০৫:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে আসিয়ান এখন আর কেবল বৈশ্বিক পুঁজির নীরব গ্রাহক নয় প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-১৯)

ঢাকার কোরবানির হাটে গরুর বৈচিত্র্য ছিল রঙিন

ঈদুল আজহার আগের সপ্তাহগুলোতে ঢাকার ২২টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট রীতিমতো উৎসবে মেতে উঠেছিল। গাবতলী, কামালাপুর, আমুলিয়া ও ধোলাইকালের মাঠজুড়ে সারি সারি দেশি-বিদেশি গরু এনে সাজানো হয়েছিল। লালচে চামড়ার স্বদেশি ‘লাল বৃষ’ থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের হোলস্টেন-ফ্রিজিয়ান-ক্রস, আবার কারও নজর কেড়েছিল মাত্র তিন-চার ফুট উচ্চতার ‘মিনি’ গরু—সব শ্রেণির ক্রেতা যেন পছন্দমতো পশু খুঁজে পেয়েছিল। বিক্রেতারা জানিয়েছিলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এ বছর সরবরাহ তুলনামূলক বেশি ছিল, অথচ ক্রেতাদের পকেট টান থাকায় দরকষাকষি ছিল তীব্র।

দেশি রত্ন : আঞ্চলিক ঐতিহ্যের স্বাদ

পাবনা গরু
পাবনা-সিরাজগঞ্জের খামারিরা মাঝারি আকারের জেবু জাতের শত শত গরু এনে হাট ভরিয়ে রেখেছিলেন। মাংসের নরম স্বাদ ও সহনশীল দামের কারণে মধ্যবিত্ত ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকেছিলেন এই জাতের দিকে। ২৮০-৩৫০ কেজি ওজনি বেশির ভাগ গরু ১.৩-২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

লাল চট্টগ্রাম (আরসিসি)
চট্টগ্রামের পাহাড়ঘেরা গ্রাম থেকে আসা লালবর্ণের ‘লাল বৃষ’ গরুগুলো আকারে মাঝারি হলেও বিশেষত্ব ও ঐতিহ্যের গল্পে দাম তুলনামূলক বেশি উঠেছিল। ২৫০-৪০০ কেজি ওজনি এসব গরুর বেশির ভাগই ২ লাখ টাকার ঘর ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পরিবারের পুরোনো রীতি রক্ষার খাতিরে বহু পুরান ঢাকার বাসিন্দা এ জাতই কিনেছিলেন।

ভোলা স্থানীয়
দক্ষিণের ভোলা জেলার খামারিরা রাসায়নিক ফ্যাটেনিং পরিহার করে প্রাকৃতিক ঘাস ও চারায় মোটাতাজা করা প্রায় এক লাখ গরু বাজারে তুলেছিলেন। তুলনামূলক মসৃণ কোট ও সাশ্রয়ী ওজনের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় পৌঁছামাত্রই বেশির ভাগ গরু আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন।

মুন্সিগঞ্জের মির্কাদিম সাদা
রাজধানীর পুরান ঢাকা অঞ্চলে ‘বুইট্টা’ নামে পরিচিত মির্কাদিমের দুধে-সাদা গরু এবারও আলাদা নজর কেড়েছিল। ৩০০-৩৫০ কেজির গরুগুলোর দাম ১.৫-২.৫ লাখ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছিল। শান্ত স্বভাব ও কম চর্বির কারণে পরিবারের খাদ্যাভ্যাস-সচেতন সদস্যরা এ জাত বেছে নিয়েছিলেন।

উন্নতজাত ও ক্রসব্রিড : উচ্চফলনের গল্প

উত্তরাঞ্চলের বড় খামারগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিজীবিতা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে হোলস্টেন-ফ্রিজিয়ান, সিন্ধি, শাহীওয়াল, জার্সি ও ব্রাহমন-ক্রস ষাঁড় উৎপাদন করেছিল। ৪০০-৬০০ কেজি ওজনি এই গরুগুলোর বাজারদর ৩-৬ লাখ টাকার মধ্যে থেকেছে। দুধে-উচ্চ ফলনশীল Bos taurus আর দেশি জেবু Bos indicus মিলিয়ে নেওয়া ক্রসব্রিডগুলো পেশাদার কসাই ও বড় পারিবারিক কোরবানিতে বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল, কারণ হাড়-মাংসের অনুপাত ছিল তুলনামূলক ভালো।

