মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

জীবন আমার বোন (পর্ব-৯৯)

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২.০০ পিএম

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘খবর শুনেছিস কিছু?’ ইয়াসিন ঠোঁট কামড়ে জিগ্যেশ করে।

‘কই আর–‘

মুরাদ বললে, ‘ও খবর রাখতে যাবে কোন দুঃখে, আমরা তো আছিই মাইনে করা চাকর; এসে এসে ওকে শুনিয়ে যাবো। ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামবে বুঝলি?’

‘তুই জানলি কি ক’রে?’

‘ইকবাল হলের ছেলেরা কানাঘুষো করছে। হল ছেড়ে চ’লে যাচ্ছে ছেলেরা।’

এখানে আসার একটা ছুতো খাড়া করার জন্যে রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামাচ্ছে মুরাদ সে ভাবলো। বললে, ‘নেহাত গুজব–‘

মুরাদ চিন্তিত মুখে- জিগ্যেশ করলে, ‘ঠিক করেছিস কিছু?’

‘না!’

‘ইচ্ছে করলে বান্দুরায় গঞ্জালেসের ওখানে উঠতে পারিস। কাছাকাছি হয়। গঞ্জালেস নিজেই প্রস্তাব দিয়েছে!’

‘এখনো ওরকম হুটোপুটি করার সময় আসেনি।’

মুরাদ অপ্রতিভভাবে বললে, ‘ব’লে-কয়ে আসবে না কি সব? সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে শেষে পঞ্জাবি। একটা কিছু হুলস্থল শুরু হ’য়ে গেলে তখন আর পালাবার পথ খুঁজে পাবি না, আমরাও কেউ পায়ে ধ’রে সাধাসাধি করতে আসবো না–

খোকা বললে, ‘ভাগার কথা উঠছে কেন, লড়বে কারা? গাছপালা রাস্তাঘাট লাইটপোস্ট। আজকের পৃথিবীর স্বাধিকার প্রমত্ত বলবান মানুষেরা ছাদে কেবল ফ্ল্যাগ উড়িয়ে একচোটে সবাই যদি ভাগোয়াট হ’য়ে যায় সংগ্রাম চালাবে কারা? ভক্কিবাজি।’

‘যারাই লড়ুক, তারা অন্তত তোর পাঠশালায় পড়া কেউ নয়। তোদের মতো ঝিনুকে দুধগেলাদের নিয়েই যতো ল্যাঠা।”

ইয়াসিন বললে, ‘জয়দেবপুরের গোলাগুলির খবর তো শুনেছিসই।’ ‘শুনেছি, কিন্তু ভিতরের রহস্যটা বুঝিনি।’

‘অতো বুঝতে গেলে রাত ফরসা হয়ে যাবে’ ইয়াসিন বললে, ‘নিজের মাথা বাঁচাতে চাইলে মানে মানে একদিকে কেটে পড়ো এখনই। তলে তলে অনেক কিছুই ঘাটে গিয়েছে, জান নিয়ে টানাটানি শুরু না হ’য়ে যায় শেষ পর্যন্ত।”

‘রঞ্জুর কথা ভেবেছিস?’ গম্ভীর গলায় জিগ্যেশ করলে মুরাদ।

‘ভেবেছি–

‘কি ঠিক করলি?’

‘ওর কোথাও যাবার ইচ্ছে নেই।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024