ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এক মিলিয়নের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে
ফিলিপাইনে আঘাত হানা বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন ফাং-ওয়ং এখন দুর্বল হয়েছে। ঝড়ে চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। যদিও বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের খবর এখনও পাওয়া যায়নি, তবুও দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
ঝড়ের আগে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে
রবিবার (১০ নভেম্বর) ফাং-ওয়ং ফিলিপাইনের প্রধান দ্বীপ লুজোনে আঘাত হানার আগে থেকেই এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ঝড়ের প্রবল বেগে বাতাস, ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে বহু মানুষ সারারাত ঘুমাতে পারেননি।
ইসাবেলা প্রদেশের বাসিন্দা রোমিও মারিয়ানো বলেন, “বাতাসে টিনের ছাউনি কাঁপছিল, গাছের ডাল পড়ছিল — সারারাত ঘুমানোই সম্ভব হয়নি। সকালে বাইরে বেরিয়ে দেখি ঘরের চারপাশে অনেক ক্ষতি হয়েছে।”

প্রাণহানির সংখ্যা তুলনামূলক কম
দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা রাফি আলেহান্দ্রো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রাণহানির সংখ্যা ‘সীমিত’ থাকবে।
উত্তরাঞ্চলীয় নুয়েভা ভিজকায়া প্রদেশের কায়াপা শহরে একটি বাড়ি মাটিধসে চাপা পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে ডুবে যাওয়া ও ভেঙে পড়া ধ্বংসাবশেষের আঘাতে।
ভূমিধসে বিচ্ছিন্ন চারটি শহর
অরোরা প্রদেশে, যেখানে ঘূর্ণিঝড়টি প্রথম স্থলভাগে আঘাত হানে, সেখানে অন্তত চারটি শহর ভূমিধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা (৭৫–৯৩ মাইল) ছিল। এটি এখন উত্তর-পূর্ব দিকে তাইওয়ানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যদিও কিছুটা দুর্বল হয়েছে, তবুও উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
এক সপ্তাহে দ্বিতীয় বড় ঘূর্ণিঝড়

এই বছর ফিলিপাইনে এটি ২১তম ঘূর্ণিঝড়। এর আগে মাত্র এক সপ্তাহ আগে টাইফুন কালমেগি ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামে আঘাত হেনে ২২৯ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।
জলবায়ু পরিবর্তন ও ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা
এই ঘনঘন ও শক্তিশালী ঝড়ের মধ্যে দিয়েই সোমবার ব্রাজিলে শুরু হয়েছে কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলন, যেখানে বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঘূর্ণিঝড়গুলো আরও তীব্র হয়ে উঠছে এবং বৃষ্টিপাতও বেড়ে যাচ্ছে।
পরবর্তী গন্তব্য তাইওয়ান
আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফাং-ওয়ং বুধবার তাইওয়ানের ঘনবসতিপূর্ণ পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এর সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি পড়বে পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ি এলাকায়, যেখানে গত সেপ্টেম্বরে এক ঘূর্ণিঝড়ে বন্যায় ১৮ জন মারা গিয়েছিল।
সরকার ইতিমধ্যে গুয়াংফু শহরে বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যেটি গতবারের বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল।
#ঘূর্ণিঝড় #ফাংওয়ং #ফিলিপাইন #তাইওয়ান #জলবায়ুপরিবর্তন #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