ছোট আকারের ‘মিনি’ গরু : নগরীর উত্সাহ

গত বছর থেকে জনপ্রিয় হওয়া ‘মিনি’ গরুর চাহিদা এ বার আরও বেড়েছিল। মাত্র ৯০-১২০ কেজি ওজন ও তিন-চার ফুট উচ্চতার এই গরুগুলো ৭০ হাজার থেকে ১.২ লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। তরুণ ক্রেতারা অনলাইন ভিডিও কলের মাধ্যমে গরু দেখে তাৎক্ষণিক বুকিং দিয়েছিলেন। ছোট বাসা, কম খরচে কোরবানি ও তুলনামূলক সহজ যত্ন—এ তিন কারণেই এ জাতের গরু দ্রুত বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।

কেজি-দর ও ডিজিটাল বুকিং : লেনদেনের নতুন অধ্যায়

রাজশাহীর নবা ডেইরি-সহ বেশ কয়েকটি বড় খামার প্রতি কেজি ৫৪০-৫৮০ টাকা ধরে গরু বিক্রি করেছিল। জীবন্ত ওজন দেখে তাৎক্ষণিক চালান-রশিদ ইস্যু করায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই আস্থা তৈরি হয়েছিল। শহরতলিতে ‘ওয়েইং ব্রিজ’ বসিয়ে খামারের কর্মীরা ট্রাকে তুলে দেওয়ার আগে গরু ওজন করে মূল্যের হিসাব চূড়ান্ত করেছিলেন। ক্রেতারা বিকাশ বা নগদে আগাম ২০ শতাংশ অগ্রিম পাঠিয়ে গরু বুক করেছিলেন, বাকি টাকা হাটে সরাসরি পরিশোধ করেছিলেন।

স্বাস্থ্যনিরাপত্তা : ভেটেরিনারি টহল ও প্রাকৃতিক খাদ্য

পাবনা, ভোলা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি দল ২৪ ঘণ্টা হাটে টহল দিয়েছিল। স্টেরয়েড বা হরমোন মিশ্রিত খাদ্যের সন্দেহে কয়েকটি গরু আলাদা করে রাখার ঘটনাও ঘটেছিল। অধিকাংশ খামারি সাইলেজ, ঘাস, ভুষি ও তিল-খৈল ব্যবহার করেছিলেন; ফলে গরুর স্বাস্থ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থাও ছিল দৃশ্যত বেশি।

কেন এত বৈচিত্র্য দেখা গিয়েছিল?

১) অর্থনৈতিক স্তরভেদ: বড় গরুর দাম ৫-৭ লাখ ছুঁয়েছে বলে বহু পরিবার ১-৩ লাখ টাকার গরুতে ঝুঁকেছিল।
২) রুচি ও স্বাদ: দেশি জাতের কম ফ্যাটের মাংস ও বিদেশি-ক্রসের মাংসল শরীর—দুটি ভিন্ন গ্রাহকগোষ্ঠী তৈরি করেছিল।
৩) পরিবহন সুবিধা: সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরাঞ্চলের গরু সহজে ঢাকায় পৌঁছেছিল বলে সরবরাহও ছিল বেশি।
৪) ডিজিটাল প্রভাব: ফেসবুক লাইভে ‘মিনি’ গরুর ভিডিও ভাইরাল হতেই তরুণ ক্রেতারা অনলাইনে দাম যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

ঢাকার কোরবানির হাট ২০২৫-এ শুধু পশু কেনাবেচা হয়নি; বাংলাদেশের আঞ্চলিক বৈচিত্র্য, খাদ্যাভ্যাস আর প্রযুক্তিনির্ভর বাজারনীতি মিলেমিশে এক অনন্য চিত্র এঁকেছিল। পাবনা-সিরাজগঞ্জের দেশি, চট্টগ্রামের লাল বৃষ, ভোলা স্থানীয়, মুন্সিগঞ্জের সাদা মির্কাদিম কিংবা উচ্চফলনশীল ফ্রিজিয়ান-ব্রাহমন—প্রতিটি জাতই শহরের মানুষকে নিজের গল্প শোনাতে পেরেছিল। শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের বাজেট, ধর্মীয় আবেগ ও পারিবারিক ঐতিহ্যই নির্ধারণ করেছিল কোন গরু কোরবানির ছুরি অবধি পৌঁছাবে আর কে ফিরবে খামারে।

