০৭:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
সুদানের এল-ফাশের থেকে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে: জাতিসংঘ কোভিড ও ফ্লু সংক্রমণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার প্রমাণ পেল নতুন গবেষণা হারিকেন মেলিসার তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে জামাইকা–কিউবা–হাইতি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অ্যান্ড্রুকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে এপস্টিন মামলা নিয়ে জবাব দিতে হবে, বলছেন ডেমোক্র্যাটরা অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু’ বেশি, ঢাকায় সর্বোচ্চ নরসিংদীতে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ আটজন গ্রেপ্তার কম্বোডিয়ায় সিঙ্গাপুরীয়দের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতারণা চক্র ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করলেও তানজিদ তামিমকে নিয়ে ‘আক্ষেপ’ কোথায়? বাংলাদেশ হঠাৎ জুডো কারাতে, অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন, ঝুঁকি কোথায়?

ট্রাম্পের পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরুর নির্দেশে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেন্টাগনকে অবিলম্বে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রয়োজনীয়। তবে রাশিয়া ও চীন এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে, যা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

উপশিরোনাম: পারমাণবিক পরীক্ষায় ফেরার ঘোষণা
২০২০ সালের পর প্রথমবার পারমাণবিক সক্ষমতার পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “অন্যরা পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমাদেরও করা উচিত।” এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি জানান, পরীক্ষার স্থানের সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে। গত ২৫ বছরে উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্য কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা চালায়নি।

 ‘ঝুঁকি নেই’ দাবি ট্রাম্পের
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বিশ্ব আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্রবেশ করছে কিনা—এমন প্রশ্নে ট্রাম্প হুমকির আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মজুদ “ভালোভাবে সুরক্ষিত।” তিনি আরও জানান, “আমি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ দেখতে চাই, কারণ আমাদের অস্ত্র অনেক বেশি; রাশিয়া দ্বিতীয়, চীন তৃতীয়, আর চীন চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমকক্ষ হবে।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছি, এবং চীনকেও আলোচনায় যুক্ত করা যেতে পারে।”

 চীন–রাশিয়ার সাম্প্রতিক অগ্রগতি
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন চীন দ্রুত তাদের পারমাণবিক ভাণ্ডার বাড়াচ্ছে এবং রাশিয়া সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তারা সফলভাবে একটি পারমাণবিক–চালিত ক্রুজ মিসাইল ও টর্পেডোর পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর উচিত “মিসাইল পরীক্ষা না করে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার দিকে মনোযোগ দেওয়া।”

ওয়াশিংটন–ভিত্তিক থিংকট্যাংক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ছিল ৩০০, যা ২০২৫ সালে বেড়ে ৬০০–তে পৌঁছেছে। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১,০০০–এরও বেশি হতে পারে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ২৯ অক্টোবর ঘোষণা করেন যে তাদের “পোসাইডন” নামের পারমাণবিক–চালিত সুপার টর্পেডোর সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক রেডিওঅ্যাকটিভ জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে সক্ষম।

 যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক বিরোধিতা শুরু হয়েছে।
নেভাডার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য ডিনা টাইটাস ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “আমি এই সিদ্ধান্ত বন্ধ করতে একটি বিল উপস্থাপন করব।”


আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ড্যারিল কিমবল বলেন, “নেভাডার সাবেক পরীক্ষাকেন্দ্রে পুনরায় ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩৬ মাস লাগবে।”
তিনি আরও মন্তব্য করেন, “ট্রাম্প ভুল ধারণায় আছেন এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন। ১৯৯২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা পুনরায় শুরুর কোনো প্রযুক্তিগত, সামরিক বা রাজনৈতিক প্রয়োজন নেই।”

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক পারমাণবিক প্রতিযোগিতা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নীতিতে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করেছে। রাশিয়া ও চীনের কড়া প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ককে চাপে ফেলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব নিরাপত্তা ও আস্থার ভারসাম্যে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

#tags
#DonaldTrump #NuclearTest #Pentagon #USRussiaChina #GlobalSecurity #NuclearTension #SarakKhonReport

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদানের এল-ফাশের থেকে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে: জাতিসংঘ

ট্রাম্পের পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরুর নির্দেশে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক

০২:৫৬:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেন্টাগনকে অবিলম্বে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রয়োজনীয়। তবে রাশিয়া ও চীন এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে, যা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

উপশিরোনাম: পারমাণবিক পরীক্ষায় ফেরার ঘোষণা
২০২০ সালের পর প্রথমবার পারমাণবিক সক্ষমতার পুনরুজ্জীবনের ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “অন্যরা পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমাদেরও করা উচিত।” এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি জানান, পরীক্ষার স্থানের সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে। গত ২৫ বছরে উত্তর কোরিয়া ছাড়া অন্য কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা চালায়নি।

 ‘ঝুঁকি নেই’ দাবি ট্রাম্পের
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বিশ্ব আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্রবেশ করছে কিনা—এমন প্রশ্নে ট্রাম্প হুমকির আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মজুদ “ভালোভাবে সুরক্ষিত।” তিনি আরও জানান, “আমি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ দেখতে চাই, কারণ আমাদের অস্ত্র অনেক বেশি; রাশিয়া দ্বিতীয়, চীন তৃতীয়, আর চীন চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমকক্ষ হবে।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছি, এবং চীনকেও আলোচনায় যুক্ত করা যেতে পারে।”

 চীন–রাশিয়ার সাম্প্রতিক অগ্রগতি
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন চীন দ্রুত তাদের পারমাণবিক ভাণ্ডার বাড়াচ্ছে এবং রাশিয়া সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তারা সফলভাবে একটি পারমাণবিক–চালিত ক্রুজ মিসাইল ও টর্পেডোর পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর উচিত “মিসাইল পরীক্ষা না করে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার দিকে মনোযোগ দেওয়া।”

ওয়াশিংটন–ভিত্তিক থিংকট্যাংক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ছিল ৩০০, যা ২০২৫ সালে বেড়ে ৬০০–তে পৌঁছেছে। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১,০০০–এরও বেশি হতে পারে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ২৯ অক্টোবর ঘোষণা করেন যে তাদের “পোসাইডন” নামের পারমাণবিক–চালিত সুপার টর্পেডোর সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক রেডিওঅ্যাকটিভ জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে সক্ষম।

 যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক বিরোধিতা শুরু হয়েছে।
নেভাডার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য ডিনা টাইটাস ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “আমি এই সিদ্ধান্ত বন্ধ করতে একটি বিল উপস্থাপন করব।”


আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ড্যারিল কিমবল বলেন, “নেভাডার সাবেক পরীক্ষাকেন্দ্রে পুনরায় ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩৬ মাস লাগবে।”
তিনি আরও মন্তব্য করেন, “ট্রাম্প ভুল ধারণায় আছেন এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন। ১৯৯২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা পুনরায় শুরুর কোনো প্রযুক্তিগত, সামরিক বা রাজনৈতিক প্রয়োজন নেই।”

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক পারমাণবিক প্রতিযোগিতা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নীতিতে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করেছে। রাশিয়া ও চীনের কড়া প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ককে চাপে ফেলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব নিরাপত্তা ও আস্থার ভারসাম্যে দীর্ঘমেয়াদি অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

#tags
#DonaldTrump #NuclearTest #Pentagon #USRussiaChina #GlobalSecurity #NuclearTension #SarakKhonReport