রেজাই রাব্বী
জয়শ্রী রায় কিন্তু পরিচিত “জয়শ্রী কবির” হিসেবে। সত্তর দশকের দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়শ্রী কবির। প্রায় এক দশকে হাতে গোনা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি। হলিউডে সোফিয়া লরেন, বলিউডে স্মিতা পাতিল সেরকম আমাদের দেশেও একজন জয়শ্রী কবির ছিলেন।
১৯৬৮ সালে জয়শ্রী কবির মিস ক্যালকাটা খ্যাতি অর্জনের পর প্রিয়া ফিল্মসের নিবেদনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মূল গল্পে সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সিনেমায় অভিনয় করেই বাংলাদেশে পেয়েছিলেন জনপ্রিয়তা।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো প্রতিদ্বন্দ্বী, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, রূপালি সৈকতে, পুরস্কার, শহর থেকে দূরে, মোহনা, দেনা-পাওনা, নালিশ, আজকের নায়ক, অচেনা অতিথি ইত্যাদি। তার মত রুচিশীল সুঅভিনয় জানা নায়িকা খুব কমই এসেছে আমাদের চলচ্চিত্রে। তার সবচেয়ে প্রিয় ছবি “সূর্যকন্যা”। ‘সূর্যকন্যা’ ছবিতে নায়ক হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন মহানায়ক খ্যাত অভিনেতা বুলবুল আহমেদকে। এই সিনেমাতে অভিনয় করেই সেই সময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন জয়শ্রী। কারণ এই নামটাই যেন তাকে বিশেষায়িত করে।

ব্যক্তিগত জীবনে নির্মাতা আলমগীর কবিরের নির্দেশনা শুনতে শুনতে এক সময় তাকে মন দিয়ে ফেলেন জয়শ্রী। এরপর ১৯৭৫ সালেই মিস ক্যালকাটার সঙ্গে আলমগীর কবির বসে যান বিয়ের পিঁড়িতে। বিয়ের পর জয়শ্রী রায় হয়ে যান জয়শ্রী কবির।

কিন্তু খুব বেশি দিন টেকেনি তাদের বিয়ে। প্রায় তিন বছরে সংসারে শুরু হয় অশান্তি। জয়শ্রীকে আলমগীর কবির মারধর করতেন বলেও সে সময় জয়শ্রী অভিযোগ করেছিলেন। এতে নিজ দেশ ও ধর্ম ত্যাগ করা জয়শ্রীর মধ্যে হতাশা দানা বেঁধে ওঠে। এ কারণে তিনি মাদকের আশ্রয় নিয়েছিলেন বলেও কথিত আছে। অবশেষে বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি। বিচ্ছেদের পর প্রথমে পাড়ি দেন কলকাতায়। সেখান থেকে পরে চলে যান লন্ডনে।

কিন্তু এত বছর পরেও তাকে দেখলে মনে হয় নিজের ক্লাসি ইমেজ তিনি আজও ধরে রেখেছেন। আর আজও প্রিয় জয়শ্রী কবিরের অনুপস্থিতি অনুভব করে বাংলা চলচ্চিত্রে দর্শকেরা ।