বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম যখনই অস্থিতিশীল হয়, তখন একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে ভারত—বিশেষ করে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের কৃষিপণ্য সরবরাহ। দেশি উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় বাংলাদেশ বহু বছর ধরেই ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক আমদানির অনুমতি বাজারে তাৎক্ষণিক স্বস্তি ফেরালেও এই নির্ভরতার বাস্তবতা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
কেন বাংলাদেশ ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর এত নির্ভরশীল?
বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন মোট চাহিদার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। প্রতি বছর একটি বড় ঘাটতি তৈরি হয়, যা পূরণ করতে হয় আমদানির মাধ্যমে।
ভারত নিকটতম প্রতিবেশী হওয়ায় পরিবহন, খরচ এবং সময়—সব দিক থেকেই সুবিধাজনক। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা যেন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে।
Bangladesh Trade and Tariff Commission (BTTC) কখনও কখনও পাকিস্তান, চীন বা তুরস্ককে বিকল্প উৎস হিসেবে উল্লেখ করলেও বাস্তবে এখনও ভারতই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং নির্ভরযোগ্য উৎস।
২০২৫ সালের ডিসেম্বর: আমদানি খুলতেই দাম নেমে গেল
৭ ডিসেম্বর ২০২৫—সরকার ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ১,৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৩০ মেট্রিক টন করে আনতে পারবে।

এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ঘণ্টা পেরোতেই বাজারে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি দাম কমেছে ২০–৩০ টাকা।
হিলির পাইকারি বাজারে দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ১৩০ টাকা থেকে নেমে দাঁড়ায় প্রায় ১০০ টাকায়, আর নতুন মুড়িকাটা ১১০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও এক দিনেই কমে ৩০–৪০ টাকা।
ঘোষণা ও সরবরাহ—এই দুইয়ের প্রভাবেই দেশীয় বাজারে দ্রুত স্বস্তি ফিরে আসে।
আমদানি ও সরবরাহের বাস্তবতা
বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে, কিন্তু উৎপাদন সেই হারে বাড়ছে না।
উৎপাদন মৌসুম ছাড়া অন্য সময় বাজারকে চালাতে হয় আমদানির মাধ্যমে।
প্রতিবারের মতো এবারও দেখা গেল—যখন ভারত আমদানির পথ খুলে দেয়, দাম দ্রুত স্থিতিশীল হয়ে যায়।
একই সঙ্গে এটি মনে করিয়ে দেয় যে দেশের সরবরাহ ব্যবস্থার শক্তি এখনো আমদানিনির্ভর।
#tags: #OnionMarket #BangladeshEconomy #IndiaBangladeshTrade #FoodPrices #DelhiOnionImport
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















