ট্রেড আলোচনায় উত্তাল মোড়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যবন্ধু কানাডার সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা হঠাৎ বাতিল ঘোষণা করেছেন। তিনি টুইটারে জানান, কানাডার তৈরি একটি সরকারি বিজ্ঞাপনে সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের কণ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছে, যা “ভ্রান্ত” ও “প্রলোভনমূলক” বলে দাবি করে—এই বিজ্ঞাপনের জেরে আলোচনায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে এবং ট্রেড আলোচনা “সমাপ্ত” ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে মার্কিন–চীন সম্পর্কের কিছু উন্নতির সম্ভাবনায় এশিয়ার শেয়ারবাজারে উল্লাসের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল।
বাণিজ্য ও নিরাপত্তা: প্রতিক্রিয়া ও দৃষ্টিপাত
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দুটি বড় দৃষ্টিকোণ স্পষ্ট হচ্ছে—
- একদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আরও দৃঢ়ভাবে বাণিজ্যনীতিতে আগ্রহী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে; ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বাণিজ্য আলোচনায় কড়া রূপরেখার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
- অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা যেমন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ধাতু-প্রকল্পে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের চুক্তি করেছে, তেমনই তারা চীনভিত্তিক নির্ভরতা হ্রাসের দিকেও অগ্রসর হচ্ছে।
এভাবে বাণিজ্য ও নিরাপত্তার মিশ্রণ আরও জটিল হয়ে উঠছে—যেখানে কাঁচামাল, প্রতিরক্ষা শিল্প ও প্রযুক্তি উৎস একসঙ্গে বিবেচনায় আসছে।
মার্কেট দৃষ্টিকোণ থেকে কী গুরুত্ব আছে?
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের মনোবল ও বাজারের চিত্রে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে—
- বাণিজ্য আলোচনা সংকটে পড়লে “নিরাপদ-হেভেন” হিসেবে বিবেচিত ধাতু সোনা প্রায় ২ শতাংশ কমে গেছে।
- তবে একই সময়, বিশ্বব্যাপী ইকুইটি ফান্ডে প্রবাহ তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে—যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা কমবে এমন প্রত্যাশায়।
অর্থনীতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এখন শুধু বাণিজ্য আলোচনা নয়, পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি, চাকরির বাজার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রানীতিতেও মনোযোগ বাড়ছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
আগামী সময়ের জন্য কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক সামনে এসেছে—
একদিকে, যুক্তরাষ্ট্র–কানাডার আলোচনা স্থগিত হলেও ট্রাম্পের এশিয়া সফর ও চীনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা সামনে রয়েছে—এভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্থান–পতন এখন আলোচনায় আসছে।
অন্যদিকে, মার্কিন মুদ্রানীতিতে নতুন দৃষ্টিকোণ তৈরি হয়েছে; সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনায় ফেডারেল রিজার্ভ আরও হার কমানোর পথে যেতে পারে।
পাশাপাশি, প্রতিরক্ষা ও উৎপাদন শিল্পে কাঁচামালসংক্রান্ত বিনিয়োগে বিপুল অঙ্কের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও অর্থনীতির ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
বাণিজ্য আলোচনায় ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি সংবাদ নয়—এটি একটি স্পষ্ট বার্তা যে যুক্তরাষ্ট্র এখন কঠোর বাণিজ্য অবস্থানে রয়েছে, বিশেষ করে কাঁচামাল, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পসংক্রান্ত আলোচনায়। বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন শুধু বাণিজ্য উদ্বেগ নয়, বরং মুদ্রানীতি ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকের প্রতিও সতর্ক নজর দেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















