কে-পপ গার্ল গ্রুপ হার্টস-টু-হার্টস (Hearts2Hearts) তাদের প্রথম মিনি অ্যালবাম ‘ফোকাস’ প্রকাশের মাধ্যমে আত্ম-পরিচয়ের এক নতুন যাত্রা শুরু করেছে। ডেবিউয়ের মাত্র আট মাসের মাথায় এই অ্যালবাম তাদের সঙ্গীত ও পারফরম্যান্সে পরিণতির সাক্ষ্য বহন করছে।
আত্ম-উন্নতির পথে
সিউলের ইয়ংসান জেলার ব্লু স্কয়ার এসওএল ট্রাভেল হলে সোমবার আয়োজিত মিডিয়া শোকেসে ব্যান্ডের সদস্য ইয়-অন, স্টেলা, ইউহা, ইয়ান, আ-না, জুন, কারমেন এবং জিউ তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। তারা জানান, ‘দ্য চেজ’ দিয়ে ডেবিউয়ের পর তারা কতটা বেড়ে উঠেছেন, তা এই অ্যালবামের ছয়টি গানে প্রতিফলিত হয়েছে।
আ-না বলেন, “এই অ্যালবামে আমাদের বেড়ে ওঠা এবং দিকনির্দেশনা স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।” জিউ যোগ করেন, “এই অ্যালবাম আমাদের আসল রঙ তুলে ধরেছে— আমরা চাই শ্রোতারা আমাদের দিকে মনোযোগ দিন এবং তা ধরে রাখুন।”
প্রধান গান ‘ফোকাস’— আবেগের কেন্দ্রে
অ্যালবামের মূল গান ‘ফোকাস’ প্রযোজনা করেছেন কে-পপের জনপ্রিয় হিটমেকার কেনজি, যিনি তাদের আগের সিঙ্গেল ‘দ্য চেজ’ এবং ‘স্টাইল’-এরও প্রযোজক ছিলেন।
গানটি লুপিং পিয়ানো রিফ ও রিদমিক বেইস লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে তৈরি, যেখানে হার্টস-টু-হার্টসের সুর ও পরিপক্বতার অনন্য মেলবন্ধন দেখা যায়।
ইউহা বলেন, “গানটি সম্পূর্ণভাবে কারও প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ার অনুভূতি প্রকাশ করে। আমরা চাই, শ্রোতারা যেন সেই একই টান আমাদের প্রতিও অনুভব করেন।”
সুর ও মেজাজে নতুনত্ব
তাদের আগের গান ‘স্টাইল’-এ ছিল মজাদার ও চঞ্চল ভাব, আর ‘ফোকাস’-এ এসেছে আরও তীক্ষ্ণ ও রহস্যময় আবহ।
স্টেলা জানান, “প্রযোজক বলেছিলেন, এই গানে সূক্ষ্ম নিয়ন্ত্রণই মূল বিষয়। আমরা শক্তি প্রদর্শনের চেয়ে সঙ্গীতের সঙ্গে অভিব্যক্তিকে আরও সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছি।”
পারফরম্যান্স ও নাচের নকশা
হার্টস-টু-হার্টসের আকর্ষণের কেন্দ্রে সবসময়ই পারফরম্যান্স ছিল, আর এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
গানটির কোরিওগ্রাফি করেছেন জনপ্রিয় নৃত্যপরিচালক জো নাইন, যিনি ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’-এর ভাইরাল গান ‘গোল্ডেন’-এরও কোরিওগ্রাফার ছিলেন।
ইয়ান বলেন, “কোরিওগ্রাফারের সঙ্গে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। তিনি বলেছেন, এনার্জির ধারাবাহিকতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা গানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই শক্তি বজায় রাখার দিকে মনোযোগ দিয়েছি।”
মিউজিক ভিডিও— স্কুল পটভূমিতে স্বপ্ন ও বাস্তবের মিশ্রণ
‘ফোকাস’-এর মিউজিক ভিডিওতে স্কুলভিত্তিক সিনেমাটিক গল্পে মনোযোগের ধারণাকে রূপকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এখানে কল্পনাপ্রবণ দৃশ্যের সঙ্গে অ্যাকশনের সংমিশ্রণ ঘটেছে, যেখানে নিষ্পাপতা ও তীব্রতার এক সুন্দর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।
আ-না জানান, “কিছু দৃশ্যে আমাদের ওয়্যার স্টান্ট করতে হয়েছে— প্রথমবারের মতো করলাম, কিছুটা ভয়ও পেয়েছিলাম, তবে ফলাফলে আমরা খুশি।”
ইয়-অন যোগ করেন, “একটি আতশবাজির দৃশ্য ছিল যেখানে আসল আতশবাজি ব্যবহার করা হয়েছে, CGI নয়। মাত্র কয়েকবারেই শট নিতে হয়েছিল, তাই সবাইকে প্রচণ্ড মনোযোগী থাকতে হয়েছে।”
আত্মবিশ্বাস ও সংহতিতে নতুন উচ্চতা
ডেবিউয়ের আট মাস পর গ্রুপটি নিজেদের আরও আত্মবিশ্বাসী ও সমন্বিত মনে করছে।
স্টেলা বলেন, “আগে আমি শুধু ক্যামেরা খুঁজতাম, এখন দর্শকের সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারি।”
জিউ যোগ করেন, “এখন আমরা অনেক বেশি স্বস্তিতে কাজ করছি, আমাদের ব্যক্তিত্বগুলোও পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠছে।”
দলগত শক্তি ও স্বাতন্ত্র্য
‘হার্টস-টু-হার্টস’-এর সদস্যসংখ্যা আটজন, যা তাদের পারফরম্যান্সে বহুমাত্রিক বিন্যাস ও নিখুঁত সিঙ্ক্রোনাইজেশনের সুযোগ দেয়।
আ-না বলেন, “আমাদের এই নিখুঁত সমন্বয় এসেছে বছরের পর বছর একসঙ্গে অনুশীলন ও বসবাসের অভিজ্ঞতা থেকে।”
হৃদয় থেকে হৃদয়ে— তাদের লক্ষ্য ও বার্তা
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তারা চান, ‘ফোকাস’ যেন তাদের জন্য এক মাইলফলক হয় এবং একই সঙ্গে একটি বার্তা পৌঁছে দেয়।
জিউ বলেন, “আমাদের নামের অর্থই হলো ‘হৃদয় থেকে হৃদয়ে’। আমরা চাই, আমাদের সঙ্গীত এমনভাবে মানুষের মধ্যে সংযোগ তৈরি করুক যেন তারা আমাদের
অনুভূতি বুঝতে পারে। সময়ের সঙ্গে ট্রেন্ড বদলালেও আমাদের লক্ষ্য সবসময় একটাই থাকবে— হৃদয়ের সংযোগ।”
#Hearts2Hearts #Kpop #FOCUS #GirlGroup #SouthKorea #MusicFeature #সারাক্ষণরিপোর্ট