০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৭) প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৪) পাঁচ হাজার ডলারের পথে সোনা, ২০২৬ সালেও ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকার আভাস জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৪৪০০ ডলার এনসিপি নেতাকে গুলি: নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে শঙ্কার কথা জানালেন মির্জা আব্বাস গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ওসমান হাদির বোন পাচ্ছেন অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান তিন যুগ, তিন ফাইনাল, একই বাধা ভারত—সারফরাজের নামেই আবার পাকিস্তানের জয়গাথা

এশিয়ায় সুশির চাহিদা বাড়ছে দ্রুত

জাপানের কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা

জাপানের কানাজাওয়াভিত্তিক ইশিনো সেইসাকুশো, যা দেশের সবচেয়ে বড় সুশি কনভেয়ার বেল্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, তাদের উৎপাদন ক্ষমতা ২০% বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেস্তোরাঁ চেইনগুলোতে দ্রুত বাড়তে থাকা চাহিদা মেটাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ইশিনো কোম্পানি তাদের কামিকাশিওয়ানো কারখানায় নতুন ইউনিট যোগ করবে, যার ফলে একসঙ্গে ছয় থেকে সাতটি কনভেয়ার সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে। বর্তমানে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিস্টেম একসঙ্গে তৈরি করা যায়। নতুন অংশটি ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।


এশীয় বাজারে দ্রুত বাড়ছে সুশির চাহিদা

অক্টোবরের শুরুতেই কারখানাটি চীনে রপ্তানির জন্য পাঁচটি কনভেয়ার সিস্টেম একসঙ্গে তৈরি করছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্ডারটি ছিল ৩৯৫ আসনের এক রেস্তোরাঁর জন্য।

২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানার ৩,৩০০ বর্গমিটার জায়গা ইতোমধ্যেই পূর্ণ ব্যবহারে রয়েছে, তাই ৪০০ বর্গমিটার জায়গা বাড়ানো হবে। এতে পণ্য স্থানান্তরের জন্য বড় আকারের ক্রেনও বসানো হবে।

এই সম্প্রসারণে প্রায় ৩০ কোটি ইয়েন (প্রায় ১.৯৬ মিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করা হবে। এর ফলে বার্ষিক রপ্তানি প্রায় ২০% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

Sushi is booming in China and Southeast Asia. This company makes it go around - Nikkei Asiaচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন সুযোগ

ইশিনো বর্তমানে যে জাপানি সুশি চেইনগুলোতে সরঞ্জাম সরবরাহ করে, তারা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নতুন শাখা খুলছে। এর ফলে বিদেশি অর্ডার দ্রুত বাড়ছে।

কোম্পানিটি অনুমান করছে, ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে তারা ১০৪টি কনভেয়ার সিস্টেম বিদেশে রপ্তানি করবে—যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে প্রায় ৭০% যাবে বৃহত্তর চীন অঞ্চলে এবং ৩০% দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। কোম্পানির মোট বিক্রির ৩০% এখন বিদেশি বাজার থেকে আসছে, যেখানে গত বছর এটি ছিল ২০%-এর নিচে।


বাড়ছে কারখানার চাপ ও প্রযুক্তিগত জটিলতা

বিদেশি বাজারের চাহিদা এত দ্রুত বেড়েছে যে কারখানাটি এখন স্থান সংকটে পড়েছে। জাপানের বাইরে রেস্তোরাঁগুলোর আকার সাধারণত ১.৫ থেকে ২ গুণ বড়, তাই বড় কনভেয়ার সিস্টেমের প্রয়োজন হয়।

কোম্পানির এক নির্বাহী বলেন, “কামিকাশিওয়ানো কারখানাটি মূলত বিদেশি অর্ডার সামলানোর জন্য তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এখন অর্ডারের চাপ এত বেড়েছে যে জায়গা ফুরিয়ে গেছে।”

বিদেশে রপ্তানির আগে প্রতিটি কনভেয়ার সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে জোড়া লাগিয়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষা চালানো হয়, যাতে গন্তব্যে পৌঁছে কোনো যান্ত্রিক সমস্যা না হয়। জাপানি গ্রাহকদের ক্ষেত্রে আংশিকভাবে পরীক্ষা করা হয়, কারণ দেশে সহজেই সার্ভিস প্রদান সম্ভব।

Sushi is booming in China and Southeast Asia. This company makes it go around - Nikkei Asia

সুশি সংস্কৃতিতে নতুন প্রযুক্তির প্রভাব

বিদেশে ব্যবসা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে পুরনো কনভেয়ার সিস্টেম বদলের চাহিদাও বাড়ছে। এখন অনেক রেস্তোরাঁ এমন প্রযুক্তি গ্রহণ করছে যেখানে গ্রাহকের অর্ডার সরাসরি টেবিলে পৌঁছে যায়, ফলে অবিক্রীত সুশি অপচয় কমে।

২০২৫ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে ইশিনো গ্রুপের বিক্রি ছিল প্রায় ১০ বিলিয়ন ইয়েন। কোম্পানি আশা করছে ২০২৬ অর্থবছরে বিক্রি প্রায় ২০% বেড়ে ১২ বিলিয়ন ইয়েনে পৌঁছাবে।

জাপানের সুশি কনভেয়ার প্রযুক্তি এখন এশিয়ার রেস্তোরাঁ শিল্পে এক গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য হয়ে উঠছে। সুশির জনপ্রিয়তা যেমন বাড়ছে, তেমনি ইশিনো সেইসাকুশোও নিজেকে এই প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করছে, যা ভবিষ্যতে এশিয়ার খাদ্যসংস্কৃতির মানচিত্রে জাপানের প্রভাব আরও গভীর করবে।

