জোহানেসবার্গে গ্লোবাল অর্থনীতির সংকটমুখে বেসরকারি খাতের জোরালো অবস্থান
জোহানেসবার্গে যখন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা জড়ো হলেন, তখন প্রায় দুই হাজার বেসরকারি খাতের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হলো বি২০—জি২০–এর অফিসিয়াল ব্যবসায়িক সংলাপ ফোরাম। দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতিত্বে সারাবছর ধরে আটটি ভিন্ন টাস্কফোর্স ৩০টি বাস্তবায়নযোগ্য নীতিগত সুপারিশ তৈরি করেছে, যা উপস্থাপিত হবে জি২০–কে। এসব সুপারিশের ক্ষেত্র—অর্থনীতি, বাণিজ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি, ডিজিটাল রূপান্তর, সুশাসন, দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পায়ন।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সিম তশাবালালা, যিনি বি২০–এর ফাইন্যান্স ও অবকাঠামো টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান, বলেন—বি২০ ব্যবসায়িক সম্প্রদায়কে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, “এই বছর আমরা দেখাতে পেরেছি যে প্রমাণ–নির্ভর, শান্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী নেতাদের কাছে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয়েছে।”
তাঁর মতে, জোহানেসবার্গ বি২০ সম্মেলন সফল হওয়ার কারণ হলো—বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং সারাবছরের অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার ফলাফল হিসেবে সুসংগঠিত নীতিমালা প্রণয়ন।
তিনি আরও বলেন, “এই আলোচনা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আফ্রিকা সম্পর্কে আগ্রহ বাড়িয়েছে। ব্যবসায়িক সংযোগের ফলে আফ্রিকার জন্য উল্লেখযোগ্য মূল্য তৈরি হয়েছে।”

বৈশ্বিক উত্তেজনার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি
বৈশ্বিক উত্তেজনা ও অস্থিরতার সময় বি২০ কীভাবে কাজ করেছে—এ বিষয়ে তশাবালালা বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ অন্তর্ভুক্তিমূলক, তথ্যভিত্তিক এবং অরাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখেছি। আমরা এমন সুপারিশ করতে চেয়েছি যা যে কোনো বিচক্ষণ ব্যবসায়ীর কাছে গ্রহণযোগ্য।”
তিনি জানান, তাদের লক্ষ্য ছিল স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক অস্থিরতার বদলে আফ্রিকা ও বিশ্বজুড়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সৃষ্টি করা। “আমাদের নীতিগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা দক্ষিণ আফ্রিকান, নাইজেরিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, রাশিয়ান বা চীনা—সবাই যুক্তিসঙ্গতভাবে গ্রহণ করবে।”
তশাবালালার নেতৃত্বে বি২০–এর ফাইন্যান্স ও অবকাঠামো টাস্কফোর্স আফ্রিকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তিনটি প্রধান প্রস্তাব পেশ করেছে।
বিনিয়োগযোগ্য প্রকল্পের সংখ্যা ও মান বাড়ানো
অনেক প্রকল্প ধারণাগতভাবে ভালো হলেও দুর্বল প্রস্তুতির কারণে ব্যর্থ হয়। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্প প্রস্তুতি, সম্ভাব্যতা যাচাই, সুশাসন ও ঝুঁকি বণ্টনকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি ও ডিজিটাল অবকাঠামো খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়, কারণ এগুলোই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি।
ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্স ও পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ সম্প্রসারণ
তাঁর মতে, স্বল্পসুদে প্রাপ্ত কনসেশনাল ফান্ড ঝুঁকি কমিয়ে আনে, যা বেসরকারি পুঁজিকে আত্মবিশ্বাস দেয়। এজন্য পিপিপি-মডেল সম্প্রসারণ জরুরি।
আফ্রিকার ঝুঁকি মূল্যায়ন আরও বাস্তবসম্মত করা
তথ্যঘাটতি ও ভুল রেটিংয়ের কারণে আফ্রিকায় পুঁজির খরচ বেশি পড়ে। টাস্কফোর্স তাই ডেটা ও তথ্যপ্রাপ্তি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, যা ক্রেডিট রেটিং, পুঁজি বরাদ্দ ও খরচ কমাতে সহায়ক হবে।
তশাবালালা বলেন, “আমরা যে সুপারিশগুলো করেছি, সেগুলো ইতোমধ্যেই বিভিন্ন নীতিনির্ধারকের বক্তব্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০ এক্সপার্ট প্যানেল ও বি২০ ফাইন্যান্স টাস্কফোর্সের মাঝে দৃশ্যমান সামঞ্জস্য লক্ষণীয়।”
#বি২০জোহানেসবার্গ
#আফ্রিকারউন্নয়ন
#বিনিয়োগ
#অবকাঠামো
#আন্তর্জাতিকব্যবসা
#জি২০সম্মেলন
#ডিজিটালরূপান্তর
#জ্বালানিখাত
#বেসরকারিখাত
#আফ্রিকাব্যবসা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















