সীমান্তে উত্তেজনা: শান্তি প্রক্রিয়া থামাল থাইল্যান্ড
ব্যাংকক—থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড। সীমান্ত এলাকায় পুঁতে রাখা একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই থাই সেনা আহত হওয়ার পর সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘটনাটি দুই প্রতিবেশী দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সীমান্তে বিস্ফোরণ ও আহত সৈন্য
থাই সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার সকালে সিসাকেত প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল দেওয়ার সময় দুই সৈন্য ল্যান্ডমাইনে পা রাখেন। এতে একজন সেনা নিজের ডান পায়ের গোড়ালি হারিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আনুতিনের কঠোর প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চর্নভিরাকুল বলেন,
“সবকিছু বন্ধ রাখতে হবে। সীমান্তে যা ঘটেছে, তা উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করেনি। যদি কোনো পদক্ষেপ সংঘাত কমাতে না পারে, তাহলে সব কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে।”

চুক্তির পটভূমি
গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনের আয়োজনে আনুতিন ও কাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এই শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশ সীমান্ত থেকে সব ভারী অস্ত্র—যেমন ট্যাঙ্ক ও কামান—সরিয়ে নিতে সম্মত হয়। থাইল্যান্ড ১৮ জন কাম্বোডীয় বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, আর কাম্বোডিয়া সীমান্ত অঞ্চলে স্থাপিত ল্যান্ডমাইন অপসারণে সহযোগিতা করার কথা জানায়।
থাইল্যান্ডের নতুন সিদ্ধান্ত
সোমবার থাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল নাত্তাপন নাকপানিচ জানান, এখন ১৮ জন কাম্বোডীয় বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হবে। তিনি বলেন, “যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা আমাদের নিয়মিত টহল এলাকা, আগে এমন কিছু ঘটেনি।”
তিনি আরও জানান, থাইল্যান্ড ইতোমধ্যেই আসিয়ান অস্থায়ী পর্যবেক্ষক দলের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।
“যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে কাম্বোডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আরও মাইন পুঁতেছে, আমরা শুধুমাত্র প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ থাকব না,” সতর্ক করেন নাত্তাপন।
সীমান্তে চলমান প্রভাব
জুলাই থেকে সীমান্ত সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে। এর ফলে একাধিক সীমান্ত চেকপয়েন্ট বন্ধ হয়ে গেছে, পণ্য, ও মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আনুতিন মঙ্গলবার সীমান্ত এলাকায় গিয়ে আহত সেনাদের দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কাম্বোডিয়ার প্রতিক্রিয়া
সোমবার রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কাম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থাইল্যান্ডের অভিযোগ অস্বীকার করে। বিবৃতিতে বলা হয়, কাম্বোডিয়া নতুন করে কোনো ল্যান্ডমাইন স্থাপন করেনি এবং তারা ‘যৌথ ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ রয়েছে।
#Thailand #Cambodia #BorderConflict #PeaceDeal #Trump #ASEAN #SarakkhonReport
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















