০৪:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
গাইবান্ধায় গণপিটুনিতে নিহত এক ব্যক্তি সিলেটে বাস–প্রাইভেটকার সংঘর্ষে বাবা–মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু ট্রাম্পের পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরুর নির্দেশে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ‘কৌশলগত বিরতি’র ইঙ্গিত মিলেছে গাজায় টলোমলো যুদ্ধবিরতি: ট্রাম্পের শান্তি–পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ আটকে যাচ্ছে জামাইকাতে হারিকেন মেলিসা ছিলো ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণি ঝড় নিট-শূন্য ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরের পারমাণবিক ভাবনা ইউরোপের প্রতিরক্ষা শিল্পের আকাশছোঁয়া উত্থান—এবার কঠিন পরীক্ষার মুখে বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তনের নেপথ্যে ‘দুর্বল শাসনব্যবস্থা’: অজিত দোভাল নেক্সপেরিয়ার কিছু অর্ডারে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় ছাড় বিবেচনা করছে চীন

দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তরুণদের আন্দোলন—পরিবর্তনের পথে নেপাল

তরুণদের নেতৃত্বে এক ঐতিহাসিক আন্দোলন

নেপালে সাম্প্রতিক যুব বিদ্রোহ দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ২০২৫ সালের ৮-৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে দেশের তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নামে। এই সহিংস বিক্ষোভে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য আহত হয়েছেন। বিদ্রোহের পর পতন ঘটে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার, বিলুপ্ত হয় সংসদ, এবং ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মী সুশিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সংসদ, আদালত ও সরকারি ভবনে আগুন দেওয়ার পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। তবু এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই নতুন এক আহ্বান উঠে এসেছে—ন্যায় ও পরিবর্তনের। আগামী মার্চ ২০২৬-এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা

নেপালের তরুণদের এই আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক আশারও প্রতীক। অনলাইন-প্রজন্ম হিসেবে তারা পুরোনো বাধা ভেঙে সমতার সমাজ গড়ার দাবি তুলেছে। এ ধরনের তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও দেখা গেছে — ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশে — যেখানে অর্থনৈতিক দুর্দশা ও শাসকদের দায়মুক্তি যুব সমাজকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছিল।

নেপালের এই বিদ্রোহ আকস্মিক নয়; এটি বহু বছরের পচনের ফল। দেশে যুব বেকারত্ব প্রায় ২০ শতাংশ। কাজের অভাবে লক্ষাধিক তরুণ বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এই প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) দেশের অর্থনীতির প্রধান ভরসা হলেও তা দেশীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে নেপালের অর্থনীতি এক অন্তহীন নির্ভরতার চক্রে আটকে গেছে।


দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেনারেশন জেড

দুর্নীতি নেপালের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে আছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে ১৮০ দেশের মধ্যে নেপালের অবস্থান ১০৭তম। রাজনীতিক ও প্রশাসনের মধ্যে আঁতাতের কারণে কোনো বড় দুর্নীতিকেই আইনের আওতায় আনা যায়নি। তরুণদের আন্দোলনের কেন্দ্রীয় স্লোগান ছিল “নেপো কিডস”—যারা পারিবারিক প্রভাব ও ক্ষমতার মাধ্যমে সুবিধা নেয়, এবং যা বৈষম্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।


গণআন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

২০০৬ সালের গণআন্দোলন নেপালে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ২০০৮ সালে প্রজাতন্ত্রের পথ খুলেছিল। কিন্তু দুই দশক পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুত পরিবর্তন বাস্তবে রূপ নেয়নি। শিক্ষা, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের ঘাটতি দেশটিকে পিছিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে জিডিপিতে পর্যটনের অবদান প্রায় ৭ শতাংশ, কিন্তু পর্যটন অবকাঠামো ভঙ্গুর। বিশাল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তির কারণে খাতটি অব্যবহৃত। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে নেপালের ৮২ শতাংশ শ্রমিক অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে—যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।


ধ্বংসের মধ্যেও নবজাগরণের ইঙ্গিত

যদিও সাম্প্রতিক সহিংসতায় সরকারি ভবন ও থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটি কেবল হতাশার বহিঃপ্রকাশ নয় — বরং পরিবর্তনের সুযোগও সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের আন্দোলন সাময়িকভাবে অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও দীর্ঘমেয়াদে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পথ খুলে দেয়।

অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশিলা কার্কির নেতৃত্বাধীন সরকারকে এখন দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের বিচারের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কোডিং বুটক্যাম্প, স্টার্টআপ ইনকিউবেটর ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। এতে নেপালকে “হিমালয়ান টেক হাব”-এ রূপান্তর করা সম্ভব।


অর্থনীতির বহুমুখীকরণ ও টেকসই ভবিষ্যৎ

নেপালের অর্থনীতি রেমিট্যান্সের বাইরে যেতে হবে। টেকসই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানি রপ্তানিকারক হিসেবে উঠে আসতে পারে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনীতিতে নতুন গতি আনা সম্ভব।

তরুণদের রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নও জরুরি। নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তাদের চিন্তা বাস্তবে রূপ নেয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অভিবাসন-নির্ভরতা কমাতে হবে—ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভর্তুকি ও শ্রমবাজারের আনুষ্ঠানিকীকরণে জোর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগীরাও যেন সহায়তার পরিবর্তে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি আনতে পারে।


বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠন

কাঠমান্ডু পোস্টের হিসাবে, এই আন্দোলনে নেপালের অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার। সহিংসতা ও প্রশাসনিক স্থবিরতা দেশের শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছে। দ্রুত নির্বাচন না হলে শূন্যতার সুযোগে স্বৈরাচার বা জাতিগত সংঘাতের ঝুঁকি বাড়বে। তবুও তরুণ প্রজন্ম হাল ছাড়েনি — তারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে বিপুল সংখ্যায়। এটি কোনো কিশোরোচিত আবেগ নয়; বাস্তব পরিবর্তনের কৌশল।


নেপালের জেনারেশন জেড বিদ্রোহ প্রমাণ করেছে, প্রকৃত নবজাগরণ কখনও স্থিতাবস্থার ভেতর থেকে আসে না—তা জন্ম নেয় ভস্মস্তূপের মধ্য থেকে। তরুণদের উচিত তাদের ডিজিটাল দক্ষতাকে কেবল প্রতিবাদের নয়, নির্মাণের হাতিয়ারে পরিণত করা। কারণ এই বিদ্রোহ শুধু নেপালের নয়, বরং স্থবির অর্থনীতিতে আবদ্ধ প্রতিটি সমাজের জন্য এক নীলনকশা। বিশৃঙ্খলার ভেতর দিয়েই শুরু হয় সৃজনশীল পরিবর্তনের যাত্রা।


#নেপাল,#জেনারেশন জেড, #দুর্নীতি, #অর্থনৈতিক সংস্কার,# সুশিলা কার্কি, #দক্ষিণ এশিয়া, #তরুণ আন্দোলন, #রাজনৈতিক পরিবর্তন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধায় গণপিটুনিতে নিহত এক ব্যক্তি

দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে তরুণদের আন্দোলন—পরিবর্তনের পথে নেপাল

১২:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

তরুণদের নেতৃত্বে এক ঐতিহাসিক আন্দোলন

নেপালে সাম্প্রতিক যুব বিদ্রোহ দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ২০২৫ সালের ৮-৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে দেশের তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নামে। এই সহিংস বিক্ষোভে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য আহত হয়েছেন। বিদ্রোহের পর পতন ঘটে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার, বিলুপ্ত হয় সংসদ, এবং ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মী সুশিলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সংসদ, আদালত ও সরকারি ভবনে আগুন দেওয়ার পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। তবু এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই নতুন এক আহ্বান উঠে এসেছে—ন্যায় ও পরিবর্তনের। আগামী মার্চ ২০২৬-এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা

নেপালের তরুণদের এই আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক আশারও প্রতীক। অনলাইন-প্রজন্ম হিসেবে তারা পুরোনো বাধা ভেঙে সমতার সমাজ গড়ার দাবি তুলেছে। এ ধরনের তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও দেখা গেছে — ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশে — যেখানে অর্থনৈতিক দুর্দশা ও শাসকদের দায়মুক্তি যুব সমাজকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছিল।

নেপালের এই বিদ্রোহ আকস্মিক নয়; এটি বহু বছরের পচনের ফল। দেশে যুব বেকারত্ব প্রায় ২০ শতাংশ। কাজের অভাবে লক্ষাধিক তরুণ বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এই প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) দেশের অর্থনীতির প্রধান ভরসা হলেও তা দেশীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে নেপালের অর্থনীতি এক অন্তহীন নির্ভরতার চক্রে আটকে গেছে।


দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেনারেশন জেড

দুর্নীতি নেপালের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে আছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে ১৮০ দেশের মধ্যে নেপালের অবস্থান ১০৭তম। রাজনীতিক ও প্রশাসনের মধ্যে আঁতাতের কারণে কোনো বড় দুর্নীতিকেই আইনের আওতায় আনা যায়নি। তরুণদের আন্দোলনের কেন্দ্রীয় স্লোগান ছিল “নেপো কিডস”—যারা পারিবারিক প্রভাব ও ক্ষমতার মাধ্যমে সুবিধা নেয়, এবং যা বৈষম্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।


গণআন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

২০০৬ সালের গণআন্দোলন নেপালে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ২০০৮ সালে প্রজাতন্ত্রের পথ খুলেছিল। কিন্তু দুই দশক পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুত পরিবর্তন বাস্তবে রূপ নেয়নি। শিক্ষা, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের ঘাটতি দেশটিকে পিছিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে জিডিপিতে পর্যটনের অবদান প্রায় ৭ শতাংশ, কিন্তু পর্যটন অবকাঠামো ভঙ্গুর। বিশাল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তির কারণে খাতটি অব্যবহৃত। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে নেপালের ৮২ শতাংশ শ্রমিক অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে—যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।


ধ্বংসের মধ্যেও নবজাগরণের ইঙ্গিত

যদিও সাম্প্রতিক সহিংসতায় সরকারি ভবন ও থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটি কেবল হতাশার বহিঃপ্রকাশ নয় — বরং পরিবর্তনের সুযোগও সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের আন্দোলন সাময়িকভাবে অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও দীর্ঘমেয়াদে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পথ খুলে দেয়।

অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশিলা কার্কির নেতৃত্বাধীন সরকারকে এখন দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের বিচারের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কোডিং বুটক্যাম্প, স্টার্টআপ ইনকিউবেটর ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। এতে নেপালকে “হিমালয়ান টেক হাব”-এ রূপান্তর করা সম্ভব।


অর্থনীতির বহুমুখীকরণ ও টেকসই ভবিষ্যৎ

নেপালের অর্থনীতি রেমিট্যান্সের বাইরে যেতে হবে। টেকসই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানি রপ্তানিকারক হিসেবে উঠে আসতে পারে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনীতিতে নতুন গতি আনা সম্ভব।

তরুণদের রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নও জরুরি। নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তাদের চিন্তা বাস্তবে রূপ নেয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অভিবাসন-নির্ভরতা কমাতে হবে—ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভর্তুকি ও শ্রমবাজারের আনুষ্ঠানিকীকরণে জোর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগীরাও যেন সহায়তার পরিবর্তে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি আনতে পারে।


বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠন

কাঠমান্ডু পোস্টের হিসাবে, এই আন্দোলনে নেপালের অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলার। সহিংসতা ও প্রশাসনিক স্থবিরতা দেশের শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছে। দ্রুত নির্বাচন না হলে শূন্যতার সুযোগে স্বৈরাচার বা জাতিগত সংঘাতের ঝুঁকি বাড়বে। তবুও তরুণ প্রজন্ম হাল ছাড়েনি — তারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে বিপুল সংখ্যায়। এটি কোনো কিশোরোচিত আবেগ নয়; বাস্তব পরিবর্তনের কৌশল।


নেপালের জেনারেশন জেড বিদ্রোহ প্রমাণ করেছে, প্রকৃত নবজাগরণ কখনও স্থিতাবস্থার ভেতর থেকে আসে না—তা জন্ম নেয় ভস্মস্তূপের মধ্য থেকে। তরুণদের উচিত তাদের ডিজিটাল দক্ষতাকে কেবল প্রতিবাদের নয়, নির্মাণের হাতিয়ারে পরিণত করা। কারণ এই বিদ্রোহ শুধু নেপালের নয়, বরং স্থবির অর্থনীতিতে আবদ্ধ প্রতিটি সমাজের জন্য এক নীলনকশা। বিশৃঙ্খলার ভেতর দিয়েই শুরু হয় সৃজনশীল পরিবর্তনের যাত্রা।


#নেপাল,#জেনারেশন জেড, #দুর্নীতি, #অর্থনৈতিক সংস্কার,# সুশিলা কার্কি, #দক্ষিণ এশিয়া, #তরুণ আন্দোলন, #রাজনৈতিক পরিবর্তন