০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পের রবার্ট মুলারের সাবেক আইন ফার্মকে ঘিরে নতুন আইনি আক্রমণ

  • Sarakhon Report
  • ১২:৫৮:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
  • 24

সারাক্ষণ রিপোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ওয়াশিংটনভিত্তিক আইন ফার্ম উইলমারহেল (WilmerHale)-কে তাঁর প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন। এর আগে ট্রাম্প পারকিনস কোই (Perkins Coie)কোভিংটন অ্যান্ড বার্লিং (Covington and Burling) এবং পলওয়েইস (Paul, Weiss)-সহ একাধিক বড় আইন ফার্মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, এসব প্রতিষ্ঠান তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

নির্বাহী আদেশ ও এর প্রভাব

  • নিরাপত্তা ছাড়পত্র স্থগিত: উইলমারহেলের নিরাপত্তা ছাড়পত্র সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
  • চুক্তি বাতিলের নির্দেশ: ফেডারেল সংস্থাগুলোকে ফার্মটির সঙ্গে থাকা সব সরকারি চুক্তি বাতিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
  • প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: উইলমারহেলের কর্মীদের ফেডারেল ভবনে প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

ট্রাম্পের বক্তব্য

ট্রাম্পের ভাষ্য, উইলমারহেল তাদের পেশাগত মানদণ্ড থেকে সরে গিয়ে “সুস্পষ্ট পক্ষপাতমূলক” কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাঁর দাবি, ফার্মটি রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দিয়ে তাঁকে “পুরস্কৃত” করেছে, যিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে কথিত রাশিয়া হস্তক্ষেপের তদন্তে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। ট্রাম্পের মতে, এই তদন্ত ছিল একটি রাজনৈতিক স্বার্থসাধনের হাতিয়ার।

উইলমারহেলের প্রতিক্রিয়া

উইলমারহেলের এক মুখপাত্র এই নির্বাহী আদেশকে “অবৈধ” বলে অভিহিত করে জানান, আদেশটি বাতিলের জন্য তারা সবধরনের আইনি ব্যবস্থায় যাবেন। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ফার্মটি বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধেও মামলা পরিচালনা করেছে এবং সব ধরনের ক্লায়েন্টের জন্য আইনি সেবা প্রদান করে থাকে।

রবার্ট মুলারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা

  • মুলার ১৯৯০-এর দশকে উইলমারহেলে কাজ শুরু করেন।
  • ২০১৪ সালে ফার্মটিতে পার্টনার হিসেবে যুক্ত হন।
  • ২০১৬ সালের নির্বাচনে কথিত রাশিয়া সংযোগের অভিযোগ তদন্তের সময় তাঁকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
  • ২০২১ সালে মুলার উইলমারহেলে থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

আইনি মহলের প্রতিক্রিয়া

  • আইনজীবী সংগঠনগুলো: আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে আইনের শাসনের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
  • আদালতের প্রতিক্রিয়া: ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে ইতোমধ্যেই আদালত সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে প্রশাসনবিরোধী মামলা পরিচালনা বা ভিন্নমত দমনে তাঁর ভূমিকার কারণে।

অন্যান্য আইন ফার্ম ও ব্যক্তিগত সংযোগ

  • এর আগে পলওয়েইস ফার্মের বিরুদ্ধেও ট্রাম্প ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। পরে ফার্মটি কিছু প্রোগ্রাম বন্ধ ও রক্ষণশীল উদ্দেশ্যে প্রো-বোনো সেবা দিতে সম্মত হলে আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
  • উইলমারহেলে পূর্বে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও জ্যারেড কুশনারের পক্ষেও প্রতিনিধিত্ব করেছিল।
  • একই সময়ে ট্রাম্প উইলমারহেলে সাবেক পার্টনার জেফ্রি কেসলার (Jeffrey Kessler)-কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত করেন।

উপসংহার

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশ মার্কিন আইনি অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সূচনা করেছে। প্রভাবশালী আইন ফার্মগুলোর বিরুদ্ধে এমন টানা ব্যবস্থা বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। উইলমারহেলে ইতোমধ্যেই কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। আইনজগত এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্পের রবার্ট মুলারের সাবেক আইন ফার্মকে ঘিরে নতুন আইনি আক্রমণ

