১০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

মুরাদনগর ঘটনা নারীর নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ

কুমিল্লার মুরাদনগরের রামিন্দ্রপুর ইউনিয়নে এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণ এবং সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে ঘিরে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ও কঠোর আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জুন রাতে ওই নারী (২৫) তার স্বামীর বাড়িতে শ্বশুরবাড়ির একজন আত্মীয় (৩৮)-এর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। অভিযোগে বলা হয়, এ সময় আরেকজন ব্যক্তি ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়।

ঘটনার পর ২৭ জুন মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মুরাদনগর থানা পুলিশ জানায়, ধর্ষণকারী ও ভিডিও ধারণকারী দুই আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২৩) ও দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। একই আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী, নারীর ব্যক্তিগত ভিডিও বা ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়াও গুরুতর অপরাধ।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট এক বিবৃতিতে বলেছে, “মুরাদনগরের এই নৃশংস ঘটনা আমাদের সমাজের নারীদের নিরাপত্তাহীনতা এবং ন্যায়বিচার ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এসেছে। আমরা নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা এবং ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও মানসিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।”

জোট আরও বলেছে, “বিশেষ করে অনলাইনে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে আলাদা ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি।”

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট (RLRC) ১৭টি মানবাধিকার ও নারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্র্যাক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি প্রমুখ।

জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শুধু আইনি শাস্তি নয়, সমাজে সচেতনতা এবং সহমর্মিতার সংস্কৃতি গড়ার ওপরও জোর দিতে হবে।

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোটের ওয়েবসাইটে (https://blast.org.bd/campaigns/rape-law-reform-now/) এবং ফেসবুক পেজে (https://www.facebook.com/rapelawreformcoalition) তাদের প্রচার ও দাবি বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।

জোটের সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) থেকে যোগাযোগ করা যাবে ই-মেইলে: communication@blast.org.bd

মুরাদনগর ঘটনা নারীর নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ

০৪:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

কুমিল্লার মুরাদনগরের রামিন্দ্রপুর ইউনিয়নে এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণ এবং সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে ঘিরে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ও কঠোর আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জুন রাতে ওই নারী (২৫) তার স্বামীর বাড়িতে শ্বশুরবাড়ির একজন আত্মীয় (৩৮)-এর দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন। অভিযোগে বলা হয়, এ সময় আরেকজন ব্যক্তি ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়।

ঘটনার পর ২৭ জুন মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মুরাদনগর থানা পুলিশ জানায়, ধর্ষণকারী ও ভিডিও ধারণকারী দুই আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২৩) ও দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। একই আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী, নারীর ব্যক্তিগত ভিডিও বা ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়াও গুরুতর অপরাধ।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট এক বিবৃতিতে বলেছে, “মুরাদনগরের এই নৃশংস ঘটনা আমাদের সমাজের নারীদের নিরাপত্তাহীনতা এবং ন্যায়বিচার ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এসেছে। আমরা নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা এবং ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও মানসিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।”

জোট আরও বলেছে, “বিশেষ করে অনলাইনে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে আলাদা ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি।”

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট (RLRC) ১৭টি মানবাধিকার ও নারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্র্যাক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নারীপক্ষ, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি প্রমুখ।

জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শুধু আইনি শাস্তি নয়, সমাজে সচেতনতা এবং সহমর্মিতার সংস্কৃতি গড়ার ওপরও জোর দিতে হবে।

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোটের ওয়েবসাইটে (https://blast.org.bd/campaigns/rape-law-reform-now/) এবং ফেসবুক পেজে (https://www.facebook.com/rapelawreformcoalition) তাদের প্রচার ও দাবি বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।

জোটের সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) থেকে যোগাযোগ করা যাবে ই-মেইলে: communication@blast.org.bd