সহকারী প্রক্টরসহ দুই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে পৃথক অভিযোগপত্র জমা
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে পৃথক দুটি যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ও শিক্ষার্থী পরামর্শ দপ্তরে দুই শিক্ষার্থী লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ড. ইলিয়াস প্রামাণিক।
অভিযোগের বিবরণ
অভিযুক্তরা হলেন সহকারী প্রক্টর ও ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলাম।

এক শিক্ষার্থী ৩১ পৃষ্ঠার একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে, অন্যদিকে আরেক শিক্ষার্থী ড. শাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষাপট
গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগের প্রধানের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তারা দাবি করেন, অধ্যাপক শামীম হোসেনের শ্রেণি, পরীক্ষা ও অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হোক।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, শামীম হোসেন অশোভন ইঙ্গিত, অনুপযুক্ত প্রস্তাব এবং অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে ড. শাকিবুল ইসলাম বলেন, “আমি এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে অবগত নই। আমি এমন মানুষ নই। বিষয়টি বিভাগীয়ভাবে খতিয়ে দেখব।”
বিভাগের অবস্থান
ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের ৩১ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ তারা পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীরা শিক্ষকটির ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। আমরা জরুরি বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করেছি, যেখানে কয়েকজন ছাত্রী গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। শিগগিরই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আরেকটি বৈঠক হবে।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ড. এমদাদুল হক জানান, “আমাদের বিভাগেও এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন। আজ (সোমবার) দুপুরে আমরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “সাত দিনের মধ্যে একটি বৈঠক ডেকে অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ড. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির এমন অভিযোগ ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের নিরাপত্তা ও নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#BegumRokeyaUniversity #SexualHarassment #Rangpur #UniversityInvestigation #সারাক্ষণরিপোর্ট
																			
																সারাক্ষণ রিপোর্ট								 



