১২:৫৮:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ওয়াশিংটনভিত্তিক আইন ফার্ম উইলমারহেল (WilmerHale)-কে তাঁর প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন। এর আগে ট্রাম্প পারকিনস কোই (Perkins Coie)কোভিংটন অ্যান্ড বার্লিং (Covington and Burling) এবং পলওয়েইস (Paul, Weiss)-সহ একাধিক বড় আইন ফার্মের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, এসব প্রতিষ্ঠান তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

নির্বাহী আদেশ ও এর প্রভাব

  • নিরাপত্তা ছাড়পত্র স্থগিত: উইলমারহেলের নিরাপত্তা ছাড়পত্র সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
  • চুক্তি বাতিলের নির্দেশ: ফেডারেল সংস্থাগুলোকে ফার্মটির সঙ্গে থাকা সব সরকারি চুক্তি বাতিলের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
  • প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: উইলমারহেলের কর্মীদের ফেডারেল ভবনে প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।

ট্রাম্পের বক্তব্য

ট্রাম্পের ভাষ্য, উইলমারহেল তাদের পেশাগত মানদণ্ড থেকে সরে গিয়ে “সুস্পষ্ট পক্ষপাতমূলক” কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাঁর দাবি, ফার্মটি রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দিয়ে তাঁকে “পুরস্কৃত” করেছে, যিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে কথিত রাশিয়া হস্তক্ষেপের তদন্তে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। ট্রাম্পের মতে, এই তদন্ত ছিল একটি রাজনৈতিক স্বার্থসাধনের হাতিয়ার।

উইলমারহেলের প্রতিক্রিয়া

উইলমারহেলের এক মুখপাত্র এই নির্বাহী আদেশকে “অবৈধ” বলে অভিহিত করে জানান, আদেশটি বাতিলের জন্য তারা সবধরনের আইনি ব্যবস্থায় যাবেন। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, ফার্মটি বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধেও মামলা পরিচালনা করেছে এবং সব ধরনের ক্লায়েন্টের জন্য আইনি সেবা প্রদান করে থাকে।

রবার্ট মুলারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা

  • মুলার ১৯৯০-এর দশকে উইলমারহেলে কাজ শুরু করেন।
  • ২০১৪ সালে ফার্মটিতে পার্টনার হিসেবে যুক্ত হন।
  • ২০১৬ সালের নির্বাচনে কথিত রাশিয়া সংযোগের অভিযোগ তদন্তের সময় তাঁকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
  • ২০২১ সালে মুলার উইলমারহেলে থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

আইনি মহলের প্রতিক্রিয়া

  • আইনজীবী সংগঠনগুলো: আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে আইনের শাসনের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
  • আদালতের প্রতিক্রিয়া: ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে ইতোমধ্যেই আদালত সমালোচনা করেছে, বিশেষ করে প্রশাসনবিরোধী মামলা পরিচালনা বা ভিন্নমত দমনে তাঁর ভূমিকার কারণে।

অন্যান্য আইন ফার্ম ও ব্যক্তিগত সংযোগ

  • এর আগে পলওয়েইস ফার্মের বিরুদ্ধেও ট্রাম্প ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। পরে ফার্মটি কিছু প্রোগ্রাম বন্ধ ও রক্ষণশীল উদ্দেশ্যে প্রো-বোনো সেবা দিতে সম্মত হলে আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
  • উইলমারহেলে পূর্বে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও জ্যারেড কুশনারের পক্ষেও প্রতিনিধিত্ব করেছিল।
  • একই সময়ে ট্রাম্প উইলমারহেলে সাবেক পার্টনার জেফ্রি কেসলার (Jeffrey Kessler)-কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত করেন।

উপসংহার

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশ মার্কিন আইনি অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সূচনা করেছে। প্রভাবশালী আইন ফার্মগুলোর বিরুদ্ধে এমন টানা ব্যবস্থা বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। উইলমারহেলে ইতোমধ্যেই কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। আইনজগত এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।