 

ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ঢাকার কোরবানির হাটে গরুর বৈচিত্র্য ছিল রঙিন

১০:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫

ঈদুল আজহার আগের সপ্তাহগুলোতে ঢাকার ২২টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট রীতিমতো উৎসবে মেতে উঠেছিল। গাবতলী, কামালাপুর, আমুলিয়া ও ধোলাইকালের মাঠজুড়ে সারি সারি দেশি-বিদেশি গরু এনে সাজানো হয়েছিল। লালচে চামড়ার স্বদেশি ‘লাল বৃষ’ থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের হোলস্টেন-ফ্রিজিয়ান-ক্রস, আবার কারও নজর কেড়েছিল মাত্র তিন-চার ফুট উচ্চতার ‘মিনি’ গরু—সব শ্রেণির ক্রেতা যেন পছন্দমতো পশু খুঁজে পেয়েছিল। বিক্রেতারা জানিয়েছিলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এ বছর সরবরাহ তুলনামূলক বেশি ছিল, অথচ ক্রেতাদের পকেট টান থাকায় দরকষাকষি ছিল তীব্র।

দেশি রত্ন : আঞ্চলিক ঐতিহ্যের স্বাদ

পাবনা গরু
পাবনা-সিরাজগঞ্জের খামারিরা মাঝারি আকারের জেবু জাতের শত শত গরু এনে হাট ভরিয়ে রেখেছিলেন। মাংসের নরম স্বাদ ও সহনশীল দামের কারণে মধ্যবিত্ত ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকেছিলেন এই জাতের দিকে। ২৮০-৩৫০ কেজি ওজনি বেশির ভাগ গরু ১.৩-২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

লাল চট্টগ্রাম (আরসিসি)
চট্টগ্রামের পাহাড়ঘেরা গ্রাম থেকে আসা লালবর্ণের ‘লাল বৃষ’ গরুগুলো আকারে মাঝারি হলেও বিশেষত্ব ও ঐতিহ্যের গল্পে দাম তুলনামূলক বেশি উঠেছিল। ২৫০-৪০০ কেজি ওজনি এসব গরুর বেশির ভাগই ২ লাখ টাকার ঘর ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পরিবারের পুরোনো রীতি রক্ষার খাতিরে বহু পুরান ঢাকার বাসিন্দা এ জাতই কিনেছিলেন।

ভোলা স্থানীয়
দক্ষিণের ভোলা জেলার খামারিরা রাসায়নিক ফ্যাটেনিং পরিহার করে প্রাকৃতিক ঘাস ও চারায় মোটাতাজা করা প্রায় এক লাখ গরু বাজারে তুলেছিলেন। তুলনামূলক মসৃণ কোট ও সাশ্রয়ী ওজনের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় পৌঁছামাত্রই বেশির ভাগ গরু আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন।

মুন্সিগঞ্জের মির্কাদিম সাদা
রাজধানীর পুরান ঢাকা অঞ্চলে ‘বুইট্টা’ নামে পরিচিত মির্কাদিমের দুধে-সাদা গরু এবারও আলাদা নজর কেড়েছিল। ৩০০-৩৫০ কেজির গরুগুলোর দাম ১.৫-২.৫ লাখ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছিল। শান্ত স্বভাব ও কম চর্বির কারণে পরিবারের খাদ্যাভ্যাস-সচেতন সদস্যরা এ জাত বেছে নিয়েছিলেন।

উন্নতজাত ও ক্রসব্রিড : উচ্চফলনের গল্প

উত্তরাঞ্চলের বড় খামারগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিজীবিতা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে হোলস্টেন-ফ্রিজিয়ান, সিন্ধি, শাহীওয়াল, জার্সি ও ব্রাহমন-ক্রস ষাঁড় উৎপাদন করেছিল। ৪০০-৬০০ কেজি ওজনি এই গরুগুলোর বাজারদর ৩-৬ লাখ টাকার মধ্যে থেকেছে। দুধে-উচ্চ ফলনশীল Bos taurus আর দেশি জেবু Bos indicus মিলিয়ে নেওয়া ক্রসব্রিডগুলো পেশাদার কসাই ও বড় পারিবারিক কোরবানিতে বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল, কারণ হাড়-মাংসের অনুপাত ছিল তুলনামূলক ভালো।

