০২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
এনবিআর বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার নিয়ম স্পষ্ট করল গাজীপুরে তিনটি স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন ১৩ই নভেম্বর ‘লকডাউন’ রুখে দেওয়ার ঘোষণা পুলিশের, কী করবে আওয়ামী লীগ? নির্বাচনের আগে বডি ক্যামেরা কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তা, কী বলছে পুলিশ আশুলিয়ায় পার্কিং করা বাসে আগুন, চালক আহত হয়ে প্রাণে বাঁচলেন রমনা থানার সামনে পুলিশের গাড়িতে হঠাৎ আগুন সিলেটে ট্রেন লাইনচ্যুতের পরিকল্পনা: ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতাসহ ৫ জন আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ স্থাপনায় তালা: নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচির আগাম প্রস্তুতি রাশিয়ানদের আগমন? এটা নির্ভর করছে ক্রীড়ার উপর মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের পর এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শাখায় পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ

হাজার বছরের পুরানো হীরা, যা ১০০ বছর গোপন ছিল, এখন প্রকাশ্যে এসেছে

বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এক শতাব্দী ধরে অদৃশ্য ছিল একটি ঐতিহাসিক ১৩৭ ক্যারেটের হীরা। গত মাসে, হ্যাপসবার্গ পরিবারের সদস্যরা সেই হীরাটি প্রকাশ্যে এনে সবার সামনে এটি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি একসময় ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড নামে পরিচিত, যা ইতালির মেডিসি পরিবার এবং পরে হ্যাপসবার্গ পরিবারের মালিকানায় ছিল।

হীরাটির ইতিহাস এবং গোপন রাখা

১৯১৮ সালে যখন চার্লস প্রথম, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির সম্রাট, বুঝতে পারেন তার সাম্রাজ্যের অবসান ঘনিয়ে এসেছে, তিনি পরিবারসহ সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যান। সেই সময় তিনি হ্যাপসবার্গ পরিবারের মূল্যবান রত্নগুলো সুইজারল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। তার মধ্যে একটি ছিল ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড। এই হীরাটি শুধু তার আকার এবং হলুদ রঙের জন্যই নয়, তার প্রাচীন ইতিহাসের জন্যও খ্যাত।

হীরাটি যখন গায়েব হয়েছিল, তখন এটি নিয়ে বহু কল্পকাহিনী ও গুঞ্জন ছড়ায়। তবে, এই হীরার আসল অবস্থান ছিল একটি ব্যাংক ভল্টে, কানাডায়। হ্যাপসবার্গ পরিবারের সদস্যরা জানান, এটি গোপন রাখা হয়েছিল ১০০ বছর, তাঁদের শ্রদ্ধার জন্য, সিজিতা, চার্লসের স্ত্রীর নির্দেশে।

গোপনীয়তার কারণ

চার্লসের স্ত্রীর ইচ্ছা ছিল যে, এই রত্নের অবস্থান ১০০ বছর গোপন রাখা হবে। সেই কারণে, এটি নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কখনও কিছু জানাননি। তবে, এখন তারা এই রহস্য উন্মোচন করে জানাচ্ছেন, হীরাটি এখন কানাডার একটি ব্যাংক ভল্টে নিরাপদে রাখা ছিল। পরিবার জানিয়েছে, তারা এই রত্নটি শীঘ্রই কানাডায় একটি মিউজিয়ামে প্রদর্শন করতে চায়, কিন্তু বিক্রির কোনো পরিকল্পনা নেই।

হীরার প্রদর্শন এবং পর্যালোচনা

এটি যে মূলত ঐতিহাসিক ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড, তা নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত জুয়েলারি বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ কোচকার্ট। তিনি জানান, তার কাটের নিদর্শনগুলো ঐতিহাসিক উৎসের সাথে মেলে, যা নিশ্চিত করে যে এটি আসল ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড।

একটি ঐতিহাসিক পরিবার

হ্যাপসবার্গ পরিবার, যাদের ইতিহাস আধুনিক ইউরোপের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, তাদের দ্বারা এই হীরা অনেক প্রজন্ম ধরে রক্ষা করা হয়েছে। ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ডটি ১৭৪৫ সালে ফ্রান্সিস স্টিফেনের রাজমুকুটের একটি অংশ ছিল, যিনি পরবর্তীতে সেন্ট হোলি রোমান এম্পায়ারের সম্রাট হন।

ইতিহাসের পটভূমি

চার্লস প্রথম মারা যাওয়ার পর, তার পরিবার বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সিজিতা এবং তার সন্তানরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান, এরপর কানাডায় চলে আসেন। সেই সময় এই রত্নটি একটি ছোট্ট কার্ডবোর্ড ব্যাগে রাখার পর, সেটি কানাডার ব্যাংক ভল্টে রাখা হয়েছিল।

