১১:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
জাপানে বাড়ছে ভাল্লুক আতঙ্ক: নিরাপত্তা জোরদারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ বইমেলায় ৩০০ শিশুর লেখক অভিষেক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৩) শাহজালালসহ দেশের সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি আল-ওথমান মসজিদের পুনঃস্থাপন কাজ শেষের পথে, রমজানের আগেই পুনরায় খোলা হবে ভুলভাবে উপস্থাপিত বক্তব্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা ফখরুল দিল্লিতে হামলার ছক তৈরির অভিযোগে ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করল ঢাকা ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১২ জন সূত্রাপুরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুনে আতঙ্ক হামাস যোদ্ধাদের আটকে থাকা পরিস্থিতি গাজা চুক্তির অগ্রগতি ব্যাহত করছে

ইশকুল (পর্ব-৩৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
  • 58

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

উনি চুপ করলেন আর রাগে মুখটা কালো করে একবার মা-র দিকে তাকালেন। মা এতক্ষণ দু-চোখ টেবলক্লথের দিকে নামিয়ে ঠায় বসে ছিলেন, সারাক্ষণ একটিও কথা বলেন নি। সৈনিকটি এবার উঠে হেরিং মাছের থালার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন। আর এতক্ষণে হঠাৎ সান্ত্বনা দেয়ার মতো নরম সুরে বললেন: ‘নাঃ, সত্যি, এতক্ষণ কী নিয়ে যে বকবক করছি! কিছু মনে করবেন না…

সময়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। বোতলে আর কি কিছু আছে বৌঠান?’ চোখ না-তুলেই মা ওঁর গ্লাসে গন্ধওয়ালা উষ্ণ মদ আরও কিছুটা ঢেলে দিলেন।

সেদিন সারা রাত পার্টিশনের ওধার থেকে মা-কে কাঁদতে শুনলুম। থেকে থেকে শুনতে পাচ্ছিলুম বাবার চিঠির পাতা ওল্টানোর আওয়াজ। পরে পার্টিশনের ফাঁক দিয়ে দেখতে পেলুম হালকা সবুজেটে আলোর আভা। আন্দাজ করলুম, ছোট্ট তেলের কুপির নিচে বসানো যিশুর মূর্তির সামনে মা নিশ্চয়ই প্রার্থনা করছেন। বাবার ওই চিঠিটা আমাকে আর দেখান নি মা। কী যে লিখেছিলেন বাবা আর মা-ই বা সে রাত্রে কেন কাঁদছিলেন তা সে-সময়ে জানতে পারি নি।

পরদিন সকালে সৈনিকটি চলে গেলেন।

রওনা হবার আগে আমার কাঁধ চাপড়ে দিয়ে, যেন আমি ওঁকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি তারই জবাব দেয়ার ভঙ্গিতে, বললেন:

‘তাতে হয়েছে কি, খোকা.. তুমি তো এখনও বাচ্চা। আমি নিশ্চয় বলছি, তোমরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দেখবে, ঢের বেশি!’

বিদায় নিয়ে পা ঠুকে-ঠুকে চলে গেলেন উনি। সঙ্গে নিয়ে গেলেন ওঁর ক্রাচজোড়া, আয়োডোফর্মের গন্ধ, ওঁর উপস্থিতির দরুন আমাদের মধ্যে যে-মনমরা-ভাব দেখা দিয়েছিল তা, আর ওঁর কাশির দমক-মেশানো হাসি, আর তিতকুটে সব কথা।

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে বাড়ছে ভাল্লুক আতঙ্ক: নিরাপত্তা জোরদারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ

ইশকুল (পর্ব-৩৮)

০৮:০০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

উনি চুপ করলেন আর রাগে মুখটা কালো করে একবার মা-র দিকে তাকালেন। মা এতক্ষণ দু-চোখ টেবলক্লথের দিকে নামিয়ে ঠায় বসে ছিলেন, সারাক্ষণ একটিও কথা বলেন নি। সৈনিকটি এবার উঠে হেরিং মাছের থালার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন। আর এতক্ষণে হঠাৎ সান্ত্বনা দেয়ার মতো নরম সুরে বললেন: ‘নাঃ, সত্যি, এতক্ষণ কী নিয়ে যে বকবক করছি! কিছু মনে করবেন না…

সময়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। বোতলে আর কি কিছু আছে বৌঠান?’ চোখ না-তুলেই মা ওঁর গ্লাসে গন্ধওয়ালা উষ্ণ মদ আরও কিছুটা ঢেলে দিলেন।

সেদিন সারা রাত পার্টিশনের ওধার থেকে মা-কে কাঁদতে শুনলুম। থেকে থেকে শুনতে পাচ্ছিলুম বাবার চিঠির পাতা ওল্টানোর আওয়াজ। পরে পার্টিশনের ফাঁক দিয়ে দেখতে পেলুম হালকা সবুজেটে আলোর আভা। আন্দাজ করলুম, ছোট্ট তেলের কুপির নিচে বসানো যিশুর মূর্তির সামনে মা নিশ্চয়ই প্রার্থনা করছেন। বাবার ওই চিঠিটা আমাকে আর দেখান নি মা। কী যে লিখেছিলেন বাবা আর মা-ই বা সে রাত্রে কেন কাঁদছিলেন তা সে-সময়ে জানতে পারি নি।

পরদিন সকালে সৈনিকটি চলে গেলেন।

রওনা হবার আগে আমার কাঁধ চাপড়ে দিয়ে, যেন আমি ওঁকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি তারই জবাব দেয়ার ভঙ্গিতে, বললেন:

‘তাতে হয়েছে কি, খোকা.. তুমি তো এখনও বাচ্চা। আমি নিশ্চয় বলছি, তোমরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দেখবে, ঢের বেশি!’

বিদায় নিয়ে পা ঠুকে-ঠুকে চলে গেলেন উনি। সঙ্গে নিয়ে গেলেন ওঁর ক্রাচজোড়া, আয়োডোফর্মের গন্ধ, ওঁর উপস্থিতির দরুন আমাদের মধ্যে যে-মনমরা-ভাব দেখা দিয়েছিল তা, আর ওঁর কাশির দমক-মেশানো হাসি, আর তিতকুটে সব কথা।