#সুশি,# জাপান,#চীন,# দক্ষিণ-পূর্ব-এশিয়া,# রপ্তানি, #প্রযুক্তি, #খাদ্যশিল্প, #সারাক্ষণ-রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৭)

এশিয়ায় সুশির চাহিদা বাড়ছে দ্রুত

১০:০০:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

জাপানের কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা

জাপানের কানাজাওয়াভিত্তিক ইশিনো সেইসাকুশো, যা দেশের সবচেয়ে বড় সুশি কনভেয়ার বেল্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, তাদের উৎপাদন ক্ষমতা ২০% বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেস্তোরাঁ চেইনগুলোতে দ্রুত বাড়তে থাকা চাহিদা মেটাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ইশিনো কোম্পানি তাদের কামিকাশিওয়ানো কারখানায় নতুন ইউনিট যোগ করবে, যার ফলে একসঙ্গে ছয় থেকে সাতটি কনভেয়ার সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে। বর্তমানে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিস্টেম একসঙ্গে তৈরি করা যায়। নতুন অংশটি ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।


এশীয় বাজারে দ্রুত বাড়ছে সুশির চাহিদা

অক্টোবরের শুরুতেই কারখানাটি চীনে রপ্তানির জন্য পাঁচটি কনভেয়ার সিস্টেম একসঙ্গে তৈরি করছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্ডারটি ছিল ৩৯৫ আসনের এক রেস্তোরাঁর জন্য।

২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানার ৩,৩০০ বর্গমিটার জায়গা ইতোমধ্যেই পূর্ণ ব্যবহারে রয়েছে, তাই ৪০০ বর্গমিটার জায়গা বাড়ানো হবে। এতে পণ্য স্থানান্তরের জন্য বড় আকারের ক্রেনও বসানো হবে।

এই সম্প্রসারণে প্রায় ৩০ কোটি ইয়েন (প্রায় ১.৯৬ মিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করা হবে। এর ফলে বার্ষিক রপ্তানি প্রায় ২০% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

Sushi is booming in China and Southeast Asia. This company makes it go around - Nikkei Asiaচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন সুযোগ

ইশিনো বর্তমানে যে জাপানি সুশি চেইনগুলোতে সরঞ্জাম সরবরাহ করে, তারা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নতুন শাখা খুলছে। এর ফলে বিদেশি অর্ডার দ্রুত বাড়ছে।

কোম্পানিটি অনুমান করছে, ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে তারা ১০৪টি কনভেয়ার সিস্টেম বিদেশে রপ্তানি করবে—যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে প্রায় ৭০% যাবে বৃহত্তর চীন অঞ্চলে এবং ৩০% দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। কোম্পানির মোট বিক্রির ৩০% এখন বিদেশি বাজার থেকে আসছে, যেখানে গত বছর এটি ছিল ২০%-এর নিচে।


বাড়ছে কারখানার চাপ ও প্রযুক্তিগত জটিলতা

বিদেশি বাজারের চাহিদা এত দ্রুত বেড়েছে যে কারখানাটি এখন স্থান সংকটে পড়েছে। জাপানের বাইরে রেস্তোরাঁগুলোর আকার সাধারণত ১.৫ থেকে ২ গুণ বড়, তাই বড় কনভেয়ার সিস্টেমের প্রয়োজন হয়।

কোম্পানির এক নির্বাহী বলেন, “কামিকাশিওয়ানো কারখানাটি মূলত বিদেশি অর্ডার সামলানোর জন্য তৈরি হয়েছিল, কিন্তু এখন অর্ডারের চাপ এত বেড়েছে যে জায়গা ফুরিয়ে গেছে।”

বিদেশে রপ্তানির আগে প্রতিটি কনভেয়ার সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে জোড়া লাগিয়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষা চালানো হয়, যাতে গন্তব্যে পৌঁছে কোনো যান্ত্রিক সমস্যা না হয়। জাপানি গ্রাহকদের ক্ষেত্রে আংশিকভাবে পরীক্ষা করা হয়, কারণ দেশে সহজেই সার্ভিস প্রদান সম্ভব।

Sushi is booming in China and Southeast Asia. This company makes it go around - Nikkei Asia

সুশি সংস্কৃতিতে নতুন প্রযুক্তির প্রভাব

বিদেশে ব্যবসা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে পুরনো কনভেয়ার সিস্টেম বদলের চাহিদাও বাড়ছে। এখন অনেক রেস্তোরাঁ এমন প্রযুক্তি গ্রহণ করছে যেখানে গ্রাহকের অর্ডার সরাসরি টেবিলে পৌঁছে যায়, ফলে অবিক্রীত সুশি অপচয় কমে।

২০২৫ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে ইশিনো গ্রুপের বিক্রি ছিল প্রায় ১০ বিলিয়ন ইয়েন। কোম্পানি আশা করছে ২০২৬ অর্থবছরে বিক্রি প্রায় ২০% বেড়ে ১২ বিলিয়ন ইয়েনে পৌঁছাবে।

জাপানের সুশি কনভেয়ার প্রযুক্তি এখন এশিয়ার রেস্তোরাঁ শিল্পে এক গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য হয়ে উঠছে। সুশির জনপ্রিয়তা যেমন বাড়ছে, তেমনি ইশিনো সেইসাকুশোও নিজেকে এই প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করছে, যা ভবিষ্যতে এশিয়ার খাদ্যসংস্কৃতির মানচিত্রে জাপানের প্রভাব আরও গভীর করবে।

#সুশি,# জাপান,#চীন,# দক্ষিণ-পূর্ব-এশিয়া,# রপ্তানি, #প্রযুক্তি, #খাদ্যশিল্প, #সারাক্ষণ-রিপোর্ট