোঁজে বন্যা দুর্গতরা

রোববারের পরিস্থিতি কী?

গত শুক্রবার থেকে বন্যার পানি কমার যে ধারা দেখা যাচ্ছিলো, রোববারও সেটি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

কর্মকর্তারা বলছেন, গত তিন দিনে ভারতের ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। অন্যদিকে, শুক্রবারের পর বাংলাদেশের বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতেও বড় ধরনের বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়নি।

“সবমিলিয়ে পানির চাপ অনেকটাই কমে গেছে। নতুন করে চাপ বাড়ার কোনো আশঙ্কাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ধলাই, গোমতী, ফেনী, মুহুরীসহ যেসব নদীতে ঢলের পানি ঢুকে দু’পাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, সেগুলোতেও পানি কমতে শুরু করেছে।

“গত যেখানে নয়টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিলো, রোববার সেটি কমে ছয়টিতে দাঁড়িয়েছে,” বলছিলেন মি. রায়হান।

খোয়াই, মনু এবং ফেনী নদীর তিনটি পয়েন্টে পানির স্তর কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে।

তবে সিলেট ও সুনামগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে এখনও পানি বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে, গোমতী, মনু ও মুহুরি নদীর তিনটি পয়েন্টে।

এর মধ্যে কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার থেকে কমে ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।

তবে পানি কমলেও এখনো ঘরবাড়ি ফিরতে পারছেন না বন্যা দুর্গতরা। এখনো সাড়ে তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় পৌনে তিন লাখ মানুষ।

কলাগাছের ভেলা দিয়েই অনেকে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন

মাঠের চিত্র কেমন?

এদিকে, পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বাড়ি ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে দুর্গত এলাকা ঘুরে জানিয়েছেন বিবিসি বাংলার সংবাদদাতারা।

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া বাজারের একটি আশ্রয়ণকেন্দ্র ঘুরে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা মুকিমুল আহসান জানিয়েছেন যে, সেখানে এখনও চার হাজারেরও বেশি মানুষ অবস্থান করছেন।

তারা ত্রাণ সহায়তা পেলেও বাজার থেকে যারা দূরে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা কোনো ধরনের সহায়তা পাননি বলে জানিয়েছেন।

তবে ফেনীর কিছু এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফিরে আসায় অনেকে এখন তাদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।

আত্মীয়দের খোঁজে কেউ কেউ দুর্গত এলাকায়ও যাচ্ছেন।

একই অবস্থা দেখা গেছে কুমিল্লাতেও। তবে গোমতী নদীর তীরবর্তী কিছু কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

আর নোয়াখালীর বেশ কয়েক জায়গায় পানি সামান্য বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ত্রাণের অপেক্ষায় ফেনীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্গত মানুষের ভীড়

অন্যদিকে, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও মীরসরাইয়ে পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে অনেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

তবে হাটহাজারিসহ যেসব এলাকায় এখনও পানি বেশি রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন।

পানি নামতে শুরু করলেও বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে খাবারের পাশাপাশি তীব্র পানি সংকট দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে, গরু-ছাগলসহ অন্যান্য পশু-পাখিও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

সরকারি তথ্যমতে, গত কয়েকদিনের বন্যায় উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূ্র্বাঞ্চলের অন্তত ১১টি জেলা কবলিত হয়েছে, যাতে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ফেনী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম জেলার মানুষ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে বন্যায় এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামে পাঁচ জন, কুমিল্লায় চার জন, নোয়াখালীতে তিন জন, কক্সবাজারে তিন জন, ফেনীতে একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

রোববার সকালে কয়েক ঘণ্টার জন্য কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট খুলে দেওয়া হয়

কাপ্তাই ঘিরে উদ্বেগ

পানি ছাপিয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় রাঙামাটিতে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেটের সবক’টি খুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে আটটার পরে গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়।

তবে, খুলে দেয়ার ছয় ঘন্টা পর সবক’টি গেট আবারও বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে ওই এলাকায় কোথাও প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের সকালে সাংবাদিকদের বলেন, “এর মাধ্যমে নয় হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।”

এদিকে, এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়।

“এমনেই নদীর যে অবস্থা, তার উপর কাপ্তাই বাঁধের পানি যোগ হতে থাকলে নদীতীরের মানুষ যে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, সেটার গ্যারান্টি দিবে কে?,” বিবিসি বাংলাকে বলেন আনোয়ারুল ইসলাম নামের এক বাসিন্দা।

তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য বলছেন, বাঁধের পানির কারণে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