এটি একটি অসাধারণ সাফল্য যে, এই মূল্যবান রত্নটি এক শতাব্দী ধরে গোপন রাখা সম্ভব হয়েছিল। সিজিতার এই সতর্কতা এবং প্রাকটিক্যাল চিন্তা ইতিহাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হয়ে থাকবে।


#ফ্লোরেন্টাইনডায়মন্ড #হ্যাপসবার্গ #ঐতিহাসিকরত্ন

জনপ্রিয় সংবাদ

এনবিআর বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার নিয়ম স্পষ্ট করল

হাজার বছরের পুরানো হীরা, যা ১০০ বছর গোপন ছিল, এখন প্রকাশ্যে এসেছে

১২:১৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এক শতাব্দী ধরে অদৃশ্য ছিল একটি ঐতিহাসিক ১৩৭ ক্যারেটের হীরা। গত মাসে, হ্যাপসবার্গ পরিবারের সদস্যরা সেই হীরাটি প্রকাশ্যে এনে সবার সামনে এটি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি একসময় ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড নামে পরিচিত, যা ইতালির মেডিসি পরিবার এবং পরে হ্যাপসবার্গ পরিবারের মালিকানায় ছিল।

হীরাটির ইতিহাস এবং গোপন রাখা

১৯১৮ সালে যখন চার্লস প্রথম, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির সম্রাট, বুঝতে পারেন তার সাম্রাজ্যের অবসান ঘনিয়ে এসেছে, তিনি পরিবারসহ সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যান। সেই সময় তিনি হ্যাপসবার্গ পরিবারের মূল্যবান রত্নগুলো সুইজারল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। তার মধ্যে একটি ছিল ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড। এই হীরাটি শুধু তার আকার এবং হলুদ রঙের জন্যই নয়, তার প্রাচীন ইতিহাসের জন্যও খ্যাত।

হীরাটি যখন গায়েব হয়েছিল, তখন এটি নিয়ে বহু কল্পকাহিনী ও গুঞ্জন ছড়ায়। তবে, এই হীরার আসল অবস্থান ছিল একটি ব্যাংক ভল্টে, কানাডায়। হ্যাপসবার্গ পরিবারের সদস্যরা জানান, এটি গোপন রাখা হয়েছিল ১০০ বছর, তাঁদের শ্রদ্ধার জন্য, সিজিতা, চার্লসের স্ত্রীর নির্দেশে।

গোপনীয়তার কারণ

চার্লসের স্ত্রীর ইচ্ছা ছিল যে, এই রত্নের অবস্থান ১০০ বছর গোপন রাখা হবে। সেই কারণে, এটি নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কখনও কিছু জানাননি। তবে, এখন তারা এই রহস্য উন্মোচন করে জানাচ্ছেন, হীরাটি এখন কানাডার একটি ব্যাংক ভল্টে নিরাপদে রাখা ছিল। পরিবার জানিয়েছে, তারা এই রত্নটি শীঘ্রই কানাডায় একটি মিউজিয়ামে প্রদর্শন করতে চায়, কিন্তু বিক্রির কোনো পরিকল্পনা নেই।

হীরার প্রদর্শন এবং পর্যালোচনা

এটি যে মূলত ঐতিহাসিক ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড, তা নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত জুয়েলারি বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ কোচকার্ট। তিনি জানান, তার কাটের নিদর্শনগুলো ঐতিহাসিক উৎসের সাথে মেলে, যা নিশ্চিত করে যে এটি আসল ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ড।

একটি ঐতিহাসিক পরিবার

হ্যাপসবার্গ পরিবার, যাদের ইতিহাস আধুনিক ইউরোপের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, তাদের দ্বারা এই হীরা অনেক প্রজন্ম ধরে রক্ষা করা হয়েছে। ফ্লোরেন্টাইন ডায়মন্ডটি ১৭৪৫ সালে ফ্রান্সিস স্টিফেনের রাজমুকুটের একটি অংশ ছিল, যিনি পরবর্তীতে সেন্ট হোলি রোমান এম্পায়ারের সম্রাট হন।

ইতিহাসের পটভূমি

চার্লস প্রথম মারা যাওয়ার পর, তার পরিবার বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সিজিতা এবং তার সন্তানরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান, এরপর কানাডায় চলে আসেন। সেই সময় এই রত্নটি একটি ছোট্ট কার্ডবোর্ড ব্যাগে রাখার পর, সেটি কানাডার ব্যাংক ভল্টে রাখা হয়েছিল।

এটি একটি অসাধারণ সাফল্য যে, এই মূল্যবান রত্নটি এক শতাব্দী ধরে গোপন রাখা সম্ভব হয়েছিল। সিজিতার এই সতর্কতা এবং প্রাকটিক্যাল চিন্তা ইতিহাসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হয়ে থাকবে।


#ফ্লোরেন্টাইনডায়মন্ড #হ্যাপসবার্গ #ঐতিহাসিকরত্ন