মালয়েশিয়ার পেতালিং জায়া শহরে এখন যেন দুরিয়ানের বন্যা। ফলের রাজা মুসাং কিং কিনতে প্রতিদিন ভিড় জমছে এস এস টু এলাকার দোকানগুলোতে। ভালো ফলনের মৌসুম এ হঠাৎ করেই বড় ধাক্কা খেয়েছে দাম। একসময় যে মুসাং কিং কেজিতে আশি রিঙ্গিতেও বিক্রি হয়েছে, এখন তা নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে। ক্রেতারা বলছেন, এমন সুযোগ আগে কখনও আসেনি।
ফলনের জোয়ারে দামের ধস
চলতি মৌসুমে ব্যাপক ফলনের কারণে মুসাং কিংয়ের দাম তীব্রভাবে কমেছে। পেতালিং জায়ার জনপ্রিয় দুরিয়ান এলাকায় দোকানিরা নানা ছাড় ও অফার দিচ্ছেন। কোথাও এক ব্যাগ দুরিয়ান মিলছে মাত্র একশ তেত্রিশ রিঙ্গিতে। কোথাও আবার নির্দিষ্ট একটি ব্যাগ নিজে ভরে নেওয়ার সুযোগ, যেখানে প্রায় পনেরো কেজি পর্যন্ত দুরিয়ান রাখা যাচ্ছে। এই অফার ঘিরে দোকানগুলোর সামনে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খল ভিড়।

কৃষকের চোখে ‘দুরিয়ান সুনামি’
দুরিয়ান চাষিরা এই পরিস্থিতিকে বলছেন দুরিয়ান সুনামি। খামার পর্যায়ে মুসাং কিংয়ের দাম নেমে এসেছে কেজিতে প্রায় দশ রিঙ্গিতে, যা এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিশেষ করে নতুন বাগান মালিকরা, যারা প্রথমবার ফল তুলেছেন, তারা পড়েছেন বড় আর্থিক চাপে। চাষি ও পাইকাররা বলছেন, এত উৎপাদনের সঙ্গে বাজার প্রস্তুত ছিল না।
রপ্তানি বাজারে চীনের প্রভাব
দাম পড়ে যাওয়ার পেছনে বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে চীনের বাজার। মালয়েশিয়ান দুরিয়ানের বড় ক্রেতা চীন হলেও সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে সেখানে চাহিদা কমেছে। আগের মতো উচ্চ দামে দুরিয়ান কিনতে আগ্রহী নন অনেক ক্রেতা। ফলে রপ্তানি নির্ভর দাম কাঠামো ভেঙে পড়েছে।
দীর্ঘ মৌসুম, কমে আগ্রহ
একসময় দুরিয়ান ছিল নির্দিষ্ট কয়েক মাসের ফল। এখন জুন থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি বা মার্চ পর্যন্ত দুরিয়ান মিলছে। প্রতিদিন সহজলভ্য হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহও আগের মতো তীব্র নেই। শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাচুর্যই এখন দামের সবচেয়ে বড় শত্রু।
সামনে কী হতে পারে
দুরিয়ান শিল্পের সংগঠনগুলো জানিয়েছে, দাম স্থিতিশীল করতে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ চলছে। ফলের উৎস চিহ্নিত করা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, উৎপাদন ধীরে কমলে আগামী সপ্তাহগুলোতে দাম কিছুটা স্থির হতে পারে। আপাতত এই দাম কমার সুফল পাচ্ছেন সাধারণ ভোক্তারাই।


সারাক্ষণ রিপোর্ট 








