শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৯)

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬.২৭ পিএম

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

দেবদেবী, ঈশ্বর প্রভৃতি

মায়াদের ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে রয়েছে এক সুন্দর লোকায়ত ধারণা। এই ধর্মীয় বিশ্বাস এবং লোকায়ত ধারণার ছাপ বা লক্ষণ আমরা দেখতে পাই তাদের দেবদেবীর নানা রূপ-এর মধ্যে। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভাল মায়া জনজাতির মধ্যে সর্বোচ্চ স্তর এবং মানের দেবতা হলেন হুনাব বা ‘হুনাব কু’।

এবং তারা বিশ্বাস করে এই হুনাবই প্রথমে এই পৃথিবীর জন্মদাতা। এই হুনাব আবার সৃষ্টি করেছিলেন ‘ইতজামনা’ (Itzamana)। এই ইতজামনা হলেন দেবতাদের মধ্যে প্রধান। অনেকটা প্রধান সচিবের মত। মায়া-ভাষায় ‘হুনাব কু’ (Hunab Ku)-এর অর্থ হল চিরকালীন ঈশ্বর।

এবার গোটা শব্দটি কেটে কেটে অর্থ করলে এমনও বলা যায় হন (Hun)-এর অর্থ হল কে (one) এবং আব (ab)-এর অর্থ হল হবার অবস্থান (state of being)। এবং কু (Ku)-এর অর্থ হল ঈশ্বর বা দেবতা। আবার ইতিহাসের অনুসন্ধান আমাদের জানাচ্ছে যে কু (Ku) হলেন পলিনেসিয়াবাসীদেরও দেবতাগণের একজন।

এই নামের মিল থেকে প্রত্নঐতিহাসিকগণ মনে করেন পলিনেসিয়া এবং মায়ারা হয়ত একসময় একই ধর্মে বিশ্বাস করতেন। ‘কু’ সম্পর্কে আবার একথা্য বলা হয় এই ‘কু’ হয়ত মূলত কোনো ব্যক্তির আকার নয়। বরং এই ‘কু’ হলেন একটি নীতি।

কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির আকার নয়। তাই ‘কু’ যতটা মানুষের মনে উচ্চারিত হন তার থেকে বেশি উচ্চারিত হন তারই ছেলে ইতজামনা। এক্ষেত্রে হিন্দুসমাজ-এর কথাও বিশেষভাবে খেয়াল করা দরকার যে হিন্দুধর্মেও মোটামুটিভাবে একই দেবতা কাজ করে।

এদের নাম হল ব্রহ্ম (Brahma)। ব্রহ্ম এমন উচ্চমার্গীয় স্তরে বিরাজ করেন যে তাঁকে সাধারণ মানুষ সচরাচর দৈনিক পূজার সঙ্গী করেন না। এই ক্ষেত্রে ব্রহ্মা হল একটি আদর্শগত নীতি। কোনো ব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ নন। হিন্দুশাস্ত্র সাধারণভাবে বিশ্বাস করে যে এই ব্রহ্মাণ্ডে (Satchitananda) সৎচিন্তা আনন্দ রয়েছে।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৮)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৮)

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024