ইসকনসহ যে কোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা যদি অপরাধ বা অপরাধে সহায়তামূলক হিসেবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ‘ইন্তিফাদা বাংলাদেশ’। শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনটি ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করে।
প্রধান দাবি
ইন্তিফাদা বাংলাদেশের ছয় দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো—
১. ইসকনের ভূমিকা তদন্ত ও নিষেধাজ্ঞা: ইসকনসহ যে কোনো প্রতিষ্ঠানের অপরাধে অর্থনৈতিক বা নৈতিক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে, প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
২. গাজীপুর ধর্ষণ ইস্যু: ঘটনাটির প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভাগকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভিকটিমের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করতে হবে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. টঙ্গী হত্যাকাণ্ডের তদন্ত: টঙ্গীর অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৪. ইসলামবিদ্বেষ রোধে জাতীয় নীতি: রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ ও ইসলামবিদ্বেষী আচরণ বন্ধে একটি জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
৫. মুসলিম নারীর সুরক্ষা: মুসলিম নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৬. ইসলামবিদ্বেষ-বিরোধী কর্মীদের নিরাপত্তা: ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কাজ করা ইমাম, নাগরিক ও সংগঠনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংগঠনের বক্তব্য
ইন্তিফাদা বাংলাদেশের সদস্য আহমেদ রফিক বলেন, “মুসলিম নারীকে ধর্ষণের পর সেটি গর্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হচ্ছে—এটি আমাদের সমাজের চরম অবক্ষয়।” তিনি অভিযোগ করেন, “ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে এক খতিবকে অপহরণ করে শিকলে বেঁধে হত্যা করা হয়েছে। এমন ঘটনা বারবার ঘটছে, অথচ রাষ্ট্র চুপ করে আছে, প্রশাসন অপরাধীদের বাঁচাতে ব্যস্ত।”
তিনি বলেন, “সুশীল সমাজ নীরব, কেউ দায় নিচ্ছে না। রাজনীতিবিদরা নিজেদের ইমেজ নিয়েই ব্যস্ত। তারা ভাবছে পশ্চিমারা কী বলবে, আমেরিকা বা দূতাবাস কী নির্দেশ দেবে। কিন্তু আল্লাহ কী বলবেন, সেটা নিয়ে চিন্তার সময় তাদের নেই।”
ইসলাম ও রাজনীতি প্রসঙ্গে সমালোচনা
আহমেদ রফিক বলেন, “অনেকে ইসলামী রাজনীতির কথা বলেন। কিন্তু যখন কোরআন অবমাননা হয়, রাসুলের অবমাননা হয়, কিংবা মুসলিম নারীর ইজ্জত লুণ্ঠন হয়, তখন তাদের দেখা যায় না। পরে এসে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে তারা গা বাঁচানোর চেষ্টা করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সম্প্রীতির কথা বলা হয়, আমাদেরকে মন্দির পাহারা দিতে বলা হয়, কিন্তু মুসলিম নারীর সম্মান যখন লুণ্ঠিত হয় তখন তাদের মুখে কবরের নীরবতা।”
ইসলামবিদ্বেষ ও নীরবতার সমালোচনা
তার মতে, এই নীরবতা নিজেই একটি অপরাধ। সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোতে ইসলামবিদ্বেষই এই নীরবতার মূল কারণ। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “হজরত শাহজালাল, শাহপরাণ, শাহমাকদুমদের স্মৃতিবিজড়িত এই বাংলার মানুষ আর চুপ থাকবে না।”

বিক্ষোভ-পরবর্তী পদযাত্রা
সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ইন্তিফাদা বাংলাদেশের সদস্যরা একটি মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরের দিকে অগ্রসর হন।
# ইন্তিফাদা_বাংলাদেশ, বায়তুল_মোকাররম, ইসকন, ইসলামবিদ্বেষ, গাজীপুর_ধর্ষণ, টঙ্গী_হত্যা, মুসলিম_নারীর_নিরাপত্তা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