ছোট আকারের ‘মিনি’ গরু : নগরীর উত্সাহ

গত বছর থেকে জনপ্রিয় হওয়া ‘মিনি’ গরুর চাহিদা এ বার আরও বেড়েছিল। মাত্র ৯০-১২০ কেজি ওজন ও তিন-চার ফুট উচ্চতার এই গরুগুলো ৭০ হাজার থেকে ১.২ লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। তরুণ ক্রেতারা অনলাইন ভিডিও কলের মাধ্যমে গরু দেখে তাৎক্ষণিক বুকিং দিয়েছিলেন। ছোট বাসা, কম খরচে কোরবানি ও তুলনামূলক সহজ যত্ন—এ তিন কারণেই এ জাতের গরু দ্রুত বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।

কেজি-দর ও ডিজিটাল বুকিং : লেনদেনের নতুন অধ্যায়

রাজশাহীর নবা ডেইরি-সহ বেশ কয়েকটি বড় খামার প্রতি কেজি ৫৪০-৫৮০ টাকা ধরে গরু বিক্রি করেছিল। জীবন্ত ওজন দেখে তাৎক্ষণিক চালান-রশিদ ইস্যু করায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই আস্থা তৈরি হয়েছিল। শহরতলিতে ‘ওয়েইং ব্রিজ’ বসিয়ে খামারের কর্মীরা ট্রাকে তুলে দেওয়ার আগে গরু ওজন করে মূল্যের হিসাব চূড়ান্ত করেছিলেন। ক্রেতারা বিকাশ বা নগদে আগাম ২০ শতাংশ অগ্রিম পাঠিয়ে গরু বুক করেছিলেন, বাকি টাকা হাটে সরাসরি পরিশোধ করেছিলেন।

স্বাস্থ্যনিরাপত্তা : ভেটেরিনারি টহল ও প্রাকৃতিক খাদ্য

পাবনা, ভোলা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি দল ২৪ ঘণ্টা হাটে টহল দিয়েছিল। স্টেরয়েড বা হরমোন মিশ্রিত খাদ্যের সন্দেহে কয়েকটি গরু আলাদা করে রাখার ঘটনাও ঘটেছিল। অধিকাংশ খামারি সাইলেজ, ঘাস, ভুষি ও তিল-খৈল ব্যবহার করেছিলেন; ফলে গরুর স্বাস্থ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থাও ছিল দৃশ্যত বেশি।

কেন এত বৈচিত্র্য দেখা গিয়েছিল?

১) অর্থনৈতিক স্তরভেদ: বড় গরুর দাম ৫-৭ লাখ ছুঁয়েছে বলে বহু পরিবার ১-৩ লাখ টাকার গরুতে ঝুঁকেছিল।
২) রুচি ও স্বাদ: দেশি জাতের কম ফ্যাটের মাংস ও বিদেশি-ক্রসের মাংসল শরীর—দুটি ভিন্ন গ্রাহকগোষ্ঠী তৈরি করেছিল।
৩) পরিবহন সুবিধা: সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরাঞ্চলের গরু সহজে ঢাকায় পৌঁছেছিল বলে সরবরাহও ছিল বেশি।
৪) ডিজিটাল প্রভাব: ফেসবুক লাইভে ‘মিনি’ গরুর ভিডিও ভাইরাল হতেই তরুণ ক্রেতারা অনলাইনে দাম যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

ঢাকার কোরবানির হাট ২০২৫-এ শুধু পশু কেনাবেচা হয়নি; বাংলাদেশের আঞ্চলিক বৈচিত্র্য, খাদ্যাভ্যাস আর প্রযুক্তিনির্ভর বাজারনীতি মিলেমিশে এক অনন্য চিত্র এঁকেছিল। পাবনা-সিরাজগঞ্জের দেশি, চট্টগ্রামের লাল বৃষ, ভোলা স্থানীয়, মুন্সিগঞ্জের সাদা মির্কাদিম কিংবা উচ্চফলনশীল ফ্রিজিয়ান-ব্রাহমন—প্রতিটি জাতই শহরের মানুষকে নিজের গল্প শোনাতে পেরেছিল। শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের বাজেট, ধর্মীয় আবেগ ও পারিবারিক ঐতিহ্যই নির্ধারণ করেছিল কোন গরু কোরবানির ছুরি অবধি পৌঁছাবে আর কে ফিরবে খামারে।