কাপ্তাই উপজেলার চেয়ারম্যান মাফিজুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গত ৬৫ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই পানিতে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। স্থানীয়দের অন্য কোনো দুর্ভোগেও পড়তে হবে না।”

বন্যায় গবাদী পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে

ভারি বর্ষণ যেসব স্থানে

সোমবার বিকেলের মধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

“ইতোমধ্যেই কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে, যা সোমবারও অব্যাহত থাকতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

এর মধ্যে রোববার সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময়ে মোংলায় সর্বোচ্চ ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মি. মল্লিক।

এর বাইরে, খুলরায় ৬১ মিলিমিটার, বরিশালে ৩৭ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ৪১ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রামে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

“তবে উপকূলীয় এলাকা থেকে বৃষ্টির এসব পানি যেহেতু উপরের দিকে (উজানে) আসবে না। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উপর খুব একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই আশা করা যায়,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. মল্লিক।

অন্যদিকে, পানি উজানে না ঢুকলেও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির ক্ষেত্রে ধীরগতি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

“নতুন করে বেশি বৃষ্টিপাত হলে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান এবং চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা ধীরে উন্নতি হবে। ফলে ওইসব এলাকায় বন্যার পানি তুলনামূলক কিছুটা বেশি সময় ধরে থাকতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

এদিকে, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাইরে ঢাকাতেও বৃষ্টিপাত হতে দেখা গেছে। রোববার কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের আরও কয়েক জেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এরপর সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসতে পারে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ফেনীর একটি আশ্রয়নকেন্দ্র

পানি থাকবে কতদিন?

সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে পানি নামতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।

“কারণ মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী কয়েকদিন ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম রয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান।

আকস্মিক বন্যার ক্ষেত্রে সাধারণ যেভাবে দ্রুত পানি নামতে দেখা যায়, এবার সেটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

“এবার আমরা পানি কমার ক্ষেত্রে কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করছি,” বলছিলেন মি. রায়হান।

কিন্তু পানি সরতে দেরি হওয়ার কারণ কী?

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, “পূর্ণিমা তিথির মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে সাগরে জোয়ার আরও বেড়ে যায়। এতে নদ-নদীর পানি নিষ্কাশনের যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, সেটি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।”

এছাড়া নদীর নাব্যতা সংকটকেও দায়ী করেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে পানি সরতে দেরি হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে পানি নামতে কতদিন লাগতে পারে?

“আগামী আট থেকে দশদিনের মধ্যে পানি পুরোপুরি নেমে যাবে বলে আমরা আশা করছি,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. রায়হান।

এছাড়া পানি নেমে যাওয়ার পরও দুর্গত এলাকার কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বন্যার পানি থেকে বাঁচতে মানুষের মতো প্রাণিরাও আশ্রয়ের খোঁজ করছে

সরকারের প্রস্তুতি কেমন?

সাধারণত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দুর্গত এলাকার ক্ষয়-ক্ষতি পূরণের পাশাপাশি রোগ-ব্যাধি মোকাবেলা করা সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

এবারও সেটির ব্যতিক্রম হবে না বলে বেশ কিছুদিন ধরে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমন একটি সময় এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হচ্ছে যখন বাংলাদেশের দায়িত্ব রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকারের হাতে।

বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা?

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।”

“কাজেই বন্যার পরে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ সামনে আসে এবং সেটি কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়, সেসব আমরা জানি। অতীত অভিজ্ঞতার সঙ্গে এবারের ফিল্ডের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে আমরা বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যাবতীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি,” বলেন মি. হাসান।

ডায়েরিয়া, কলেরাসহ পানিবাহিত রোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যেই প্রায় আটশো মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সরকার।

টানা বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বাংলাদেশে বন্যা দেখা দিয়েছে

“এর বাইরে, আরও কিছু টিম সামনে তাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। পাশাপাশি স্থানীয় হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের ডাক্তার-নার্সরা আক্রান্তদের সেবা দিবেন,” বলেন মি. হাসান।

দুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

“আক্রান্ত জেলাগুলোর প্রশাসনকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে,” বলছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব।

সেইসঙ্গে, গবাদী পশু-পাখির খাবারে যেন সংকট না পড়ে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

“আর মানুষের ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ ইত্যাদির ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো পুননির্মাণে প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা সরকার করবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সচিব মি. হাসান।

বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার দেশের ৪০টির বেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে তাদেরকেও একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মি. ইউনূস।

বিবিসি নিউজ বাংলা

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024